EXCLUSIVE: বিষপানকারী সেই পাঁচ শিক্ষিকা এবার তৃণমূলে, ঘাসফুলে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা মইদুল ইসলামও

Trinamool Congress: আদি গঙ্গায় নেমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হওয়া শিক্ষকরাও যাচ্ছেন তৃণমূলেই।

EXCLUSIVE: বিষপানকারী সেই পাঁচ শিক্ষিকা এবার তৃণমূলে, ঘাসফুলে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা মইদুল ইসলামও
আন্দোলনে ঝড় তুলে এবার তৃণমূলে যোগদান শিক্ষকনেতার। অলঙ্করণ অভিজিৎ বিশ্বাস।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 19, 2021 | 2:52 PM

সুমন মহাপাত্র: আন্দোলনে ঝড় তুলে এখন শিবির বদল সেই পাঁচ শিক্ষিকার। যাঁরা অন্য জেলায় বদলি করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিকাশ ভবনের সামনে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। শিবির বদলের পথে সেই শিক্ষক নেতা মইদুল ইসলামও, যিনি অভিযোগ তুলেছিলেন, তাঁকে গ্রেফতার করতে পুলিশ পাঠিয়েছে রাজ্য। রয়েছেন সেই শিক্ষকরাও যাঁরা, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়ির কাছে আদি গঙ্গায় নেমে বুঝে নেওয়ার প্রখর দাবিতে সরব হয়েছিলেন। সকলেই এবার তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। আগামী রবিবার ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূলে যোগদান করতে চলেছেন তাঁরা।

গত ২৪ অগস্ট সেই ছবি দেখেছিল গোটা রাজ্য। বিকাশ ভবনের সামনে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন পাঁচ শিক্ষিকা। দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গে বদলি করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে সেদিন সল্টলেকে বিক্ষোভ দেখায় শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ। সেখানেই গলায় বিষ ঢালেন পাঁচজন। সেদিন এই ঘটনাকে বলা হয়েছিল বাংলার বুকে লজ্জা। শিক্ষিকারা বিষপান করতে বাধ্য হচ্ছেন এই সরকারের আমলে। এক শিক্ষিকা তো এই বিষপানের পর দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তিও ছিলেন। সম্প্রতি ছাড়া পান। এরই মধ্যে শাসকদলে যোগদানের খবর সামনে এল।

মইদুল ইসলাম অবশ্য এ বিষয়ে বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক কাজে তিনি অত্যন্ত খুশি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ভরসা রেখেই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আগামিদিনেও মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো দাবি আদায়ের পথেই হাঁটতে চান তাঁরা। মইদুল ইসলাম জানান, আগামী রবিবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপস্থিতিতে ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূলে যোগ দেবেন তাঁরা। সমস্ত শিক্ষক ঐক্য মঞ্চই এবার থেকে তৃণমূলের সঙ্গে থাকবে। রাজ্যের যেখানে যেখানে তাঁদের সংগঠন রয়েছে, সেখান থেকেই প্রতিনিধিরা রবিবার ডায়মন্ড হারবারে যাবেন।

মইদুল ইসলাম বলেন, “আমরা শিক্ষক সংগঠন। শিক্ষক স্বার্থটাই আমাদের কাছে সব থেকে বড়। সেই জায়গা থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে বেসরকারিকরণ, গৈরিকীকরণ এসবের বিরুদ্ধে তো আমরা লড়াই করি। স্বাভাবিক কারণেই সেটা একটা বিষয়। এই তো আজ আন্দোলনের চাপে কৃষিবিল প্রত্যাহার হল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে সরকারকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। প্রশাসনিক বৈঠক থেকে দুয়ারে সরকার, দুয়ারে রেশন, কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী সব করেছেন উনি। আন্দোলন আমরা করেছি ঠিকই। কিছু দাবি মান্যতাও পেয়েছে। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আস্থা রেখেছি। আন্দোলনের মাধ্যমে যেমন আমাদের দাবি অনেকটা মিটেছে। একই ভাবেই আমরা চাই রাজ্য সরকারের জনমুখী কাজের সঙ্গী হয়েও শিক্ষক সমাজের স্বার্থ সংরক্ষিত করতে পারব।”

প্রশ্ন উঠছে, এই সেই মইদুল ইসলাম, এই সেই শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের সদস্যরা যাঁরা আদি গঙ্গায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে, যাঁরা এসএসকে এমএসকে শিক্ষিকাদের হয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল, কী কারণে তাঁরাই তৃণমূলের হাত ধরছে? এ প্রসঙ্গে শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের নেতা মইদুল ইসলামের বক্তব্য, “লড়াই তো যে কোনও সময়ে করা যায়। এটা তো গণতান্ত্রিক পদ্ধতি। একাধারে লড়াই থাকে, একাধারে আলাপ আলোচনা থাকে। এই সরকারের কিছু সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। সেটা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু আমরা মনে করি সরকার যে ভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে জনমুখী প্রকল্প নিচ্ছে, বিভিন্ন খাতে অর্থ বরাদ্দ করছে, সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষকে পরিষেবা দিচ্ছে নিশ্চিত ভাবে তারা শিক্ষকদেরও সমস্ত দিকই দেখবে।”

আরও পড়ুন: সরকারি হাসপাতালগুলিতে অমিল একাধিক জীবনদায়ী ওষুধ! তবে কি বিনামূল্যের পরিষেবাতেই কোপ?