নয়া দিল্লি: ২০২১ সালের অগস্ট মাসেই দীর্ঘযুদ্ধের পর আফগানিস্তানের (Afghanistan) শাসনভার নিজেদের হাতে নিয়েছে তালিবান (Taliban)। কাবুলের মসনদে তালিবান অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই আফগান সরকারের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও বরাদ্দ অর্থের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএমএফ (IMF)। তারপর থেকে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশের অর্থ সংকট চরমে। আন্তর্জাতিকস্তরে নতুন সরকারে স্বীকৃতিও মেলেনি, জোটেনি কোনও সাহায্যও, সরকার চালাতে তাই হিমশিম অবস্থা তালিব যোদ্ধাদের। দেশের চরম খাদ্য সংকট ও দারিদ্র দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মানবিকতার কারণে আফগান জনসাধারণের কথা ভেবে সাহায্য করেত উদ্যোগী হয়েছিল ভারত সরকার। ভারতে তরফে আফগানিস্তানে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা এবং গম পাঠানোর কথা থাকলেও পাকিস্তানের কারণে তা সম্ভব হয়নি। কারণ নিজেদের ভূখণ্ড ভারতকে ব্যবহার করতে দিতে রাজি ছিল না পাকিস্তান। পরবর্তীকালে আন্তর্জাতিক স্তরে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার ভয়ে অবস্থান থেকে সরে এসে ভারতের প্রস্তাবে রাজি হয়েছিল ইসলামাবাদ। তারপর নানা জটিলতার কারণ বিমানে ওষুধ পাঠালেও গম পাঠাতে পারেনি ভারত।
নিউজ ১৮-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গিয়েছে প্রতিশ্রুতি মতো ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ ও ১২ তারিখে আফগানিস্তানের উদ্দেশে রওনা দেবে ভারতে পাঠানো গম। ভারতে আফগানিস্তানের দূত ফরিদ মামুন্দজে জানিয়েছেন, একমাসের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। বর্তমানে পাকিস্তানি ভূখণ্ড ব্যবহার করে গম পাঠানোর পদ্ধতি সম্পর্কে নয়া দিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যে কথাবার্তা চলছে। “বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সাহায্য প্রয়োজন ছিল। আমাদের দেশের নাগরিকরা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে গম এবং খাদ্য সামগ্রীর মানবিক সহায়তা একান্ত প্রয়োজন।”
জানুয়ারি মাসের ২৯ তারিখ চতুর্থবারের জন্য আফগানিস্তানে বিভিন্ন জীবনদায়ী ওষুধ পাঠিয়েছিল ভারত। কাবুলের ইন্দিরা গান্ধী হাসপাতালের হাতে যাবতীয় ওষুধ তুলে দেওয়া হয়েছিল। ভারত ইতিমধ্যেই চিকিৎসা সহায়তার তিনটি চালান সরবরাহ করেছে। ভারতের তরফে আফগানিস্তানকে করোনা টিকারল ৫ লক্ষ ডোজ়ও দেওয়া হয়েছে। কাবুলের ইন্দিরা গান্ধী হাসপাতাল ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে এই সাহায্যগুলি তুলে দেওয়া হয়েছিল। ভারত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বানকেও সমর্থন করেছে যে আফগানিস্তানের জন্য মানবিক সহায়তা কোনও বাধা ছাড়া সরাসরি পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন।