কাবুল: তালিবানের ‘সহনশীলতা’র রূপ ধরা পড়েছিল আগেও, সরকার গঠনের পরই আস্তে আস্তে নিজের মুখোশ খুলতে শুরু করেছে তালিবান (Taliban)। নয়া সরকারের বিরুদ্ধে মহিলাদের আন্দোলন দেখানোর “অপরাধে” বেধড়ক মারধর করে গায়ে কালশিটে ফেলে দেওয়া হল সাংবাদিকদের। গত একদিনের মধ্যেই এইধরনের দুটি ঘটনা সামনে এসেছে।
আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল্র পর থেকেই তালিবান শীর্ষ নেতারা জানিয়েছিলেন, আগের তালিবানের সঙ্গে তাদের বিস্তর ফারাক। নতুন সরকার গঠন হলেই সকলের অধিকার সুনিশ্চিত করা হবে। সংবাদমাধ্য়মকেও পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হবে। তবে বাস্তবে ঘটছে ঠিক উল্টো ঘটনাটাই। তালিবান বিরোধী কোনও খবর সম্প্রচার করলেই সাংবাধিকদের কপালে জুটছে মার।
লস অ্যাঞ্জেলাস টাইমস-র এক সাংবাদিক একটি ছবি পোস্ট করেছেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে, দুই সাংবাদিক অর্ধনগ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাদের পিঠ ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন, লম্বা কালশিটেও পড়ে গিয়েছে। ছবিটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে কী নির্মমভাবে তাদের মারধর করা হয়েছে।
Painful. Afghan journalists from @Etilaatroz, Nemat Naqdi & Taqi Daryabi, display wounds sustained from Taliban torture & beating while in custody after they were arrested for reporting on a women’s rally in #Kabul, #Afghanistan.#JournalismIsNotACrime https://t.co/jt631nRB69 pic.twitter.com/CcIuCy6GVw
— Marcus Yam 文火 (@yamphoto) September 8, 2021
এটিলাট্রোজ় নামক যে আফগান সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকদের মারধর করা হয়েছে, তারাও ওই দুই সাংবাদিকের দেহে আঘাতের চিহ্নগুলির ছবি দিয়েছেন। তাকি দায়রাবি ও নেমাতুল্লাহ নাকদি নামক ওই সাংবাদিক ও ভিডিয়ো এডিটর বুধবার পশ্চিম কাবুলের কার্ট-ই-চার এলাকায় মহিলাদের একটি প্রতিবাদ মিছিলের ছবি তুলছিলেন। সেই সময়ই আচমকা চড়াও হয় তালিবানরা।তাদের তুলে নিয়ে যায় অনত্র।
সেখানে দুজনকে দুটি ভিন্ন ঘরে নিয়ে গিয়ে মারধর ও শারীরিক অত্য়াচার করা হয়। নেমাতুল্লাহ নাকদি বলেন, “আমরা ক্রমাগত চিৎকার করে বলছিলাম যে আমরা সাংবাদিক, কাজ করছিলাম। কিন্তু ওরা কেউই কথা শোনেনি। এমনভাবে মারধর করা হচ্ছিল, আমরা তো ভেবেছিলাম আমাদের খুনই করে ফেলা হবে।”
এলএ টাইমসের সূত্র মতে, আন্দোলনরত মহিলাদের ছবি তোলা শুরু করতেই তালিবানরা এসে তাদের তুলে নিয়ে যায়। তাদের সঙ্গে বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলির যে সমস্ত প্রতিনিধিরা ছিলেন, তাদের ধমক দিয়ে কেবল এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়। ওই সংবাদমাধ্যমের দাবি, ইউরোনিউজ বলে একটি ইউরোপিয়ান সংবাদমাধ্যমের স্থানীয় প্রধান সহ তিন সাংবাদিকদেরও অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে তালিবানরা। কিছুক্ষণ পরে তাদের অক্ষত অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হয়। কেবল সংবাদমাধ্য়মের প্রধানকে চড় মারা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ওই মিছিলের সম্প্রচার করতে গিয়েই টোলো নিউজ সহ একাধিক সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। গত মাসেও টোলো নিউজের সাংবাদিক জাইর ইয়াদ খানকে ব্য়পক মারধর করে সাংবাদিকরা। তার আগে এক জার্মান সাংবাদিকের খোঁজে তার এক আত্মীয়কেও খুন করে তালিবানরা। আফগান বাহিনীর সঙ্গে তালিবানের সংঘর্ষ শুরু হওয়ার সময়ই রয়টার্সের চিত্র সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকিকেও খুনের অভিযোগ ওঠে তালিবানিদের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: মুরগি হোক বা ফল, নতুন সরকারে চুরি করলে কেমন শাস্তি দিচ্ছে তালিবান, দেখুন…
আরও পড়ুন: ‘বন্ধু’ তালিবদের ৩ কোটি ১০ লাখ ডলারের সাহায্য পাঠাচ্ছে বেজিং