CBI: ‘কুন্তলবাবু ফাঁসিয়েছেন’, CBI বেরিয়ে যেতেই কাঁপা কাঁপা গলায় বললেন গোপাল দলপতির মা
Purba Medinipur: ভগবানপুর-২ ব্লকের খিরিশবাড়ি এলাকায় গোপাল দলপতির বাড়ি। জানা গিয়েছে, মাস দু'য়েক আগে গোপাল দলপতি এই বাড়িতে এসেছিলেন।
পূর্ব মেদিনীপুর: পয়লা বৈশাখের সকালে জায়গায় জায়গায় সিবিআই (CBI) তল্লাশি। একদিকে মুর্শিদাবাদের বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি চলছে শুক্রবার দুপুর থেকে। অন্যদিকে শনিবার সকালে বীরভূমের নলহাটিতে বিভাস অধিকারীর বাড়িতে চলছে সিবিআই তল্লাশি। এদিনই আবার কলকাতায় আমহার্স্ট স্ট্রিটে বিভাসের ফ্ল্যাট সিল করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এরইমধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি বিধানসভার ভগবানপুর-২ ব্লকের খিরিশবাড়ি এলাকায় গোপাল দলপতির বাড়িতেও হানা দেয় সিবিআই। এদিন ৮ প্রতিনিধির একটি দল ভগবানপুরে গোপালের বাড়িতে যায়। ৪টি গাড়িতে সিবিআই আধিকারিকরা এদিন আসেন। প্রায় ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট কথা বলেন গোপালের মায়ের সঙ্গে। গোপাল দলপতির মা লক্ষ্মী দলপতি বলেন, তিনি সবরকম তথ্য দিয়ে সাহায্য করেছেন। একইসঙ্গে এদিন সংবাদমাধ্যমে বিস্ফোরক দাবি করেন গোপালের মা। কুন্তল ঘোষের নাম শোনা যায় এই বৃদ্ধার মুখে। বলেন কুন্তল ঘোষই তাঁর ছেলেকে ফাঁসিয়েছে।
ভগবানপুর-২ ব্লকের খিরিশবাড়ি এলাকায় গোপাল দলপতির বাড়ি। জানা গিয়েছে, মাস দু’য়েক আগে গোপাল দলপতি এই বাড়িতে এসেছিলেন। সিবিআই সূত্রে খবর, মায়ের সঙ্গে ছেলের কী কথা হল এদিন তা জানার চেষ্টা করেন তদন্তকারীরা। এর আগে গোপালের মা দাবি করেছিলেন, গোপাল শিবরাত্রির দিন ভগবানপুরের বাড়ি থেকে কলকাতায় যান। আর এরপর এক ব্যক্তি ‘খুব আর্জেন্ট’ বলে একটা চিঠির মতো খাম দিয়ে গিয়েছিলেন। তবে তাতে কী ছিল তা তিনি জানতেন না। সিবিআই সূত্রে খবর, সেই খাম সংক্রান্ত বিষয়েও জানতে চায় সিবিআই।
নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে কুন্তল ঘোষের মুখে শোনা গিয়েছিল গোপাল দলপতির নাম। সূত্রের খবর, নিয়োগকাণ্ডে কুন্তলের সঙ্গে তাঁর যোগগসাজশের তথ্য সিবিআইয়ের হাতে উঠে আসে। গোপাল তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে পার্টনারশিপে একটি সংস্থা খুলেছিলেন। সেখানে প্রচুর টাকার লেনদেন হয়েছে বলেও সিবিআই সূত্রে জানা যায়।
পানের দোকান থেকে অঙ্কের শিক্ষক হন গোপাল দলপতি। এরপর একটি চিটফান্ড মামলায় দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। জামিনে মুক্ত তিনি। এরইমধ্যে আবার এ রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছে তাঁর। গোপালের নামে ৬৫টি দলিল নথিভুক্ত রয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। কোনওটায় ঠিকানা দেওয়া রয়েছে দমদম মন্দির রোড, কোথাও আবার সরকারি রেজিস্ট্রি দফতরের নথিতে তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। নামেও প্রকারভেদ আছে। কোথাও কোথাও এই গোপাল হয়েছে আরমান গঙ্গোপাধ্যায়। বাবার নামও রামকৃষ্ণ দলপতি থেকে হয়েছে রামপদ দলপতি। কোটি কোটি টাকার সে সব সম্পত্তি। সবই সিবিআইয়ের স্ক্যানারে। তবে ছেলের সম্পর্কে মা কতটা কী জানেন, এবার সেই তথ্য তালাশেই সিবিআই।
এদিকে গোপাল দলপতির পূর্ব মেদিনীপুরের বাড়িতে তল্লাশির পর কলকাতার হরিদেবপুরে একটি ফ্ল্যাটে যায় সিবিআই। ২৫৯ নম্বর রাজা রামমোহন রায় সরণির ফ্ল্যাটে পৌঁছয় তদন্তকারীদের দল। বাইরে ৬ জন সিআরপিএফ জওয়ান রেখে শুরু হয় তল্লাশি। সূত্রের খবর, গোপালের স্ত্রী হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্য়ায়ের নামে এই ফ্ল্যাট রয়েছে। তবে এখানে গোপাল দলপতি ওরফে আরমান গঙ্গোপাধ্যায়ের যাতায়াত ছিল বলেই স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। যদিও নিয়োগকাণ্ডে গোপালের নাম উঠে আসার পর তাঁদের আর এখানে দেখা যায়নি। এই ফ্ল্য়াটের বাইরে থেকে প্রচুর নিয়োগসংক্রান্ত নথি পাওয়া গিয়েছিল।