চাকুলিয়া : পণের দাবিতে গৃহবধূর উপর অকথ্য অত্যাচার। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় গৃহবধূ। এমনই অভিযোগ উঠেছে উত্তর দিনাজপুরে। চাকুলিয়া থানা এলাকার ওই গৃহবধূর মৃত্যু ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়। সুবিচার চেয়ে গৃহবধূর কফিনবন্দী দেহ চাকুলিয়া থানা এলাকার কানকি ফাঁড়িতে নিয়ে আসেন তাঁর পরিবারের লোকেরা। মৃতের নাম কবিতা মণ্ডল। ঘটনায় কানকি পুলিশ ফাঁড়িতে শ্বশুর বাড়ির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন কবিতার বাপের বাড়ির লোকেরা। মাস খানেক আগেই প্রণব বালোর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল কবিতার। অভিযোগ, দাবি মতো পণ না পাওয়ায় বিয়ের পর থেকেই তাঁর উপর অকথ্য অত্যাচার চালাত শ্বশুর বাড়ির লোকেরা।
চাকুলিয়া থানা এলাকার রামকৃষ্ণপুরের এই ঘটনা আবারও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে রাজ্যের গার্হস্থ্য হিংসার করুণ দৃশ্য নিয়ে। কবিতার বাপের বাড়ির লোকেদের বক্তব্য,বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য মেয়ের উপর অত্যাচার চালানো হত। অভিযোগ, সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে কবিতা। তাঁদের অভিযোগ, কবিতার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই তাঁকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে।
কবিতা মণ্ডলের বাপের বাড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৭ অগস্ট রাতে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে কবিতা। সেই রাতেই খবর পেয়ে গৃহবধূর বাপের লোকজন পৌঁছে যায় শ্বশুর বাড়িতে। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় নিকটবর্তী চিকিৎসা কেন্দ্রে। পরে সেখান থেকে শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে গৃহবধূর শারীরিক অবস্থার ক্রমেই অবনতি হতে থাকে। পরে শিলিগুড়ির এক নার্সিংহোমে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়। চিকিৎসকরা কবিতাকে বেঙ্গালুরু নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন বলেও জানিয়েছেন কবিতার বাপের বাড়ির লোকেরা। কিন্তু এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসাধীন থাকালীন মৃত্যু হয় কবিতার।
শনিবার বিকেলে বেঙ্গালুরু থেকে ফেরে কবিতার দেহ। তাঁর মৃতদেহ কানকি ফাঁড়িতে আসেন বাপের বাড়ির লোকেরা। কবিতার স্বামী ও তাঁর শ্বশুর বাড়ির লোকদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ওই গৃহবধূর বাবা। অভিযোগের ভিত্তিতে ওই গৃহবধূর স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ।