মানবিক প্রকল্পের সুবিধা নিতে গিয়ে চরম অমানবিকতার শিকার! ‘দুয়ারে সরকার’ ক্যাম্পের সামনে বসেই রইলেন তাঁরা

Duare Sarkar: নাগরিকদের দোরগোড়ায় সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিতে শুরু হয়েছে রাজ্য সরকারের দুয়ারে সরকার (Duare Sarkar)-এর শিবির। সেই সব শিবিরকে কেন্দ্র করে মানুষের উদ্দীপনা যেমন রয়েছে তেমনি অভিযোগও উঠেছে বিস্তর। এবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে অমানবিক ব্যবহারের অভিযোগ তুললেন কয়েকশো বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষ।

মানবিক প্রকল্পের সুবিধা নিতে গিয়ে চরম অমানবিকতার শিকার! দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের সামনে বসেই রইলেন তাঁরা
নিজস্ব চিত্র

| Edited By: সৈকত দাস

Aug 24, 2021 | 8:38 PM

উত্তর দিনাজপুর: নাগরিকদের দোরগোড়ায় সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিতে শুরু হয়েছে রাজ্য সরকারের দুয়ারে সরকার (Duare Sarkar)-এর শিবির। সেই সব শিবিরকে কেন্দ্র করে মানুষের উদ্দীপনা যেমন রয়েছে তেমনি অভিযোগও উঠেছে বিস্তর। এবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে অমানবিক ব্যবহারের অভিযোগ তুললেন কয়েকশো বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষ।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের দুয়ারে গিয়ে বিভিন্ন সরকারি সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এই প্রকল্পের অধীনেই সরকারের মানবিক প্রকল্পের মাধ্যমে উত্তর দিনাজপুর জেলার ৯টি ব্লকের প্রতিবন্ধী শংসাপত্র দেওয়ার জন্য বিশেষ শিবিরের কথা ঘোষণা করে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা সমাজ কল্যাণ দফতর। ঘোষণা মাফিক নির্দিষ্ট ক্যাম্পে হাজির হয়ে যান শারীরিক প্রতিবন্ধীরা। কিন্তু সেখানে গিয়েই তাঁরা জানতে পারলেন এখন পরিষেবা পাওয়া যাবে না। দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে মানবিক প্রকল্পের পূর্বঘোষিত শিবির রাতারাতি নোটিস দিয়ে বাতিল করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু তার প্রচারই হয়নি বলে অভিযোগ। তাই চরম হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হলেন ইটাহার ব্লকের বেশ কয়েকজন শারীরিক প্রতিবন্ধী।

জানা গিয়েছে, ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের অধীন প্রতিবন্ধী শংসাপত্র দেওয়ার বিশেষ শিবির মাত্র ১৬ ঘণ্টা আগে নোটিস জারি করে বাতিল করায় চরম হয়রানির শিকার উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার ব্লকের প্রতিবন্ধী মানুষজন ও তাঁদের সঙ্গে আসা পরিবারের সদস্যরা।

এই ঘটনায় অবশ্য ইটাহার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আব্দুস সামাদ দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি জনিয়েছেন, সোমবার সন্ধ্যায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে দেওয়া নোটিসের জন্য শিবির বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু মানবিক প্রকল্পের ওই বিশেষ ক্যাম্প আচমকা কেন বাতিল করল স্বাস্থ্য দফতর? তা হলই যখন কেন প্রচার করা হল না? মানবিক প্রকল্পের সহায়তা নিতে এসে কেন এভাবে অমানবিকতার শিকার হতে হল শারীরিক প্রতিবন্ধী মানুষদের? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে মুখে কুলুপ এটেছেন জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা।

উল্লেখ্য, চলতি মাসের ১৯ তারিখ ইসলামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও রায়গঞ্জ গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক চেয়ে চিঠিও দেয় জেলা স্বাস্থ্য দফতর। মঙ্গলবারই ইটাহার ব্লকের ইটাহার হাইস্কুলে জেলার প্রথম ওই বিশেষ শিবির হওয়ার কথা ছিল। ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মাইকে ওই বিশেষ শিবিরের প্রচারও করা হয়। প্রচার করেছিলেন আশাকর্মীরা, ত্রিস্তর গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। ইটাহার হাইস্কুলে রীতিমতো প্যান্ডেল বেধে এসবের প্রচার হয়।

কিন্তু আচমকাই সোমবার সন্ধ্যায় এক নোটিসেই জারির ইটাহারের ওই বিশেষ শিবির বাতিল করে দেয় জেলা স্বাস্থ্য দফতর। বিভিন্ন স্তরে সেই শিবির বাতিলের খবর পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেন ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সদস্যরা। কিন্তু এত অল্প সময় আগে বাতিল করা শিবিরের খবর সবার কাছে নাকি পৌঁছতে পারেননি তাঁরা। ফলে মঙ্গলবার সকাল থেকেই ইটাহার হাইস্কুলে শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তাঁদের পরিবারের মানুষরা ভিড় জমাতে শুরু করেন। কেউ এসেছেন সুদুর সুরঙ্গপুর থেকে, কেউবা সুরুন গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে। দূরদুরান্ত থেকে এই গরিব খেটে খাওয়া মানুষরা কষ্টের সঞ্চিত টাকা খরচ করে পরিবারের প্রতিবন্ধী সদস্যকে নিয়ে এসে হয়রানির শিকার হলেন। প্রশ্ন উঠছে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত মানবিক প্রকল্পের রূপায়ণে আচমকা কেন ‘অমানবিক’ হয়ে উঠল জেলা স্বাস্থ্য দফতর?

সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বিশেষ কিছু জানা যায়নি। কারণ, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জেলার গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকায় তাঁর দেখা মেলেনি। সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডেপুটি সিএমওএইচ দেবাশিস রায়ের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি জানান এ বিষয়ে তিনি কিছুই বলতে পারবেন না। আরও পড়ুন: তরতর করে এগোচ্ছে শ্যাম-কাণ্ডের তদন্ত, সকালে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ, বিকালেই পুরসভায় হানা