দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ঘোরের মতো বারবার একই কথা বলে চলেছেন মা, “আমার ছেলে স্কুলে গেছে। আমিও স্কুলে যাব। ওর শরীরটা দুর্বল। জ্বর হয়েছিল তো! আমাকে নিয়ে যাবে তোমরা?” ওদিকে আবার থেকে থেকেই সংজ্ঞা হারাচ্ছেন বাবা। খালি গা, মাথা শরীর বেয়ে নামছে জল। বলে চলেছেন, “স্কুলের বন্ধুরা সব জানে। ওদের ধরলেই সব জানা যাবে।” মা-বাবা কারও হুঁশ নেই। ওদিকে ছেলে পড়ে রয়েছে মুখ ঢাকা অবস্থায়। লাশকাটা ঘরে ময়নাতদন্তের পর তার দেহ পাবে পরিবার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারে চাঞ্চল্যকর ঘটনা। সহপাঠীর মারে এক ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠল ডায়মন্ড হারবার পুর এলাকার ধনবেড়িয়া হাইস্কুলে। মৃত ছাত্রের নাম মলয় হালদার (১৭)। বাকি সহপাঠীদের অভিযোগ দুই বন্ধুর মধ্যে ইয়ার্কি হচ্ছিল। তাতেই হাতাহাতি। হঠাৎই লুটিয়ে পড়ে মলয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশ।
স্থানীয় রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা মলয় হালদার। ধনবেড়িয়া হাইস্কুলে কলা বিভাগে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই তরুণও একই ক্লাসের পড়ুয়া। পরিবারের দাবি, বেশ কিছুদিন ধরে মলয় জ্বরে ভুগছিল। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর সোমবারই প্রথম স্কুলে যায়। দ্বিতীয় ক্লাস শুরুর আগে অভিযুক্ত ওই তরুণের সঙ্গে মলয়ের ঠাট্টা তামাশা চলছিল। হঠাৎই পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে যায়। কথা কাটাকাটি থেকে গায়ে হাত পর্যন্ত তোলা হয়।
অভিযোগ, সে সময় ওই বন্ধু মলয়ের কানের নীচে ঠাটিয়ে চড় মারে। তাতেই মাটিতে পড়ে যায় মলয়। বন্ধুরাই প্রথমে জল দেয়। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় মাস্টারমশাইদের জানায়। তারা এসে হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রথমে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানেই মৃত্যু হয় মলয়ের। পুলিশ ময়নাতদন্ত করার পরই দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেবে। অন্যদিকে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত নাবালক হওয়ায় মঙ্গলবার জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে পেশ করা হবে তাকে।