Gosaba By Election 2021: তিনি নেই, তাই ‘অকাল ভোট’ গোসাবায়! তবু সর্বত্র যেন প্রয়াত তৃণমূল বিধায়কেরই ‘উপস্থিতি’

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Oct 30, 2021 | 6:36 PM

Jayanta Naskar: একদা বামেদের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত সুন্দরবনের গোসাবা বিধানসভা এলাকায় ২০১১ সালের পর থেকেই পরিবর্তনের হাওয়া বইয়েছেন জয়ন্ত নস্কর।

Gosaba By Election 2021: তিনি নেই, তাই অকাল ভোট গোসাবায়! তবু সর্বত্র যেন প্রয়াত তৃণমূল বিধায়কেরই উপস্থিতি
অনেক বাড়িতেই কোনও অনুষ্ঠান থাকলে পরিবারের প্রয়াত বর্ষীয়ানদের ছবি সেখানে বসিয়ে আচারপর্ব সারা হয়। শনিবার গোসাবার ভোটটাও তৃণমূল নেতা-কর্মীরা অনেকটা সে ভাবেই করলেন। নিজস্ব চিত্র।

Follow Us

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: তিনবারের বিধায়ক ছিলেন তিনি। একুশের নির্বাচনেও বিপুল ভোট পান। কিন্তু তৃণমূলের এই বিধায়কের বিধি বাম! করোনা প্রাণ কাড়ে তাঁর। তিনি নেই তাই ‘অকাল ভোট’ গোসাবায় (Gosaba By Election 2021)। শনিবার রাজ্যের বাকি তিন কেন্দ্রের সঙ্গে ভোটগ্রহণ হল গোসাবাতেও। সেই ভোট পর্বে দেখা গেল অভূতপূর্ব এক দৃশ্য। এদিন গোসাবার বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের শিবিরে দেখা গিয়েছে প্রয়াত বিধায়ক জয়ন্ত নস্করের ছবি। আর সেই ছবিতে হাত জোড় করে প্রণাম জানিয়ে ভোট দিতে যাচ্ছেন ভোটাররা।

এলাকার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সর্বদা মানুষের পাশে থেকেছেন জয়ন্ত নস্কর। তাঁর এলাকার লোকজনেরই এমন দাবি। অনাড়ম্বর জীবন যাপনের মধ্যে আর্ত অসহায় মানুষের বিপদ আপদে পাশে থেকেছেন বর্ষীয়ান এই তৃণমূল নেতা। ভোট বা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যাঁর উপস্থিতি ছিল উজ্জ্বল। আজ তিনি নেই। তবে তাঁকে ছাড়া ভোট কর্মসূচি ভাবতেই পারেন না এলাকার তৃণমূল কর্মীরা। এদিন ঘাসফুলের ক্যাম্প অফিসগুলিতে তাই দেখা গিয়েছে প্রয়াত নেতার ছবি।

অনেক বাড়িতেই কোনও অনুষ্ঠান থাকলে পরিবারের প্রয়াত বর্ষীয়ানদের ছবি সেখানে বসিয়ে আচারপর্ব সারা হয়। শনিবার গোসাবার ভোটটাও তৃণমূল নেতা-কর্মীরা অনেকটা সে ভাবেই করলেন। প্রত্যেকটি ভোট ক্যাম্পে যেন প্রয়াত নেতার সজাগ দৃষ্টি। শুধু তৃণমূলের লোকজনই নন, এলাকার বহু ভোটারকেও দেখা গেল সেই ছবিতে হাত জোড় করে প্রণাম করে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের দিকে এগোতে।

চলতি বছরের জুন মাসে করোনায় প্রয়াত হন সুন্দরবনের গোসাবা বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর। একুশের নির্বাচনেও জয়লাভ করেছিলেন। তার পর তিনি করোনায় সংক্রমিত হন। বেশ কিছু দিন এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তার পর বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখানে প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানেই গত ১৯ জুন মৃত্যু হয় তাঁর।

জয়ন্ত নস্কর ১৮৮৭ সাল থেকে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে, কংগ্রেসের টিকিটে লড়াই করে ১৮৮৭ সালে বামেদের কাছে পরাস্ত হতে হয় তাঁকে। পরে তৃণমূলে যোগ দিয়ে ২০১১ সালে জয় পান। এরপর ২০১৬ সালে অবশ্য জোড়া-ফুল প্রার্থী হিসাবে গোসাবায় জয়যুক্ত হন তিনি। তার পর একুশেও জয়লাভ করেন।

একদা বামেদের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত সুন্দরবনের গোসাবা বিধানসভা এলাকায় ২০১১ সালের পর থেকেই পরিবর্তনের হাওয়া বইয়েছেন তিনিই। পর পর তিনবার এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের পোড় খাওয়া নেতা। একুশের ভোটে তাঁকে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে প্রাক্তন তৃণমূল নেতা বরুণ ওরফে চিত্ত প্রামাণিককে গোসাবা কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। ২৩ হাজারের বেশি ভোটে বিজেপি প্রার্থীকে হারান জয়ন্ত নস্কর।

সেই জয়ন্ত নস্কর চলে যাওয়ায় আবারও ভোট করাতে হচ্ছে গোসাবায়। অবশ্য হরিণখালি, বড়িয়া, মালিপাড়া চুনাখালি-সহ একাধিক এলাকায় টের পাওয়া গেল তাঁর উপস্থিতি। বিশাল সব ছবি। সেই ছবিতে প্রণাম করে ভোটাররাও যাচ্ছেন ভোট দিতে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কর্মীরা যেন তাঁর নির্দেশ মেনেই ভোট বৈতরণী পার হওয়ার জন্য লড়ে চলেছেন। অনেকেই আবার চোখের জলে তাঁদের প্রিয় মানুষটির কাছ থেকে আর্শীবাদ চেয়ে নিচ্ছেন। তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী অমিয় বৈরাগী, দেবু নস্কর, সফিক মোল্লারা একজোট হয়ে জানান, “আমরা তাঁকে সামনে রেখে রাজনীতি করে এসেছি। আজ তিনি আমাদের মধ্যে নেই। তবু্ও তাঁর উপস্থিতি সর্বদা আমাদের মধ্যে থাকবে।”

আরও পড়ুন: Diwali Firecrackers Ban: হাইকোর্টের নির্দেশকেই মান্যতা, বাজিতে ‘না’ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদেরও

Next Article