Sundarban: নদী সাঁতরে গ্রামে বাঘ ঢুকেছে, খবর রটতেই রাতভর হইহই কুলতলিতে

Kultali: সারারাত বাঘের অবস্থান সম্পর্কে কোনও সূত্র পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার সকালেও বনকর্মীরা ছিলেন।

Sundarban: নদী সাঁতরে গ্রামে বাঘ ঢুকেছে, খবর রটতেই রাতভর হইহই কুলতলিতে
কুলতলিতে গ্রামে বাঘ ঢুকে পড়ায় আতঙ্কে এলাকাবাসী। ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 30, 2021 | 10:19 AM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সুন্দরবনের বাঘ কুলতলির লোকালয়ে! গ্রামে বাঘের পায়ের ছাপ ঘিরে আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়ল কুলতলি ব্লকের গুড়গুড়িয়া-ভুবনেশ্বরী গ্রামপঞ্চায়েতের মনসাতলার বাসিন্দাদের।

সুন্দরবনের প্রত্যন্ত কুলতলি ব্লকের লোকালয়ে বাঘের আতঙ্ক গ্রাস করেছে গ্রামবাসীদের। সুন্দরবনের আজমলমারি-১ নম্বর জঙ্গল থেকে একটি বাঘ নদী সাঁতরে মনসাতলা গ্রামে ঢুকে পড়েছে বলেই দাবি স্থানীয়দের। সেই ভয়ে নাওয়া-খাওয়া ভুলতে বসেছেন এলাকার লোকজন।

সোমবার সন্ধ্যার দিকে বাঘের পায়ের ছাপ নজরে আসে গ্রামবাসীর। স্থানীয়দের মতে, পায়ের ছাপ দেখে মনে হচ্ছে সেটি কোনও স্ত্রী বাঘের পায়ের ছাপ। যেহেতু এই মনসাতলা গ্রামটি নদীর সংলগ্ন, ফলে বাঘের এলাকায় ঢুকতে সুবিধা বলে দাবি গ্রামের লোকের।

খবর দেওয়া হয় রায়দিঘি রেঞ্জের বনকর্মীদেরও। রাতেই লাঠিসোটা-সহ প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নিয়ে তাঁরা হাজির হন গুড়গুড়িয়া-ভুবনেশ্বরীতে। গ্রামবাসীদের নিয়েই রাতভর গ্রাম লাগোয়া নদীর বাঁধ বরাবর চলে পাহারা। একই সঙ্গে বাজি-পটকা ফাটানো হয়। যাতে বাঘটি রাতের অন্ধকারে গ্রামে হামলা চালাতে না পারে।

তবে সারারাত বাঘের অবস্থান সম্পর্কে কোনও সূত্র পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার সকালেও বনকর্মীরা ছিলেন। তবে জোয়ার থাকায় তল্লাশিতে সমস্যা হচ্ছে। ভাটায় বাঘের খোঁজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বনকর্মীরা। গ্রামবাসীদের আবেদন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাঘটিকে জঙ্গলে ফেরাক বনদফতর।

গত সপ্তাহেই সুন্দরবনে বাঘের হামলায় গুরুতর জখম হন এক মৎস্যজীবী। কোনওমতে প্রাণে বেঁচে ফিরেন তিনি। গৌরহরি মাইতি নামে ওই মৎস্যজীবী গোসাবার সোনাগাঁও থেকে সুন্দরবন জঙ্গলের নদীখাড়িতে গিয়েছিলেন মাছ-কাঁকড়া ধরতে। পাঁচজনের একটি দলের সঙ্গে গিয়েছিলেন তিনি। জঙ্গল লাগোয়া খালের খাড়িতে নৌকা নোঙর করে তাঁরা কাঁকড়া ধরছিলেন। সেই সময় গভীর জঙ্গল থেকে একটি বাঘ বেরিয়ে আসে।

আচমকা ঝাঁপিয়ে পড়ে মৎস্যজীবী গৌরহরি মাইতির উপর। তাঁকে টানতে-টানতে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সঙ্গীসাথীরা নৌকায় থাকা লাঠি ও বৈঠা নিয়ে বাঘের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সঙ্গীকে ছাড়ানোর জন্য। বেশ কিছুক্ষণ বাঘে মানুষে লড়াইয়ের পর বেগতিক বুঝে রণে ভঙ্গ দেয় বাঘ। হুঙ্কার ছাড়তে ছাড়তে গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যায় সে।

স্থানীয় সজনেখালি রেঞ্জের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তাঁরা গুরুতর জখম অবস্থায় ওই মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য গোসাবা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ওই মৎস্যজীবীর অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক হলেই রাতে তাঁকে কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন চিকিৎসকরা।

সম্প্রতি আরও এক বাঘের হামলার ঘটনা ঘটেছিল। সুন্দরবনের ৭ নম্বর পীরখালি জঙ্গলে বাঘের আক্রমণে গুরুতর জখম হন এক মৎস্যজীবী। তাঁর বাড়ি গোসাবা ব্লকের বালি ২ নম্বর গ্রামপঞ্চায়েতের বিজয়নগর গ্রামে। বিজয়নগর গ্রামের চার মৎস্যজীবীকে সঙ্গে নিয়ে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই ঘটে বিপত্তি।

আরও পড়ুন: পঞ্চম থেকে অষ্টমের জন্যও খুলছে স্কুলের দরজা? স্কুল শিক্ষা দফতরের চিঠি যাচ্ছে জেলাশাসকের কাছে