দক্ষিণ ২৪ পরগনা: শাসকদলের নেতার ‘দাদাগিরি’র রোষের শিকার শিক্ষক দম্পতি। তাঁদের হেনস্থা করে বাড়ি ছাড়া করার অভিযোগ। তাঁরা একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। সেই ভাড়া বাড়ি থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য ওই শাসকনেতা চাপ দিয়েছেন বলে অভিযোগ। আতঙ্কে দশ মাসের শিশুকে নিয়ে ঘরছাড়া দম্পতি। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতায়।
জানা গিয়েছে, ফলতার বাসিন্দা অসীম হালদারের বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন শিক্ষক তুহিন মণ্ডল। তিনি ফতেপুর শ্রীনাথ ইনস্টিটিউশনে শিক্ষকতা করেন। তাঁর স্ত্রী সারিকা ডায়মন্ড হারবারের মশাট গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা। বাড়িমালিক অসীম কর্মসূত্রে পরিবার নিয়ে কেরলে থাকেন। তাঁর এই বাড়িতে খুব বেশি যাতায়াত নেই। তাঁদের বাড়িতেই দীর্ঘদিন ধরে রয়েছেন তুহিন। সম্প্রতি তাঁর সন্তানও হয়েছে। অভিযোগ, এলাকার শাসকদলের নেতা আশিস মণ্ডল দীর্ঘদিন ধরে অসীমের বাড়ি দখলের চেষ্টা করছেন। প্রথমে বাড়ি মালিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তারপর তুহিনকেও বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন বলে অভিযোগ।
শিক্ষককে মারধর ও প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। আশিস এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী। চিকিৎসক তুহিনের বক্তব্য, “আমরা যে অসীম হালদারের বাড়িতে থাকি, এটাই সমস্যা। আমাদের একাধিকবার মারধর করেছে। অসীম হালদারের প্রতি ওদের ব্যক্তিগত আক্রোশ, তাই আমাকে ভায়া করে অসীমকেই ভয় দেখাতে চাইছে ওরা।” তিনি জানিয়েছেন, পুলিশকে জানানো হয়েছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে তাঁর বক্তব্য।
ভয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন শিক্ষক। তাঁর স্ত্রী বলেন, “ওই বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার জন্য আগেও হুমকি দিয়েছে। প্রশাসন আশিস মণ্ডলের বিরুদ্ধে পদক্ষেক করুক।” খবর পেয়ে কেরল থেকে এসেছেন বাড়িমালিক অসীম হালদারও। তিনি বলেন, “ওপর থেকে মদত রয়েছে। নাহলে এত জোর কীভাবে আসছে? ”
অভিযুক্ত আশিস মণ্ডল হলে ফতেপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী। স্থানীয় সূত্রের খবর, ফলতা ব্লক তৃণমূলের যুব সভাপতি জাহাঙ্গীর খানের ‘ঘনিষ্ঠ’ বছর তিরিশের আশিস ২০১৮ থেকে ২১ সাল পর্যন্ত ফতেপুর অঞ্চল তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি ছিলেন।
ফলতার ঘটনায় এইমাত্র ডায়মন্ড হারবার যাদবপুর সাংগঠনিক জেলার মহিলা সভানেত্রী মনমোহিনী বলেন, “এইরকম কোনও বিষয় জানা নেই। ঘটনা ঘটে থাকলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেব। শিক্ষক হেনস্থা তৃণমূল জমানায় হয় না।” অভিযুক্তের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা ফোন ধরেননি।