Royal Bengal Tiger: বাঘের ঘরেই ঘোগের বাসা! কেন বারবার লোকালয়ে হানা দিচ্ছে দক্ষিণরায়?

South 24 Pargana: সুন্দরবনের বিভিন্ন গ্রামে ঢুকছে বাঘ। এই তো কয়েকদিন আগে কুলতলি হাঁফ ছেড়েছিল বাঘ বন্দি হওয়ায়। তার আগে ৬ রাত আতঙ্কে কাটিয়েছে কুলতলি। তারপর ঝড়খালিতে মিলেছিল বাঘের পায়ের ছাপ। আর এ বার গোসাবাতে।

Royal Bengal Tiger: বাঘের ঘরেই ঘোগের বাসা! কেন বারবার লোকালয়ে হানা দিচ্ছে দক্ষিণরায়?
কেন লোকালয়ে বাঘের হানা? নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 02, 2022 | 3:16 PM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কোনও বিরতি নেই। সপ্তাহ পেরতে না পেরতেই জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে দক্ষিণরায় (Royal Bengal Tiger)। কেন বারবার জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে আগমন ডোরাকাটার? নেপথ্যে কোন অশনিসংকেত?

বনদফতর সূত্রে খবর, আদমসুমারির পর বাঘের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৬। কিন্তু, রয়্যাল ডেরায় ক্রমেই স্থান সঙ্কুলান। ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে ডোরাকাটার বাসস্থান। ইয়াস বিধ্বস্ত সুন্দরবনে একাধিক মিষ্টি জলের জলাশয় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। নষ্ট হয়েছে জঙ্গল চরাভূমি। কোথায় যাবে ডোরাকাটার দল?

একবার নয়, বারবার। সুন্দরবনের বিভিন্ন গ্রামে ঢুকছে বাঘ। এই তো কয়েকদিন আগে কুলতলি হাঁফ ছেড়েছিল বাঘ বন্দি হওয়ায়। তার আগে ৬ রাত আতঙ্কে কাটিয়েছে কুলতলি। তারপর ঝড়খালিতে মিলেছিল বাঘের পায়ের ছাপ। আর এ বার গোসাবাতে। দেখা মিলেছে রয়্য়াল বেঙ্গলের। গোসাবা কাঁপছে ডোরাকাটা আতঙ্কে।

সুন্দরবনের গত মাসখানেকের হিসেব কী বলছে?

  • ৭ ডিসেম্বর কুলতলির নস্করঘেরিতে বাঘের দেখা মেলে।
  • ৩০ নভেম্বর কুলতলির মনসাতলায় দক্ষিণরায়ের দর্শন।
  • ২৭ নভেম্বর গোসাবায় বাঘের হামলায় আহত মৎস্যজীবী।
  • ১৯ নভেম্বর গোসাবায় বাঘের হামলায় নিহত মৎস্যজীবী।
  • ১৫ নভেম্বর পীরখালিতে বাঘের হামলায় জখম এক মৎস্যজীবী।
  • ৯ নভেম্বর বেণীফেলিতে বাঘের হামলায় আহত হন ১ জন।
  • ৩ নভেম্বর মৈপীঠে বাঘের হামলায় মৃত্যু হয় একজনের।
  • ১ নভেম্বর বাঘের হামলায় আহত হন এক মহিলা মৎস্যজীবী।

কেন বাঘ ঘন ঘন ঢুকছে গ্রামে?

জঙ্গলের ভেতরে নেই পানীয় জল। ইয়াসে বাঁধ ভেঙে জঙ্গলের সমস্ত মিষ্টি জলের পিটই এখন নোনা। তৃষ্ণা মেটাতে বাধ্য হয়ে লোকালয়ে দক্ষিণ রায়। সেসব যেমন সত্যি, তেমনই সত্যি, কাঠ কাটতে, মাছ ধরছে, কাঁকড়া শিকারে বাঘের ডেরায় বার বার পা পড়েছে মানুষের। ঝড়ের মুখে বুক পেতে দেওয়া সুন্দরবন ধুঁকছে। আদমসুমারি বলছে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু বাঘের খাদ্য? হরিণ বনশূকরের অনুপাত কত? সে সংখ্যাই বা গুনছে কে?

প্রাক্তন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, “বাঘের হামলা বেড়েছে কারণ, মানুষ যেমন জীবিকার স্বার্থে জঙ্গলে যাচ্ছে, বাঘও পর্যাপ্ত খাবার না পেয়ে বাইরে বেরিয়ে আসছে।” শেষ হওয়া আদমসুমারি অনুযায়ী, বাঘের সংখ্যা এখন ৯৬। কিন্তু খাদ্যের জোগান ঠিক রয়েছে তো? সাধারণত আহত হলে বা শিকার ধরতে অক্ষম হলে বাঘ লোকালয়ে হানা দেয়।

বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এখন খাদ্য ও জলসংকট দেখা দিয়েছে সুন্দরবনের বাঘের। প্রাক্তন মুখ্য বনপাল অতনু রাহা বলেন, “বাঘকে সংরক্ষণ করতে হবে। আমাদের সহায়তা না পেলে বাঘ হেরে যাবে। তাকে বাঁচাতে হবে।”

চুরি হচ্ছে ম্যানগ্রোভ

গ্রামবাসীদের একাংশ ও বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের অভিমত,  ভাল নেই সুন্দরবন। কারণ, বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ম্যানগ্রোভের মাটি চুরি করছেন। জমি চুরি করছেন। জেসিবি দিয়ে মাটি কেটে সেই জায়গায় মাছের ভেড়ি তৈরি করা হচ্ছে। পুরো ধুয়ে মুছে সাফ করে দেওয়া হচ্ছে জঙ্গল। ফলে জঙ্গল ছোট হচ্ছে। থাকার জায়গা কমছে বাঘের। আর তাতেই বাড়ছে বিপত্তি। বাঘ বাঁচলে বাঁচবে ম্যানগ্রোভের বাস্তুতন্ত্র। বাঘের ঘরের হানাদারদের ঠেকাতে পারলে খানিক স্বস্তি পেতে পারে সুন্দরবন। স্বস্তি পেতে পারে রয়্যাল বেঙ্গল।

আরও পড়ুন: Sundarban Royal Bengal Tiger: কলাগাছের তলায় লুকিয়ে বসেছিল, শেষে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু কুমিরমারীর ত্রাস!