ঢাকা: আদানি গ্রুপ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি বাতিলের দাবি উঠল বাংলাদেশে। চুক্তি বাতিল না হলে আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছে সে দেশের বিরোধীরা। ভারতের আদানি গ্রুপ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামি মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ। এক বিবৃতি দিয়ে এই চুক্তি বাতিলের দাবি জানায় সংগঠনটি। বাংলাদেশ ইসলামি মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদের সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবির সংগঠনের পক্ষ থেকে এই বিবৃতি দেন। তিনি বলেন, “এই চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ আমদানি হলে প্রতিদিন বাংলাদেশের খরচা বেশি হবে ১৬ কোটি টাকা। এ জন্য অবিলম্বে এই চুক্তি বাতিল করা উচিত।”
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদের সভাপতি প্রশ্ন তোলেন, “আদানি পাওয়ারের বিদ্যুৎ বাজারদরের চেয়ে বেশি। কেন বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে হবে?”
কয়লার দাম আদানি গ্রুপ বেশি দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, “চুক্তির দামে কয়লা কিনতে গিয়ে দিনে প্রায় ১৬ কোটি টাকা গচ্চা দিয়ে সরকার কাকে খুশি করতে চায়?” আদানি গ্রুপ অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের কয়লা কিনছে কিন্তু বেশি দাম দেখাচ্ছে, এমন অভিযোগও করেন মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদের সভাপতি। তিনি জানান, ভারতের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক গোষ্ঠী আদানি গ্রুপের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লার জন্য বাংলাদেশকে যে দাম দিতে হচ্ছে তা অন্য যে কোনও বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে অনেক বেশি।
সাংবাদিক সম্মেলনে শহিদুল ইসলাম কবির বলেন, “দেশের জনগণের অর্থ লুটপাট করে ভাগ বাটোয়ারা করতে সরকারের মধ্যে থাকা এক দল লুটেরা আছে। এই চক্রটিই আখের গোছাতে আদানি গ্রুপের সঙ্গে এমন চুক্তি করেছে।” দেশের জনগণের অর্থ লুটপাটের এমন চুক্তি দ্রুত সময়ের মধ্যে যৌক্তিকভাবে পুনর্মূল্যায়ন করা না হলে দেশের জনগণ আদানি গ্রুপের সঙ্গে করা অসম চুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামবেন বলেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
বুধবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে ইসলামি মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবির আরও বলেন, “দেশের মানুষ যখন তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে চরম সংকটে দিন কাটাচ্ছে তখন আদানির সঙ্গে এই চুক্তি আত্মহত্যার সমান। বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই বলেছেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর আগে পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যে কয়লার দাম ধরিয়ে দিয়েছে তা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চাপ তৈরি করবে।” তিনি আরও বলেন, “জাহাজ ভাড়াসহ গোড্ডায় ব্যবহৃত কয়লার দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ২০০ ডলার, আর তারা বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে ৪০০ ডলারে বিক্রি করতে চাইছে।”