ক্যানিং: দুর্যোগের কালো মেঘ বাংলার আকাশে। ‘গুলাব’ এই রাজ্যে আছড়ে না পড়লেও নিম্নচাপের পূর্বাভাস রয়েছে বাংলায়। ইতিমধ্যে মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যেতে মরিয়া প্রশাসন। তার মধ্যে নিকাশি ব্যবস্থার গাফিলতির জেরে বানভাসি সাধারণ মানুষ।
টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং ২ ব্লকের পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত। আঠারোবাঁকি, দেউলি, সারেঙ্গাবাদ, মঠেরদিঘী, কালিকাতলা পঞ্চায়েত এলাকায় এখনও কোথাও হাঁটু পর্যন্ত জল কোথাও বা কোমর পর্যন্ত। জল যন্ত্রণা নিয়ে এলাকার মানুষ যখন নাজেহাল ঠিক তখনই ‘গুলাব’ এর পূর্বাভাস।আশঙ্কা ও দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস মতো সতর্ক ব্লক প্রশাসন।
আজ দুপুরে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির মাঝেই হাঁটু জলের মধ্যে বানভাসি এলাকা পরিদর্শন করেন ক্যানিং ২ বিডিয়ো প্রণব মণ্ডল। মাইকিং করে সাধারণকে সতর্ক করার পাশাপাশি ত্রাণ শিবিরে যাওয়ার আবেদন জানালেন।
এদিকে, স্থানীয়দের বক্তব্য জলমগ্ন এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউই আসেনি। একটু বৃষ্টিতেই জল জমে যায় এলাকা। নিকাশি ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা। জল জমার কারণে অসুস্থ মানুষকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে সমস্যা তৈরি হয়েছে। সারেঙ্গাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধাণকে সঙ্গে নিয়ে বিডিও প্রণব মণ্ডল এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমাধান করে দেওয়া আশ্বাস দেন এদিন। আজ গ্রাম পঞ্চায়েত বলেন, “জল নিকাশি ব্যবস্থা আছে। এলাকায় কিছু কিছু নীচু জায়গা রয়েছে মাছের ভেড়ি। যার কারণে সমস্যা হচ্ছে। আমরা সেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সমুদ্র উপকূলবর্তী বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ, মৌসুনি, নামখানা ও কাকদ্বীপ এলাকায় শুরু হয়েছে বৃষ্টি। উপকূল এলাকায় বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ছে। দুপুরের পর থেকে বৃষ্টির পরিমান বাড়বে বলে হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস।
বকখালি সমুদ্রতটে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা প্রচার চালাচ্ছেন। দুপুরে সমুদ্রতটের টহল দিতে দেখা যায় নামখানা ব্লকের বিডিও শান্তনু সিংহ ঠাকুর ও উপকূল রক্ষী বাহিনীর ফ্রেজারগঞ্জ ঘাঁটির কমান্ডার এনপি সিংকে। আগামী দু’দিন সমস্ত হোটেলের বুকিং বন্ধ আছে।
এদিকে, জল কমতেই ভাঙা বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। এলাকা অত্যন্ত দুর্গম।আপাতত সেই অবস্থাতেই শুরু হয়েছে বাঁধের কাজ। জল বাড়ছে দারকেশ্বর ও শিলাবতীতে। ফুলে উঠেছে রূপনারায়ণের জল। পশ্চিমের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। দক্ষিণের একাধিক জেলায় কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সোমবার বিকেল থেকে নীচু এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে তুলে আনা হবে। অন্যদিকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হলে নতুন করে প্লাবনের আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন: Raiganj University: সরকারি বাংলো ছাড়তে নারাজ প্রাক্তন উপাচার্য! সরগরম বিশ্ববিদ্যালয়