দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ক্যানিংয়ে আক্রান্ত বিজেপি কর্মী। শুভেন্দু অধিকারীর মিছিলে যাওয়ার কারণেই তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে। আহতের নাম শঙ্কর দাস। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে। অভিযোগ, সোমবার রাতে ক্যানিং বাসস্ট্যান্ডের কাছে তাঁর উপর হামলা চালানো হয়। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল। তাদের দাবি, পারিবারিক সমস্যার জেরে ওই বিজেপি কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন।
গত ২৪ জুন বারুইপুরে বিজেপির একটি মিছিল ছিল। সেই মিছিলে ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এরপর সেখানে একটি জনসভাও করেন তিনি। তাতেই যোগ দিয়েছিলেন ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভার বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। অভিযোগ, অন্যান্যদের সঙ্গে সেখানে উপস্থিত ছিলেন শঙ্কর দাস। তারই ‘অপরাধে’ সোমবার বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। প্রকাশ্যে এই আক্রমণ হয়। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ভর্তি রয়েছেন তিনি।
হাসপাতালের বেডে বসে রীতিমতো কাঁদতে থাকেন শঙ্কর দাস। বলেন, “আমি বিজেপির মিটিংয়ে গিয়েছিলাম বলে আমাকে এভাবে মারধর করা হয়। সাধারণত আমি ক্যানিংয়ের কোনও অনুষ্ঠানে থাকি না। কিছুদিন আগে শুভেন্দু অধিকারীর মিটিং ছিল বারুইপুরে। শুধু দলকে ভালবাসি বলে গিয়েছিলাম। আমি কোনও ঝান্ডা নিয়ে যাইনি। লোকজনের সঙ্গে যাইনি। সাধারণ দর্শকের মতো গিয়েছিলাম। আমি বাড়ি ফেরার পরই শুনছি বাড়িতে হুমকি দিয়ে গেছে ‘তোর ছেলে আবার বিজেপি করছে?’। আমার মাকে গালাগালি পর্যন্ত করেছে তৃণমূলের ছেলেরা। সব ক্যানিংয়ের ছেলে।”
শঙ্কর দাসের স্ত্রী কাকলি দাস বলেন, “শুভেন্দু অধিকারীর মিটিংয়ে যাওয়ার জন্য মাকে যে ভাষায় কথা বলে গেছে তৃণমূলের ছেলেরা, তা আমি মুখে আনতে পারব না। ওরাও তো কোনও মায়ের সন্তান। কী করে একজন মাকে এভাবে বলতে পারল জানি না। ওরা বলেছিল, আমার স্বামী যেন ওদের দাদাদের সঙ্গে গিয়ে দেখা করে। যেহেতু যায়নি তাই এই হামলা। প্রথমে ঘরে ঢুকে মেরেছে। তারপর টেনে বাড়ির বাইরে নিয়ে গিয়ে শালকাঠের বাটাম দিয়ে মেরেছে। বিজেপি করে আমার স্বামী, এটাই অপরাধ।”
কাকলি জানান, একসঙ্গে ১৮-২০ জন ছেলে ঢুকে মারধর করে। প্রথমে ঘরে একটা পিঁড়ি রাখা ছিল, সেটা দিয়ে মারধর করা হয় তাঁর স্বামীকে। এরপর বাটামের বারি। তবে ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক পরেশরাম দাস বলেন, “আমি এরকম কিছু তো শুনিনি। কে কার দলের মিটিংয়ে যাবে সেটা তো তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তৃণমূল এর মধ্যে কোনওদিন ঢোকে না। আমাদের দলের একটা সংস্কৃতি নয়। দেখবেন কোনও পারিবারিক ঘটনা এর পিছনে লুকিয়ে।”