ঢাকা: সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে ছাত্র বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র বাংলাদেশ। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুর-সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে এই বিক্ষোভ। সোমবারই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল ছাত্রলিগের বিরুদ্ধে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামি লিগেরই ছাত্র শাখা হল ছাত্রলিগ। এদিন সেই সংঘর্ষ আরও বড় আকার নিল। সব মিলিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার দু’জন, চট্টগ্রামের তিনজন ও রংপুরের একজন রয়েছেন। এদিন দুপুরে ঢাকা-সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে আরও কয়েকশো মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
সোমবারই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন একাংশের শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের মধ্যেই আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের উপর ছাত্রলিগের সদস্যরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এদিন দুপুরে, ওই ঘটনার প্রতিবাদেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স ল্যাব এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেছিলেন কোটা আন্দোলনে সামিল শিক্ষার্থীরা। কিন্তু, বেলা দুটো নাগাদ, সেই মিছিলের উপরও হামলা চালায় ছাত্রলিগ। এমনটাই অভিযোগ। এরপরই ওই এলাকায় দুই পক্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর সেখানে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলিও চলে বলে অভিযোগ। অভিযোগের আঙুল পুলিশ, ছাত্রলিগ, যুবলিগ ও আওয়ামি লিগের সমর্থকদের দিকে।
ঢাকা কলেজের সামনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুবলিগ ও ছাত্রলিগের নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে এক যুবকের মৃত্যু হয়। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, ওই যুবককে রাস্তায় ফেলে পেটাচ্ছিল একদল লোক। ঢাকার পাশাপাশি, চট্টগ্রামের মুরাদপুরেও কোটা আন্দোলনে সামিল শিক্ষার্থীদের উপর হামলা হয়। শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ও হাতবোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে যুবলিগ ও ছাত্রলিগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের বুকে, পিঠে গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। রংপুরেও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলিগের সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা আন্দোলন সমন্বয় কমিটির সদস্য ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।