তেহরান: হিজাব বিরোধী আন্দোলনে গত কয়েক মাস ধরে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে ইরান। পুলিশি হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন ইরানের বাসিন্দারা। এবার এই বিক্ষোভে পা মেলানোর জন্য সরকার বিরোধী এক প্রতিবাদীকে মৃত্যুদণ্ড দিল ইরানের এক আদালত। এছাড়া আরও ৫ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। হিজাব বিরোধী আন্দোলনে এই প্রথম কোনও সাজা শোনাল তেহরানের আদালত।
প্রতিবাদে সামিল হওয়া, সরকারি বিল্ডিংয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া, অশান্তি ছড়ানো, জাতি সুরক্ষায় বিঘ্ন ঘটানোর কারণে এই ছয়জনকে এই সাজা শুনিয়েছে আদালত। ইরানের বিচার বিভাগ সংক্রান্ত একটি সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, তেহরানের আদালতের আলাদা আলাদা বিচারক এই রায় দিয়েছেন। সেই রিপোর্টে সাজাপ্রাপ্তদের বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়নি। তবে জানা গিয়েছে তাঁরা ইরানের আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে ফের আবেদন করতে পারেন। জানা গিয়েছে, যাঁরা সরকারের কোনওভাবে বিরোধিতা করেন তাঁদের কঠোর সাজা শুনিয়ে থাকে এই আদালত। অভিযোগ উঠেছে, সরকারের পক্ষেই রায় দিয়ে থাকে তেহরানের এই আদালত। অতীতেও এরকম ঘটনার নজির দেখা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, দেশের কঠোর পোশাকবিধি অমান্য করায় নীতি পুলিশের নজরে আসেন ২২ বছরের যুবতী মাহসা আমিনি। পুলিশি হেফাজতেই তাঁর মৃত্যু হলে সারা দেশ জুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। সেই প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হয়েই নিজেদের চুল কাটেন বিক্ষোভকারীরা। হিজাব খুলে তা পোড়ানো হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ ও গুলি চালিয়ে সেই প্রতিবাদ দমনের চেষ্টা করে। প্রতিবাদে অংশ নিয়ে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩০০ জনেরও বেশি নাগরিকের। তাদের মধ্যে ২৫ জন মহিলা ও ৪৩ জন শিশু। তবে পুলিশি অভিযানে এই বিক্ষোভ থামানো যায়নি। এদিকে আট সপ্তাহে পড়ল এই বিক্ষোভ। এর মধ্যেই প্রতিবাদীদের উপর নেমে এল আদালতের মৃত্যুদণ্ড ও কারাদণ্ডের পরোয়ানা