কলকাতা : অবশেষে তৃণমূলে (Trinamool Congress) যোগ দিলেন শিক্ষক নেতা মইদুল ইসলাম (Moidul Islam)। শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক মইদুল ইসলাম সহ আন্দোলনকারী পাঁচ শিক্ষিকা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘাসফুল শিবিরে নাম লেখালেন। আন্দোলনের সময় বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করা শিক্ষিকাও যোগ দিলেন শাসক শিবিরে। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিলেন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। ডায়মন্ড হারবারে এক দলীয় কর্মসূচিতে মইদুল এবং আন্দোলনকারী শিক্ষিকারা যোগ দেন তৃণমূলে। তাঁদের গলায় উত্তরীয় পরিয়ে, হাতে জোড়াফুলের পতাকা তুলে দিয়ে দলে স্বাগত জানালেন ব্রাত্য বসু।
খুব বেশি দিন আগের ঘটনা নয়। মাত্র তিন মাস আগের কথা। ২৪ অগস্ট। বিকাশ ভবনের সামনে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন পাঁচ শিক্ষিকা। দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গে বদলি করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে সেদিন সল্টলেকে বিক্ষোভ দেখায় শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ। সেখানেই গলায় বিষ ঢালেন পাঁচজন। সেদিন এই ঘটনাকে বলা হয়েছিল বাংলার বুকে লজ্জা। শিক্ষিকারা বিষপান করতে বাধ্য হচ্ছেন এই সরকারের আমলে। এক শিক্ষিকা তো এই বিষপানের পর দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তিও ছিলেন। সম্প্রতি ছাড়া পান। এরই মধ্যে শাসকদলে যোগদান।
শিক্ষক আন্দোলনের নেতা মইদুল ইসলাম এবং বিষপানকারী শিক্ষিকারা যে আজ তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন, সেই খবর TV9 বাংলাই প্রথম প্রকাশ্যে এনেছিল। মইদুল আগেই জানিয়েছিলেন, তিনি আজ রাজ্যের শাসক দলে যোগ দিতে চলেছেন। কিন্তু কেন হঠাৎ করে এই ভোলবদল? শিক্ষক নেতা অবশ্য এ বিষয়ে বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক কাজে তিনি অত্যন্ত খুশি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ভরসা রেখেই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আগামিদিনেও মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো দাবি আদায়ের পথেই হাঁটতে চান তাঁরা।
সেদিন মইদুল ইসলাম বলেছিলেন, “আমরা শিক্ষক সংগঠন। শিক্ষক স্বার্থটাই আমাদের কাছে সব থেকে বড়। সেই জায়গা থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে বেসরকারিকরণ, গৈরিকীকরণ এসবের বিরুদ্ধে তো আমরা লড়াই করি। স্বাভাবিক কারণেই সেটা একটা বিষয়। এই তো আজ আন্দোলনের চাপে কৃষিবিল প্রত্যাহার হল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে সরকারকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। প্রশাসনিক বৈঠক থেকে দুয়ারে সরকার, দুয়ারে রেশন, কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী সব করেছেন উনি। আন্দোলন আমরা করেছি ঠিকই। কিছু দাবি মান্যতাও পেয়েছে। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আস্থা রেখেছি। আন্দোলনের মাধ্যমে যেমন আমাদের দাবি অনেকটা মিটেছে। একই ভাবেই আমরা চাই রাজ্য সরকারের জনমুখী কাজের সঙ্গী হয়েও শিক্ষক সমাজের স্বার্থ সংরক্ষিত করতে পারব।”