ডায়মন্ড হারবার: ডায়মন্ড হারবার গুলিকাণ্ডে আটক আরও দুই তৃণমূল কর্মী। শুক্রবার রাতেই তিন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চালাতেই উদ্ধার হয় এই দু’জনের নাম। আগ্নেয়াস্ত্রের খোঁজে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ।
গতকাল গ্রেফতার হয় সৌরিশ দে, বুদ্ধদেব চিত্রকর ওরফে ডোঙা, রাজেশ পান্ডে। তাদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা ও অস্ত্র আইন সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে তাদের ডায়মন্ড হারবার মহকুমা আদালতে তোলা হলে দশ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
অন্যদিকে, গুলির ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপি ও তৃণমূলের চাপানুতোর শুরু হয়েছে। তৃণমূল নেতা সৌমেন তরফদার জানান, ‘ ঘটনার সঙ্গে যুক্তরা তৃণমূল করতেই পারে। তবে এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতি বা দলের কোনও যোগ নেই। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তো দূরের কথা। ওই ক্লাবে অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে এলাকার বাসিন্দারা প্রতিবাদ করায় এই ঘটনা ঘটেছে।’
আবার বিজেপি নেতা দেবাংশু পণ্ডার পাল্টা দাবি, ‘বেশ কয়েক মাস ধরে ওই এলাকার দখল নিয়ে তৃণমূলের যুব ও মাদারের অনুগামীদের মধ্যে গন্ডগোল চলছিল। তার জেরেই গুলি চলার মত ঘটনা ঘটল। আমরা চাই পুলিশ প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করুক।’
এদিন সকাল থেকে এলাকা ছিল থমথমে। পুলিশ মোতায়েন থাকলেও এলাকার ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন। তবে আহত তৃণমূল কর্মী বিশাল খেয়ারির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচার করে তার ডান পা থেকে গুলি বের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে পুরনো শত্রুতার জেরে এই গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। ডায়মন্ড হারবারের এসডিপিও মিতুন দে জানান, ‘২০১১ সালের প্রথম দিকে বিশাল খেয়ারির পরিবারের কেউ গুলি চালিয়েছিল বুদ্ধদেব চিত্রকর ওরফে ডোঙার পরিবারের কোনও এক সদস্যের উপর। সেই মামলা এখন আদালতে বিচারাধীন। পুরনো সেই শত্রুতার জেরে বদলা নিতেই বিশাল খেয়ারির হামলা চালানো হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসার জেরে শুক্রবার সন্ধেয় চলে পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি। ডায়মন্ড হারবার পুরসভার পাশে রেল কলোনি ডোমপাড়ার ঘটনা। গুলিবিদ্ধ হন যুব তৃণমূল কর্মী বিশাল খেয়ারি। খুব কাছ থেকে বিশালকে গুলি করা হয়। পরপর তিনটি গুলি চালানো হলেও একটি গুলি বিশালের পায়ে লাগে। তড়িঘড়ি স্থানীয়রা বিশালকে ডায়মন্ড হারবার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ডায়মন্ড হারবার থানার এসডিপিও মিতুন দে, আইসি গৌতম মিত্র সহ বিশাল বাহিনী। ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিশাল খেয়ারি নামে ওই তৃণমূল কর্মী পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। এলাকায় জনপ্রিয় ফুটবলার হিসেবে পরিচিত বিশাল।