ইয়াঙ্গন: গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে মায়ানমারে। সেনা- বিদ্রোহীদের সংঘর্ষে পিছু হঠতে শুরু করেছে সে দেশের জুন্টা সরকার। মায়ানমার-চিন সীমান্তের একটা বড় অংশ এখন বিদ্রোহীদের দখলে। আর মায়ানমারের এই গৃহযুদ্ধই এক সঙ্কটের সামনে ফেলেছে ভারতকে। আশঙ্কা, মায়ানমারের এই গৃহযুদ্ধের জেরে ভারতে আছড়ে পড়তে পারে শরণার্থীদের স্রোত।
মায়ানমারের সংঘর্ষ আজকের নয়। ২০২১ সালেও সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল মায়ানমারে। বন্দি করা হয়েছিল আন সাং সুকিকে। তাঁকে চার বছরের কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছে জুন্টা বাহিনী। সেই যুদ্ধের সময়ও মায়ানমারের সীমান্ত টপকে শরণার্থীরা ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে ঢোকা শুরু করেছিলেন। নতুন করে গৃহযুদ্ধ শুরু হতেই মায়ানমারে প্রায় ১ লক্ষ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন।
অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মণিপুর ও মিজোরাম – এই চার ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার ভারত-মায়ানমার সীমান্ত। এক কথায় , সমস্যা সঙ্কুল বিশাল এক সীমান্ত। দেড়শোর বেশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বসবাস এখানে। এদের একটি অংশ আগেও হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। ভারতের আশঙ্কাও তাই একটা নয়, অনেক গুলো। প্রথমত, মায়ানমারের পরিস্থিতি খারার হলে এই বিশাল সীমান্ত এলাকা অশান্ত হয়ে ওঠার সম্ভাবনা। নিষ্ক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি নতুন করে অস্ত্র হাতে নেমে পড়তে পারে। এমনিতেই মণিপুরে অশান্তির পিছনে মায়ানমারের কয়েকটি সংগঠনের ভূমিকা নিয়ে নিশ্চিত গোয়েন্দারা। সেখানে মায়ানমারের টালমাটাল পরিস্থিতি মণিপুরের জলও ঘোলা করে দিতে পারে।
এখানেই শেষ নয়। জুন্টা সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভাল। চিনের কলকাঠির কথা মাথায় রেখেই কেন্দ্র ভারসাম্য রেখে চলেছে। তার সুফলও মিলেছে। মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে ড্রাগ ও অস্ত্রের চোরাকারবার তেমন মাথা তুলতে পারেনি। এবার বিদ্রোহীদের হাতে ক্ষমতা গেলে তারা কী ভূমিকা নেবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নয় দিল্লি। আর সবচেয়ে বড় আশঙ্কা অবশ্যই চিন নতুন কী চালাকি করে তা নিয়ে। গোয়েন্দাদের কাছে খবর যে মায়ানমারের পরিস্থিতি বদল হতেই মাঠে নেমে পড়েছে চিন। অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়া দেশটাকে তারা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চাইছে। মায়ানমারের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি নতুন করে অস্ত্র হাতে নেমে পড়তে পারে, সেই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে ভারত অত্যন্ত সতর্ক।