দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ভাঙড়ে ‘মাটি মাফিয়া’দের দৌরাত্ম্য ছবি প্রথম তুলে ধরেছিল TV9 বাংলা। সেই খবরের জেরেই এবার নড়েচড়ে বসল ভূমি সংস্কার দফতর ও পুলিশ প্রশাসন। বুধবার ভাঙড়-২ ব্লকের ভূমি সংস্কার দফতর ও কাশিপুর থানার পুলিশ ভাঙড়ের বিভিন্ন অবৈধ মাটি খাদানে অভিযান চালায়। ভেঙে গুড়িয়ে দেয় বিভিন্ন খাদানে থাকা মাফিয়াদের অস্থায়ী তাঁবু।
বেশ কিছুদিন ধরেই স্থানীয় ভোগালি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভুমরু,শানপুকুর পঞ্চায়েতের চণ্ডীহাট, পোলেরহাট-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের নওয়াবাদ, জয়নগরে বেআইনি মাটি কাটার অভিযোগ উঠছিল। অভিযোগ, এই কাজে যুক্ত একদল মাটি মাফিয়া এলাকায় রীতিমত তাঁবু খাটিয়ে জাঁকিয়ে বসেছিল। তাঁদের দাপটে কেউ মুখ খোলার সাহসও পেত না।
বুধবার এই সমস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন ভাঙড়-২ ব্লকের ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকরা। ছিলেন বারুইপুর পুলিশ জেলার ডিএসপি (ক্রাইম) তমাল সরকার এবং কাশীপুর থানার ওসি সমরেশ ঘোষ। ভাঙড়-২ ব্লকের ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক শ্রীকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, “অবৈধ ভাবে মাটি কাটা নিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ আসছিল। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন করা হল। ফিল্ড থেকে যে রিপোর্ট পাব সেই মত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও পড়ুন: কৃষক আন্দোলন: বিদেশি ‘অপপ্রচারের’ বিরুদ্ধে গর্জন লতা-শচীন-সৌরভদের
এদিন আধিকারিকরা ভুমরু গ্রামে গিয়ে দেখেন মাঠের মাঝখানে বেশ গভীর কৃত্রিম জলাশয়ের সৃষ্টি করা হচ্ছে। মেছো ভেড়ি তৈরিই এর উদ্দেশ্য। অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে যাতে শ্রমিকরা মাটি কাটতে পারেন সেই জন্য মাঠের মাঝেই ত্রিপল দিয়ে তাঁবু খাটানো হয়েছিল। সেই তাঁবু ভেঙে দেয় পুলিশ।
চণ্ডীহাট গ্রামে আবার তাঁবুর পাশাপাশি বিদ্যুতের তার টেনে হ্যালোজেনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সে সবও পুলিশ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। পোলেরহাটে যে ভাবে একটি বড় আম বাগান কেটে ভেড়ি বানানো হয়েছে তা দেখে তাজ্জ্বব বনে যান ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকরা। টানা দু’সপ্তাহ ধরে ২৫-৩০ বিঘা জমির মাটি কাটা, আমবাগান ধ্বংস করা হলেও কেউ কোথাও কোন অভিযোগ করল না কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন দফতরের আধিকারিকরা।
ভাঙড়ের দায়িত্বে থাকা বারুইপুর পুলিশ জেলার ডিএসপি (ক্রাইম) তমাল সরকার বলেন, “কাশীপুর থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ আসছিল কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তা অন্য জায়গায় চালান করছে। আমরা খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে ইতিমধ্যে ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছি। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”