Sundarban Tiger Attacked: চোখ জলের দিকে, ঝুপ শব্দ শুনে পিছন ফিরে তাকাতেই সঙ্গীদের শরীর দিয়ে হিমস্রোত বয়ে গেল…
Sundarban Tiger Attacked: কৃষ্ণপদের সঙ্গীরা জানাচ্ছেন, বাঘটি নৌকাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রথমে কৃষ্ণপদর ওপরেই। তাঁকে ধরে টানতে টানতে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যেতে থাকে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: রোজগারপাতি সে অর্থে নেই। গত দু’বছরে পরিবারের আয় তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই তাই সুন্দরবনের খাঁড়িতে কাঁকড়া ধরতে যান ওঁরা। আবারও তাতেই ঘটল মর্মান্তিক ঘটনা। দুপুর গড়িয়ে গিয়েছে। ডিঙি নৌকাটা ততক্ষণে খাঁড়িতে ঢুকেছে। সকলের চোখ তখন জলেই। জাল ফেলবেন, এমন সময়েই একটা ঝুপ করে শব্দ। পিছন ফিরে তাকানোর আগেই যা ঘটার ঘটে গিয়েছে। বছর একান্নর কৃষ্ণপদ মণ্ডলের ঘাড়ে ততক্ষণে বাঘের থাবা। নৌকায় থাকা বাকিরা বড়শি, লাঠি হাতে তেড়ে উঠেছেন, কিন্তু বাঘ কৃষ্ণপদকে টেনে নিয়ে ম্যানগ্রোভের জঙ্গলে ঢুকে গিয়েছে ততক্ষণে। সঙ্গীদের চোখের সামনে থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনে আবার মৎস্যজীবীকে টেনে নিয়ে গেল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। গোসাবা ব্লকের সুন্দরবন উপকূল থানার সাতজেলিয়া ১০ নম্বর এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাতজেলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণপদ মণ্ডল স্থানীয় সুপদ মণ্ডল, আজগার আলি সর্দার ও বুদ্ধদেব মণ্ডলের সঙ্গে নৌকা নিয়ে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন সুন্দরবনের ঝিলা ৩ নম্বর জঙ্গল লাগোয়া খাঁড়িতে। সোমবার তাঁরা যখন নৌকায় বসে কাঁকড়া ধরতে চার বা দোন তৈরি করছিলেন, তখনই আচমকা জঙ্গল থেকে একটি বাঘ বেরিয়ে আসে।
কৃষ্ণপদের সঙ্গীরা জানাচ্ছেন, বাঘটি নৌকাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রথমে কৃষ্ণপদর ওপরেই। তাঁকে ধরে টানতে টানতে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যেতে থাকে। সঙ্গীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও কাজে আসেনি তা। বিপদে পড়া সঙ্গীর খোঁজ চালালেও কোনওভাবে হদিশ মেলেনি।
এরপর নৌকা নিয়ে গ্রামে ফিরে আসেন তাঁরা। মুহূর্তের মধ্যেই খবর ছড়িয়ে পড়ে গ্রামে। কান্নায় ভেঙে পড়েন নিখোঁজ ওই মৎস্যজীবীর পরিবার। গ্রাম থেকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বন কর্মীরা। যদিও কোনও খোঁজ মেলেনি ওই মৎসজীবীর। এমনিতেই সুন্দরবনের নদী খাঁড়িতে বর্তমান সময়ে মাছ কাঁকড়া ধরার ওপর প্রশাসনিকভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা আছে। তা সত্ত্বেও অনেক মৎস্যজীবী গোপনে মাছ কাঁকড়া ধরতে গিয়ে নিজের জীবনে বিপদ ডেকে আনছেন। গত কয়েক মাসে এ ধরনের ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বন দফতরের আধিকারিকরাও।