জয়নগর: তৃণমূল নেতা খুনের অভিযোগে তপ্ত জয়নগর। সোমবার ভোরে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছে। তারপর রোষ গিয়ে পড়ে দলুয়াখাকি গ্রামে। একের পর এক বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ। মাথার উপর ছাদ এক লহমায় উবে গিয়েছে। কিন্তু সরকারি সাহায্য না মেলায় ক্ষোভ জন্মাচ্ছিল ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের মনে। অবশেষে সেই অগ্নিকাণ্ডের চারদিন পর, শুক্রবার দুপুরে দলুয়াখাকি গ্রামে পৌঁছল রাজ্য সরকারের ত্রাণ। কম্বল, জামাকাপড়, বাসনপত্র নিয়ে দলুয়াখাকি গ্রামে এসেছেন সরকারি আধিকারিকরা। কিন্তু ওদের যে মাথার উপর থেকে ছাদটাই হারিয়ে গিয়েছে। বাড়ি-ঘর ভাঙা। পুড়ে গিয়েছে বাড়ির ছাউনি। সেখানে শুধু জামাকাপড়, বাসনপত্র দিয়ে কী হবে? প্রশ্ন তুলছেন গ্রামবাসীরাই। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ আধিকারিকদের সামনে কেঁদে ফেললেন তাঁরা।
সরকারি সাহায্য় হিসেবে যে ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে, তা পর্যাপ্ত নয় বলেই দাবি করছেন গ্রামবাসীরা। সরকারি অফিসারদের সামনেই এক মহিলা ক্ষোভ উগরে দিয়ে বললেন, “এই ক’টা জিনিস দিচ্ছে, আর সই করাচ্ছে।” সরকার তো সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছে। তাঁদের ত্রাণ সামগ্রী দিচ্ছে। কিন্তু তাতে কি সন্তুষ্ট হচ্ছে গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি? প্রশ্ন করায় এক মহিলা বললেন, “সন্তুষ্ট আর কোথায় হলাম? এই কটা জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছে, আর সবার সই নিয়ে যাচ্ছে। খাবার-দাবারও নেই। জামাকাপড় গায়ে দিয়ে কী করব!” এই কথা শুধু তাঁর একার নয়। বাকিদের মুখেও কম-বেশি একই সুর। অপর এক মহিলা বললেন, “বাড়ি-ঘর পুড়ে গিয়েছে। খাবার জন্য কিছু দেয়নি। ত্রিপল আর এই কটা জিনিস দিয়ে আমরা কী করব!”
উল্লেখ্য, গ্রামবাসীদের কাছে সরকারি ত্রাণ পৌঁছতে দেরি হওয়া নিয়ে আগেই সরব হয়েছিল সিপিএম। সুজন চক্রবর্তী, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়দের নেতৃত্বে সিপিএম-এর প্রতিনিধিদল ত্রাণ নিয়ে গ্রামে ঢুকতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েছিল। সেই নিয়ে দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে বচসা হয়েছিল সুজনদের। এবার অবশেষে সরকারি সাহায্য পৌঁছল দলুয়াখাকি গ্রামে।