Sundarban Royal Bengal Tiger: জঙ্গলের নয়, বনদফতরের ছেড়ে দেওয়া বাঘ ঘুরছে লোকালয়ে! অভিযোগ গ্রামবাসীদের

South 24 Pargana: গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, বাইরে থেকে বাঘ এনে বা অন্য কোনও দ্বীপের বাঘ এনে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে সেই বাঘগুলি আর নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারছে না।

Sundarban Royal Bengal Tiger: জঙ্গলের নয়, বনদফতরের ছেড়ে দেওয়া বাঘ ঘুরছে লোকালয়ে! অভিযোগ গ্রামবাসীদের
সুন্দরবনে বাঘের পায়ের ছাপ ঘিরে আতঙ্ক (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 02, 2022 | 2:24 PM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: এ যেন ‘ছু কিত কিত’ খেলা! কিছুতেই নাগাল পাওয়া যাচ্ছে না গোসাবার ‘পাঁকাল’ বাঘের। খাঁচার ভিতরে রয়েছে নধর টোপ। ছাগল। মিত্রবাড়ি তে পাতা দু-দুটি খাঁচার সামনে ঘোরাঘুরি করলেও টোপের লোভ সামলে শনিবার রাতের অন্ধকারেই ফের উধাও বাঘ (Royal Bengal Tiger)! গ্রামবাসীরা বলছেন বাঘটি লাহিড়িপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চরঘেরি এলাকায় চলে এসেছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বনদফতরের ছেড়ে দেওয়া বাঘই এভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর বারবার লোকালয়ে চলে আসছে। এই বাঘগুলির বসতি জঙ্গলে নয়।

বাঘেও বহিরাগত তত্ত্ব। সুন্দরবনের বাসিন্দাদের দাবি, যে বাঘ ফাঁদকে ফাঁকি দিয়ে বারবার পালিয়ে যাচ্ছে সেগুলি বহিরাগত। বাইরে থেকে বাঘ এনে ছাড়া হয়েছে। সেগুলি পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরেই লোকালয়ে বারবার চলে আসছে। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন  বাঘমারি দ্বীপের  বাসিন্দারা।

স্থানীয় এক এলাকাবাসীর কথায়, “এই বাঘগুলো জঙ্গলের নয়। বাইরে থেকে এনে বাঘ ছাড়া হয়েছে। আমরা কয়েকজন দেখেছি। ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের লোকেরা বাঘ এনে ছেড়ে দিচ্ছে। আমাদের মানুষ বলে মনে করছে না। আমাদের নিরাপত্তা কোথায়! আমাদের ভোট কি সরকার পায় না!”

অন্য আরেক মহিলা বলেন, “বাঘ এভাবে কখনও বাইরে বেরিয়ে আসেনি। আমি বহুবছর ধরে এই জঙ্গলের ধারে রয়েছি। কিন্তু, কখনও  এভাবে  বাঘ বাইরে বেরিয়ে আসেনি। কারণ, বাঘ মানুষকে ভয় পেত। এইভাবে কোনওদিন বাইরে আসেনি।” আরেক গ্রামবাসী বলেন, “অন্য দ্বীপ থেকে হয়ত বাঘ এনে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। নতুন পরিবেশে এসে বাঘগুলো মানাতে পারছে না। তাই লোকালয়ে চলে আসছে।”

গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, বাইরে থেকে বাঘ এনে বা অন্য কোনও দ্বীপের বাঘ এনে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে সেই বাঘগুলি আর নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারছে না। পাশাপাশি বেড়েছে বাঘের সংখ্যাও। যার জেরে বারবার লোকালয়ে চলে আসছে বাঘ। কিন্তু, সত্যিই কি তাই? এখনও স্পষ্ট কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি বনদফতরের তরফে।

প্রসঙ্গত, বেশ কয়েকদিন ধরে টানা বাঘের হানা সুন্দরবনের লোকালয়ে। সম্প্রতি কুলতলিতে বাঘের দেখা মেলে। টানা ৬ দিন পর সেই বাঘকে পাকড়াও করে বনদফতর। সপ্তাহ না পেরতেই, গত শুক্রবারই কুমারামারীতে বাঘিনীর দেখা মিলেছে। শনিবার সেই বাঘিনীকে বাগনা ফরেস্ট অফিসের সামনে থেকে পাকড়াও করেন বনকর্মীরা। অন্যদিকে, কুলতলিতে বাঘের হামলায় মৃত্যু হয়েছে এক মৎস্যজীবীর। ইতিমধ্যেই গোসাবাতেও এক ডোরাকাটার দেখা মিলেছে। সেই ডোরাকাটা আবার হামলা করেছে এক বনআধিকারিকের উপর।

শনিবার, গোসাবার গ্লাসখালি ও এমলিবাড়ি গ্রাম লাগোয়া নদীর চরে বাঘের খোঁজে তল্লাশি চালাতে শুরু করেন বনকর্মীরা। সেই দলে ছিলেন বিট অফিসার পার্থ হালদারও। সেসময়ই আচমকা বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে। থাবা লাগে তাঁর গায়ে। আকস্মিকতার ঘোর কাটিয়ে ওঠার আগেই পার্থর শরীরের মাংস খুবলে নিয়ে পালিয়ে যায় বাঘ। ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও সেই বাঘ এখনও ধরা পড়েনি।

বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছেন, “আমি মনিটারিং করছি। আমার ধারণা বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। তাই মাঝেমধ্যেই বাইরে বেরিয়ে আসছে। ওদের পর্যাপ্ত খাবার দেওয়া হচ্ছে। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি। সাধারণ মানুষকে বলব, আপনারা শান্ত থাকুন। নয়ত ওকে ধরা কঠিন হবে।”

আরও পড়ুন: Sundarban Royal Bengal Tiger: ‘সে যে চমকে বেড়ায়, দৃষ্টি এড়ায়’…৪৮ ঘণ্টা পেরলেও খাঁচায় ধরা দিল না ‘পাঁকাল’ বাঘ!