নয়া দিল্লি: রবিবার (১০ মার্চ), বাংলার ৪২টি লোকসভা আসনের জন্যই প্রার্থী ঘোষণা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। এটাকে ইন্ডিয়া জোটের পক্ষে একটা বড় ধাক্কা হিসেবেই দেখছে রাজনৈতিক মহল। কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, “মমতা ভয় পেয়েছেন যে প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর উপর রেগে যাবেন।” প্রায় একই সুরে জয়রাম রমেশ বলেছেন, “ওদের কী চাপ ছিল আমি জানি না।” সোমবার (১১ মার্চ), কংগ্রেসের এই প্রতিক্রিয়ার পাল্টা জবাব দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। বাংলায় ইন্ডিয়া জোট না হওয়ার দায় কংগ্রসের উপরই, বিশেষ করে অধীররঞ্জন চৌধুরীর উপরই চাপিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে তিনি সিপিআই(এম) ও বিজেপির ‘স্বঘোষিত পরামর্শদাতা’ বলে কটাক্ষ করেছেন। একইসঙ্গে দাবি করেছেন, তাদের সুরে সুর মিলিয়ে অধীর তৃণমূল কংগ্রেস দল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেছেন।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, “ইন্ডিয়া জোট নিয়ে আলোচনায় অগ্রনী ভূমিকা নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চারটি শহরে পাঁচটি বৈঠক হয়েছিল। প্রতিটিতেই হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, নয় ডেরেক ও’ব্রায়েন উপস্থিত ছিলেন। বারবার আমরা বলেছিলাম, যে রাজ্যে যে দল শক্তিশালী তাদেরকে প্রাধান্য দিয়ে, সময় থাকতে থাকতেই জোটের আলোচনা শুরু করা হোক। বলা হয়েছিল পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট আছে। ডিসেম্বর মাসে সেই ভোট মিটে গিয়েছে। আজ মার্চ মাস। তা সত্ত্বেও কথা চলছিল। কিন্তু প্রতিনিয়ত অধীররঞ্জন চৌধুরী, বিজেপি এবং সিপিআই(এম)-এর সুরে সুর মিলিয়ে যতরকম জঘন্য নোংরা কথাবার্তা আমাদের নেত্রী এবং দল সম্পর্কে বলে চলেছেন। আর জাতীয় কংগ্রেস বলছে আমরা জোটের বিষয়ে আন্তরিক। এটা হাস্যকর। একদিকে জোটের কথা বলা হবে, আরেকদিকে সিপিআইএম এখন ওদের স্বাভাবিক মিত্র। যে সিপিআই(এম) গত পঞ্চাশ বছরে কয়েক হাজার কংগ্রেস কর্মীকে খুন করেছে। খুন হওয়া কর্মীদের পরিবারের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করুন, বাংলায় কি আপনারা এই কংগ্রেসকে দেখতে চেয়েছিলেন?”
প্রসঙ্গত, গত মাসেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেস একা লড়বে। তারপরও কংগ্রেস নেতারা বাংলায় জোটের আশা ছাড়েননি। জয়রাম রমেশ বলেছিলেন ‘কথা চলছে’। সেই সময় তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন সাফ জানিয়েছিলেন, অধীররঞ্জন চৌধুরীই বাংলায় ইন্ডিয়া জোটের আসন ভাগাভাগির পথে কাঁটা। বিজেপি এবং অধীর চৌধুরীকে সরাসরি জোট বিরোধী বলে দাবি করেছিলেন ডেরেক। তবে, নির্বাচনের পর, বিজেপিকে আটকাতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধতে পারে তৃণমূল, এমন ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেছিলেন, “লোকসভা নির্বাচনের পর, যদি কংগ্রেস যথেষ্ট সংখ্যক আসনে বিজেপিকে হারাতে পারে, তবে তৃণমূল কংগ্রেস সংবিধানে বিশ্বাস করে এবং সংবিধানের জন্য লড়াই করে এমন এক ফ্রন্টের অংশ হবে।” এদিন, সুখেন্দুশেখরও জোট না হওয়ার জন্য সেই অধীরের দিকেই আঙুল তুললেন।