AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Fire Crackers Business: ‘আমরা খাবো কী, সেটাও তো ভাবতে হবে!’ আলোর পুজোতে প্রদীপের নীচে রয়েছে ওঁদের সংসার

Fire Crackers: পরবর্তী সময়ে সত্তরের দশকে সেখানে শ্যামা ফায়ার ওয়ার্কস, সত্যনারায়ণ ওয়ার্কস, কল্পনা ফায়ার ওয়ার্কস, লোকনাথ ফায়ার ওয়ার্কসের মতন আরও তেরোটি কারখানা গড়ে ওঠে।

Fire Crackers Business: 'আমরা খাবো কী, সেটাও তো ভাবতে হবে!' আলোর পুজোতে প্রদীপের নীচে রয়েছে ওঁদের সংসার
অশনি সঙ্কেত দেখছেন বাজি ব্যবসায়ীরা
| Edited By: | Updated on: Nov 04, 2021 | 7:32 AM
Share

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: হাইকোর্টের নির্দেশে নিষিদ্ধ শব্দবাজি। কিন্তু তাতেও প্রহর গুনছেন কয়েক হাজার দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ। রাজ্যের বাজি প্রস্তুত কারকদের তালিকায় সবার প্রথমে নাম উঠে আসে বারুইপুরের চম্পাহাটি-হাড়ালের কথা। কারণ এখানে ঘরে ঘরে মানুষ কুটির শিল্পের মতন বাজি তৈরিতে নিযুক্ত। বংশ পরম্পরায় তাঁরা এই কাজই করে আসছেন।

আজ সেই বাজি ব্যাবসা অস্তিত্বের সঙ্কটে ভুগছে। মূলত ১৯৬০ সালে এই বাজি তৈরির কাজ শুরু হয় স্থানীয় বেগমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের হারাড় গ্রামেl তৎকালীন সময়ে ১০০ বিঘা জমি কিনে ভবানীপুরের রায় মোহন দত্ত শুরু করেছিলেন বিজলি ফায়ার ওয়ার্কসl যা বাজি শিল্পের পথিকৃৎ হিসেবে আজও পরিগণিত হয়।

পরবর্তী সময়ে সত্তরের দশকে সেখানে শ্যামা ফায়ার ওয়ার্কস, সত্যনারায়ণ ওয়ার্কস, কল্পনা ফায়ার ওয়ার্কস, লোকনাথ ফায়ার ওয়ার্কসের মতন আরও তেরোটি কারখানা গড়ে ওঠে। দরিদ্র এলাকা হওয়ায় সেখানকার মানুষ বাজি তৈরির কারিগর হিসেবে তাঁদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সেই কাজে লাগানো হয়l ফলে একদিক থেকে বলা যায় যে শব্দবাজির আঁতুড়ঘর মূলত এই চম্পাহাটি-হাড়াল এলাকা।

কিন্তু ১৯৯৬ সালের পর থেকে শব্দ দূষণের কারণে কারখানাগুলো বন্ধ হতে থাকায় সেই শ্রমিকরা বাজি তৈরির কাজ শুরু করে দেয় নিজেদের বাড়িতে। সব মিলিয়ে চম্পাহাটি, বেগমপুর ও সাউথ গড়িয়া এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় থাকা ১৯ টি গ্রামের কুটির শিল্প হিসেবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বাজি শিল্প। যে শিল্পে জড়িয়ে আছে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে ২০-৩০ হাজার মানুষl বাজির রমরমা ব্যবসার কারণে সেখানে দ্রুত বিনিয়োগ হতে থাকে। ফলে স্বাভাবিক কারণেই ২০০০ সালে তৈরি হয় চম্পাহাটি- হাড়াল আতশবাজি ব্যবসায়ী সমিতি।

মূলত কালীপুজোরকে কেন্দ্র করে এই বাজির ব্যবসা।  বছরে প্রায় দেড়শো কোটি টাকার মতন ব্যবসা হয় এই বাজি থেকেই। কিন্তু দিনকে দিনকে দিন সেই বাজি শিল্প আজ অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছে। চম্পাহাটি- হাড়ালের বাজি কারিগররা যখন তামিলনাড়ুর শিব কাশীতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে উন্নত প্রকারের বাজি তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছে, ঠিক সেই সময়ই করোনা অতিমারি এই ব্যবসাকে একেবারে তলানিতে নিয়ে এসেছে।

যে কারণে গত বছর ব্যবসার একেবারেই করা সম্ভব হয়নিl বড় ব্যবসায়ীরা বহু লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বাজি তৈরি করলেও তা বিক্রি করতে না পারায় গোডাউনে নষ্ট হচ্ছে তাদের তৈরি বাজিl কোনওভাবে ঝুঁকি নিতে নারাজ বলেই এবারে আর নতুন করে বাজি তৈরির কাজে হাত লাগায়নি। বরং তাঁরা আশায় ছিল যে গতবারের সেই বাজি এবার তাঁরা বিক্রি করে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কমাতে পারবেন।

কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশে সেই আশাতেও জল। তবে সব থেকে বড় বিপদে পড়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি বাজি ব্যবসায়ী ও কারিগররাl বাজি বিক্রি না হলে সংসার চালানো একেবারে অসম্ভব তাঁদের। অনেক বাড়ির মহিলারা বাড়িতে বাজি তৈরি করেই নিজেদের হাতখরচ জোগাড় করেনl বর্তমানে যা অবস্থা তাতে তাঁদের কাজের অবস্থা দফারফা। সব মিলিয়ে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে একাধিক বাজিকর পাড়ার বাসিন্দারা।

এক বাজি ব্যবসায়ীর কথায়, “আমাদের অবস্থা আর কিছু বলার মতো নেই। একে তো লকডাউন, করোনা, অন্য কাজে যোগ দেব, তা আর হয়ে ওঠে না। এখন এবার আদালতের নির্দেশে গত বছর একেবারেই ব্যবসাপাতি ভালো হয়নি। আমাদের খুবই খারাপ অবস্থা। কীভাবে সংসার চলবে, সেটা যদি একটু সরকার ভাবে…”

আরও পড়ুন: ‘দুর্গাপুজোর পরিস্থিতি যেন না হয়,’ জনসাধারণকে সচেতনতার বার্তা শুভেন্দুর