দক্ষিণ ২৪ পরগনা: গঙ্গাসাগর মেলায় এক পয়সাও কেন্দ্র দেয় না। মঙ্গলবার তিনদিনের গঙ্গাসাগর সফরে গিয়ে এভাবেই সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার কথায়, ‘কুম্ভমেলা যদি ওয়ান হয়, এটা টু পাওয়া উচিৎ। এটা কুম্ভের মেলা থেকে কোনও অংশে কম নয়।’ তাঁর দাবি, গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় মেলার তকমা দেওয়ার জন্য বহুবার কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তার কোনও জবাবই আসেনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন অভিযোগ তোলেন, কুম্ভমেলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার সবরকম সহযোগিতা করলেও গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে তাদের কোনওরকম সহযোগিতা নেই। মমতা বলেন, “কুম্ভমেলায় সব টাকা ভারত সরকার দেয়। কিন্তু এখানে এক পয়সাও দেয় না। যদি কুম্ভমেলা ওদের সুয়োরানি হয়, গঙ্গাসাগর কি দুয়োরানি হয়ে গেল?”
মঙ্গলবার গঙ্গাসাগরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন এখানকার মেলাকে জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বহুবার কেন্দ্রকে চিঠি লেখা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন “আমি অনেকবার চিঠি দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীকে অনেকবার চিঠি লিখেছি গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলা ঘোষণা করা উচিৎ। কুম্ভ যদি ওয়ান হয়, এটা টু পাওয়া উচিৎ। আমি মনে করি কুম্ভ থেকে এটা কিছুতেই কম নয়। কুম্ভ মেলা রোড কানেকটেড, রেল কানেকটেড। কিন্তু এটা জল পেরিয়ে আসতে হয়। সেই জন্যই সবাই বলে সব তীর্থ বার বার গঙ্গা সাগর একবার। কিন্তু আজ একবার যাঁরা গঙ্গাসাগরে এসেছেন তারা বারবার আসেন। আগে গঙ্গাসাগরে থাকার জায়গা পর্যন্ত ছিল না। এখন কিন্তু সব ব্যবস্থা করা আছে। আপনারা যখন প্রশ্নের উত্তর না পেলে অপেক্ষা করেন আমাকেও অপেক্ষা করতে হবে।”
গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিশ্বের অন্যতম সেরা মেলা এই গঙ্গাসাগর মেলা। প্রতি বছর প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ এখানে আসেন। যতই প্রকৃতির দুর্যোগ আসুক না কেন, গঙ্গাসাগর কিন্তু ঘুরে দাঁড়ায়। মমতার কথায়, “যশের পর, অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর আমরা চটপট করে উন্নয়নের সব কাজ করে দিয়েছি। তীর্থযাত্রী যাঁরা আসবেন, তাঁদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য সব ব্যবস্থা মেলা কমিটির তরফে জেলাশাসক করেছেন।”
হারউড পয়েন্ট থেকে কচুবেরিয়া পর্যন্ত ব্রিজ তৈরির বিষয়টি বহু বছর ধরে চলছে। বুড়িগঙ্গার উপর এই ব্রিজ তৈরি নিয়ে বাম আমল থেকে ফাইল চালাচালি চললেও ঠাণ্ডাঘর থেকে তা আর বেরোয়নি। এদিন এই ব্রিজ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই মেলায় এক পয়সা কেন্দ্র দেয় না। কুম্ভ মেলাতে সব কেন্দ্র দেয়। আমরা তাজপুর বন্দর নিয়ে বলেছিলাম। সেই কথাও রাখেনি। কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ হবে এই সেতু তৈরিতে। টাকা পয়সা হাতে এলেই করা হবে। আমাদের কাজ আমরাই করে নেব।”
আরও পড়ুন: Consultant Appointment: নিয়ম না মেনেই নিয়োগ করা হয়েছে রাজ্যপালের! বিস্ফোরক তৃণমূল সাংসদ