পায়ের উপর নরম কিছু একটা লাগল, বোঝার আগেই দংশন! ছেলেকে বাঁচাতে বাবা যা করলেন

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Sep 04, 2021 | 7:21 AM

Sandeshkhali: ছেলের বাবাকে দেখেই পড়শিরা চেপে ধরেন। এক্ষুণি যাতে ওঝা ডেকে এনে ছেলের সাপের বিষ নামানোর ব্যবস্থা করেন, সে পরামর্শও দেওয়া হয়।

পায়ের উপর নরম কিছু একটা লাগল, বোঝার আগেই দংশন! ছেলেকে বাঁচাতে বাবা যা করলেন
নিজস্ব চিত্র।

Follow Us

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: যে কোনও বড় বিপদের ঝুঁকি এড়ানো যায় সামান্য সচেতন হলেই। সন্দেশখালির এই পরিবার তা প্রমাণ করে দিল শুক্রবার। বাড়ি ফেরার পথে এক কিশোরকে কামড়ে ধরেছিল সাপ। পরিবারকে জানাতেই, এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে বাড়ির লোকজন ছোটে হাসপাতালে। চিকিৎসকদের তৎপরতায় প্রাণ ফিরে পায় ওই কিশোর।

প্রতি বছর সাপের কামড়ে সুন্দরবনে মৃত্যু হয় বহু মানুষের। বেশিরভাগ মৃত্যুর ঘটনাই ঘটে সর্প দংশনের পর ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বদলে ওঝা কিংবা গুণীনের কাছে নিয়ে যাওয়ায়। বহু সচেতনতা প্রচার কর্মসূচি, পাড়ায় পাড়ায় সতর্ক প্রচারেও কাজ হয়নি। এখনও সমাজের একটা বড় অংশে গেঁথে বসে রয়েছে এই কুসংস্কারের ব্যাধি। তবে সেই ব্যাধি যে ধীরে ধীরে কাটছে, তার প্রমাণ দিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সন্দেশখালি ধামাখালির বাসিন্দা জয়নাল মোল্লা।

ধামাখালির পঞ্চাশবিঘা গ্রামের বাসিন্দা জয়নালের ছেলে মিসবাউল হক মোল্লা শুক্রবার কোনও কাজে বাইরে বেরিয়েছিলেন। ফেরার পথে রাস্তায় এক বিষধর সাপ তার পায়ে ছোবল মারে। মিসবাউল বিন্দুমাত্র আতঙ্কিত না হয়ে সোজা বাড়িতে গিয়ে গোটা বিষয়টি জানায়। প্রথমটা ছেলের এমন অবস্থা শুনে খানিক ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন মিসবাউলের বাড়ির লোক।

ইতিমধ্যেই খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা জয়নাল মোল্লার বাড়িতে ভিড় জমান। তাঁরা পরামর্শ দেন, এলাকার ওঝাকে ডেকে এনে ঝাড়ফুঁক করানোর। তাতেই বিপদ টলবে বলে দাবি তোলেন এলাকার মানুষ। সেই সময় অবশ্য জয়নাল মোল্লা বাড়িতে ছিলেন না। ছেলেকে সর্পদংশনের খবর পেয়েই তড়িঘড়ি বাড়িতে ছুটে যান তিনি। গিয়ে দেখেন বাড়ি ভর্তি লোক। ছেলে দাওয়ায় বসে। পরিবারের সদস্যদের মুখে উদ্বেগের ছাপ।

ছেলের বাবাকে দেখেই পড়শিরা চেপে ধরেন। এক্ষুণি যাতে ওঝা ডেকে এনে ছেলের সাপের বিষ নামানোর ব্যবস্থা করেন, সে পরামর্শও দেওয়া হয়। তবে জয়নাল মোল্লা সে সব কথা কানে তুলতে চাননি। উল্টে তিনি পাড়ার লোকজনকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই ছেলে নিয়ে তিনি হাসপাতালে যাবেন। প্রথমটা একটু মুখ চাওয়াচাওয়ি করেছিলেন পাড়ার লোকেরা। তবে এর বেশি কিছু বলতে পারেননি।

এরই মধ্যে ছেলে মিসবাউল হক মোল্লাকে নিয়ে জয়নাল একটি ভ্যানে চাপিয়ে রওনা দেন। প্রায় ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ ইঞ্জিন ভ্যান চালিয়ে ছেলেকে নিয়ে পৌঁছন ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে। সেই সময় হাসপাতালে যে চিকিৎসকরা ছিলেন, তাঁদের পুরো বিষয়টি জানান। এরপরই চিকিৎসকরা তড়িঘড়ি চিকিৎসা শুরু করেন। বাবার সঠিক সিদ্ধান্ত ও চিকিৎসকদের তৎপরতায় বড় বিপদ থেকে রক্ষা পায় ওই কিশোর মিসবাউলের বাবা জয়নাল মোল্লা জানিয়েছেন, “ছেলেকে সাপ কামড়েছে জানতে পেরেই ওঝা-গুণীনের খপ্পড়ে না পড়ে সোজা হাসপাতালে নিয়ে চলে আসি। তাতেই ছেলের প্রাণ বাঁচানো গেল। ” আরও পড়ুন: এ মাসেই পাবেন ‘দুয়ারে রেশন’, কবে, কোথায়, কী ভাবে তা দেওয়া হবে জানাল খাদ্য দফতর

Next Article