Indian student died in USA: এক সপ্তাহে মৃত্য়ু তিন ভারতীয় ছাত্রের, কী হচ্ছে মার্কিন মুলুকে?

Indian student died in USA: এই নিয়ে গত এক সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয় ভারতীয় ছাত্রের মৃত্যু হল। আর বছর ধরলে, এই নিয়ে চতুর্থ ভারতীয় ছাত্রের মৃত্যু হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। শ্রেয়সের মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও অজানা। তবে, প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, এই ক্ষেত্রে কোনও অপরাধের ঘটনা জড়িয়ে নেই।

Indian student died in USA: এক সপ্তাহে মৃত্য়ু তিন ভারতীয় ছাত্রের, কী হচ্ছে মার্কিন মুলুকে?
ওহায়োতে তাঁর অ্যাপার্টমেন্টেই মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল শ্রেয়স রেড্ডির দেহImage Credit source: Twitter
Follow Us:
| Updated on: Feb 02, 2024 | 12:44 PM

নিউ ইয়র্ক: ফের মার্কিন মুলুকে এক ভারতীয় ছাত্রের মৃত্যু। মৃত ওই ছাত্রের নাম শ্রেয়স রেড্ডি, বয়স মাত্র ১৯। বৃহস্পতিবার, ওহাইও প্রদেশের সিনসিনাটি শহরে তাঁর অ্যাপার্টমেন্টেই তাঁকে তে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। এই নিয়ে গত এক সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয় ভারতীয় ছাত্রের মৃত্যু হল। আর বছর ধরলে, এই নিয়ে চতুর্থ ভারতীয় ছাত্রের মৃত্যু হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। শ্রেয়সের মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও অজানা। তবে, প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, এই ক্ষেত্রে কোনও অপরাধের ঘটনা জড়িয়ে নেই।

১৯ বছর বয়সী শ্রেয়স রেড্ডি, ওহাওর লিন্ডার স্কুল অব বিজনেসের ছাত্র ছিলেন। তাঁর বাবা-মা হায়দরাবাদে থাকেন। তবে, শ্রেয়সের কাছে মার্কিন পাসপোর্ট ছিল। তাঁর মৃত্যুর পিছনে কোনও ঘৃণামূলক অপরাধ নেই বলেই দাবি মার্কিন পুলিশের। এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে নিউইয়র্কের ভারতীয় দূতাবাস। তারা জানিয়েছে, শ্রেয়সের মৃত্যুর কারণ জানার জন্য তদন্ত চলছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ নিউ ইয়র্কের ভারতীয় কনস্যুলেট বলেছে, “ওহাওতে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ছাত্র শ্রেয়াস রেড্ডি বেনিগারির দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। পুলিশ তদন্ত করছে। এই পর্যায়ে কোনও অপরাধের সন্দেহ করা হচ্ছে না। কনস্যুলেটের পক্ষ থেকে তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তাদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা করা হবে।”

শ্রেয়সের মৃত্যুর পিছনে কোনও অপরাধ নেই বললেও, সন্দেহ যাচ্ছে না। আসলে, চলতি সপ্তাহের শুরুতেই, নীল আচার্য নামে পারডু ইউনিভার্সিটির এক ছাত্রকে রহস্যজনক পরিস্থিতিতে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। গত রবিবার তাঁর মা জানিয়েছিলেন, তিনি ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। এর কয়েক ঘণ্টা পরই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই নীল আচার্যর দেহ পাওয়া যায়। তাঁর মা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নীলের খোঁজ করেছিলেন। তিনি জানান, শেষবার এক উবার চালক নীলকে দেখেছিলেন। ওই চালক তাঁকে ক্যাম্পাসে নামিয়ে দিয়েছিলেন।

তার আগে, ১৬ জানুয়ারী জর্জিয়ার লিথোনিয়ায় একজন গৃহহীন ব্যক্তি হাতুড়ি দিয়ে মেরে হত্যা করেছিল আরও এক ভারতীয় ছাত্র, বিবেক সাইনিকে। ১৬ বছরের বিবেক ছিলেন হরিয়ানার পঞ্চকুলার বাসিন্দা। জর্জিয়ার লিথোনিয়ায় এমবিএ ডিগ্রি কোর্সের পড়াশোনা করছিলেন তিনি। সঙ্গে এক স্থানীয় দোকানে তিনি পার্টটাইম কাজ করতেন। ওই দোকানে এক গৃহহীন ব্যক্তিকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। বিবেক সাইনি মাঝে মাঝে ওই ব্যক্তিকে পটাটো চিপস, জল, এমনকি একবার একটি জ্যাকেট দিয়েও সাহায্য করছিলেন তিনি। কিন্তু ঘটনার দিন, ওই গৃহহীন ব্যক্তিকে সে বিনামূল্যে খাবার দিতে চায়নি। তাতেই খেপে গিয়ে বিবেকের মাথায় অন্তত ৫০ বার হাতুরি দিয়ে আঘাত করেছিল ওই ব্যক্তি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই ভারতীয় ছাত্রের।

জানুয়ারিতেই ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় আরবানা-ক্যাম্পেইনের বাইরে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল অকুল ধাওয়ান নামে আরেক ভারতীয় ছাত্রকে। তাঁর দেহের ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছিল, হাইপোথার্মিয়া হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৮ বছর বয়সী ওই যুহকের। তবে, অকুলের মৃত্যুর পর, তাঁর বাবা-মা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ বিভাগের বিরুদ্ধে অবহেলা এবং নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনেছেন। তাঁর বাবা বলেছেন, “একটা ব্লকের থেকেও ছোট জায়গায়, এক যুবককে খুঁজে পাওয়া গেল না, পুরো বিষয়টাই অদ্ভুত। ক্যাম্পাস থেকে মাত্র এক মিনিট দূরে সে বসে ছিল। সেখানেই ও নিথর হয়ে মরে গিয়েছে।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে ৩ লক্ষের বেশি ভারতীয় ছাত্রছাত্রী আছেন। বিশেষ করে কোভিড মহামারির পর, ব্যাপক হারে ভারতীয় শিক্ষার্থী মার্কিন মুলুকে পাড়ি দিয়েছে। গত দুই বছরেই, ২ লক্ষ ভারতীয় শিক্ষার্থীকে মার্কিন ভিসা দেওয়া হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে,প্রবাসে মানসিক চাপ, একাকীত্বের প্রভাবে অনেকেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তারা অনেক সময় মাদকদ্রব্য সেবন শুরু করেন। তাতে অবসাদ আরও বেড়ে যায়। এটাই অনেক সময় তাদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।