কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সম্প্রতি স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) তাদের ওয়েবসাইটে ৯৫২ জনের তালিকা প্রকাশ করে। অভিযোগ উঠেছে, এই প্রার্থীদের ওএমআর শিটগুলির (OMR Sheet) সঙ্গে প্রাপ্ত নম্বরের গরমিল রয়েছে। সেই তালিকায় নাম উঠে এসেছে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার এক কাউন্সিলরেরও। তিনি সোনারপুরের একটি স্কুলে ইতিহাসের শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত। ২০১৮ সালে তিনি শিক্ষিকা হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। কাউন্সিলরের বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। অর্থাৎ, স্কুলও পেয়েছেন তিনি হাতের কাছেই। সেই খবর চাউর হতেই এলাকায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
যদিও বিষয়টি নিয়ে ওই কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, তিনি বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। তবে আইনি পথেই এই বিষয়ে মোকাবিলা করা হবে বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গেও। তিনি বলছেন, ওই শিক্ষিকা তাঁদের স্কুলে চাকরি করেন। ওই শিক্ষিকা ২০১৯ সালে জানুয়ারিতে কাজে যোগ দিয়েছেন। আর বর্তমান প্রধান শিক্ষক এই স্কুলে যোগ দিয়েছেন ওই বছরের অগস্ট মাসে। তৎকালীন টিআইসি যিনি ছিলেন, তিনি কমিশনের রেকমেন্ডেশন লেটার ও অন্যান্য নথি যাচাই করে ওই শিক্ষিকা নিযুক্ত করেছিলেন বলে জানিয়েছেন বর্তমান প্রধান শিক্ষক। ওবিসি-বি ক্যাটেগরিভুক্ত হিসেবে ওই শিক্ষিকা কাজে যোগ দিয়েছিলেন বলে জানান তিনি। ওই শিক্ষিকা যে সোনারপুরের একজন কাউন্সিলর, সেই কথাও জানান স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
তবে এমন হাতেগরম একটি ইস্যু পেয়ে খোঁচা দিতে ছাড়ছে না বিরোধী দলগুলি। এলাকার বিজেপি নেতা রঞ্জন বৈদ্য জানাচ্ছেন, “শুধু এই পুরসভা নয়, গোটা রাজ্যে তৃণমূলের নেতা-নেত্রীদের নেতৃত্বে যে নিয়ম ভেঙে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে, এমন অভিযোগ এর আগেও উঠে এসেছে। রাজ্যজুড়ে আমরা দেখছি, ভুয়ো চিকিৎসক, ভুয়ো আইপিএস, ভুয়ো আইএএস, ভুয়ো করোনা টিকা… সবই হয়েছে। তৃণমূলের নেতারা বেকার ছেলে-মেয়েদের থেকে টাকা নিয়ে নিয়োগ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এবার দেখা যাচ্ছে, কাউন্সিলরের নামও তালিকায় উঠে আসছে।”
খোঁচা দিতে ছাড়েনি বাম শিবিরও। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলছেন, “অযোগ্যরা চাকরি করবে যোগ্যদের বাদ দিয়ে, এই জিনিস চলতে পারে না। এটি একটি সংগঠিত অপরাধ। কারা এই অপরাধ সংগঠিত করল? তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।” যদিও সাফাই দিতে নেমে তৃণমূলের যাদবপুর ডায়মন্ডহারবার সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী ওই দলীয় কাউন্সিলরের বিষয়ে জানান, তিনি শিক্ষিত ও ভাল মেয়ে। তবে যে অভিযোগ উঠছে, সেই বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই বলেই জানান শুভাশিসবাবু।