ঢাকা: তাঁর জন্যই আজ বাংলাদেশ স্বাধীন। ‘ দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ অর্জনের পর সেই বঙ্গবন্ধুরই মুখে কালি লেপেছে আন্দোলনকারীরা। তাঁর মূর্তি ভাঙতেও হাত কাঁপেনি। এবার বঙ্গবন্ধুর অবদানকে মুছে ফেলতে আরও আগ্রাসী ইউনূস সরকার। একদিকে যেখানে পাঠ্যবই থেকে শেখ মুজিবর রহমানের লেখনি বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তেমনই বঙ্গভবন থেকেও সরিয়ে ফেলা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ছবি।
১৯৭১ সালে মুজিবর রহমানের হাত ধরেই পূর্ব পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা পেয়েছিল বাংলাদেশ। তার অবিস্মরণীয় অবদানকে মনে রাখার জন্যই বঙ্গবন্ধু নাম দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশের মুদ্রাতেও মুজিবরের ছবিই রয়েছে। কিন্তু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হাসিনা সরকারের পতনের পর যাবতীয় রোষ গিয়ে পড়েছিল তাঁর পরিবারের উপরে। একদিকে প্রাণভয়ে শেখ হাসিনা যেমন দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। আন্দোলনকারীদের রোষ থেকে বাদ যাননি শেখ মুজিবর রহমানও, ভাঙচুর করা হয় তার মূর্তি। এবার পাঠ্যবই থেকেও বাদ পড়লেন বঙ্গবন্ধু।
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার খোলনচে বদলানোর কাজ শুরু করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস। এবার থেকে পাঠ্যক্রমে যোগ হচ্ছে আরবি ভাষা। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ারা আরবি শিখবে। পাঠ্যপুস্তক থেকেও বাদ যাচ্ছেন শেখ মুজিবর রহমান। তাঁর ‘ ‘বায়ান্নর দিনগুলো’, যা বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন নিয়ে লেখা, তা বাদ যাচ্ছে পাঠ্যপুস্তক থেকে।
অন্যদিকে, সোমবারই রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে শুরু করে বিভিন্ন মন্ত্রক, এমনকী বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকেও বঙ্গবন্ধুর ছবি সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল জোর করে। এবার রাষ্ট্রপতির বাসভবনেও চিহ্ন রইল না মুজিবরের।
ছাত্র আন্দোলনের পিছনে প্রধান ‘মাথা’ হিসাবে পরিচিত মাহফুজ আলম ফেসবুকে নিজেই পোস্ট করে লেখেন, “৭১ পরবর্তী ফ্যাসিবাদী নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দরবার হল থেকে সরানো হয়েছে। এটা আমাদের কাছে লজ্জার যে ৫ অগস্টের পরে বঙ্গভবন থেকে তাঁর ছবি আমরা সরাতে পারিনি। ক্ষমাপ্রার্থী”।
বঙ্গভবন থেকেও শেখ মুজিবর রহমানের ছবি সরানোর বিষয়টি ভাল চোখে দেখেনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিএনপি-ও। দলের তরফে নিন্দা করে বলা হয়, মুজিবের ছবি সরানো উচিত ছিল না। যদিও কিছুক্ষণ পরে এই বক্তব্য প্রত্য়াহার করে নেয় বিএনপি।
তবে শোনা যাচ্ছে, এই সমস্ত কিছুর পিছনেই নির্দেশ রয়েছে একজনের। মহম্মদ ইউনূস। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান চলতি বছরের গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্রিক চেতনা তৈরি করতে চাইছেন। সেই কারণেই পুরনো ইতিহাস মুছে নতুন ইতিহাস লিখতে চাইছেন ইউনূস।