উত্তর দিনাজপুর : টিভি৯ বাংলার খবরের জের, অবশেষে কালিয়াগঞ্জের নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত নাবালককে গ্রেফতার করল কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ। নাবালককে গ্রেফতার করার পর তাকে ১৪ দিনের জুভেনাইল হোমে পাঠালো জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড। এদিন নাবালিকাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে ওই নাবালককে আটক করেছিল পুলিশ। তারপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার জানিয়েছিলেন সানা আখতার জানিয়েছিলেন যে, এই ঘটনায় অভিযুক্ত যেহেতু নাবালক তাই পকসো আইনে পদক্ষেপ করতে হবে প্রশাসনকে। মঙ্গলবার দুপুরেই নির্যাতিতার ঠাকুমা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কালিয়াগঞ্জ থানায়। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ ওই নাবালককে গ্রেফতার করে।
টিভি৯ বাংলায় খবর সম্প্রচার হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এদিকে, মঙ্গলবার সকালে নির্যাতিতাকে দেখতে রায়গঞ্জ মেডিক্যালে যান সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী ও মহিলা তৃণমুল নেতৃত্ব। পরবর্তীতে দুপুরে কালিয়াগঞ্জের মোস্তাফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়পুর গ্রামে নির্যাতিতার বাড়িতে যান দেবশ্রী। একে একে শাসক দলেরও বিভিন্ন নেতাকর্মীরা যান নির্যাতিতার বাড়িতে। কালিয়াগঞ্জের জয়েন্ট বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীপা সরকার ও মহিলা তৃণমুলের পুনরায় দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা সভানেত্রী চৈতালি ঘোষ সাহা সহ অন্যান্যরা গিয়েছিলেন নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে।
এদিকে নাবালিকাকে ধর্ষণের পর থেকেই তাকে ও তার পরিবারকে মুখ বন্ধ রাখতে বলার অভিযোগও ওঠে। সেই নাবালিকাকে লাগাতার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। অভিযোগ ওঠে, ওই নাবালক মেয়েটিকে বলা হয়েছিল কিছু বললে প্রাণে মেরে দেওয়া হবে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন রাতেই ছেলের বাড়ির লোক হাসপাতালে যান। হাসপাতালে গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। এইসব কারণে নির্যাতিতার পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে শাসকদল ও প্রশাসনিক কর্তারা। অন্যদিকে, কালিয়াগঞ্জে নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনায় গ্রাম জুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন গ্রামের প্রবীণরা। তাঁদের কথায়, গ্রামে অনেক ছোট ছোট কন্যা সন্তানেরা রয়েছে। তারা অনেকেই স্কুলে পড়তে যায়, খেলাধূলো করে। কিন্তু এভাবে ধর্ষকেরা নির্ভয়ে অবাধে ঘুড়লে সেক্ষেত্রে যে কোনোও বয়সের নারীরাই সুরক্ষিত নন। সেই আতঙ্ক পাশের গ্রাম অবধিও পৌঁছে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
এই আতঙ্কের পরিস্থিতিতে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করায় কিছুটা ভয়মুক্ত হচ্ছেন প্রতিবেশীরা। তাকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড ১৪ দিনের জুভেনাইল হোমে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। তবে এই ঘটনায় যাতে নতুন করে কোনও উত্তেজনা না ছড়ায় বা কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয় ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আরও পড়ুন : Kaliagung Physical Assault Case: ছোট্ট মেয়েটা সিসিইউয়ে যুঝছে, শুধু লালসার শিকারই নয়, দেওয়া হয়েছে হুমকিও