নয়া দিল্লি: ‘বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের মেয়ে বলেই শেখ হাসিনাকে (Seikh Hasina) পছন্দ করেন অনেক ভারতীয়। ভারতীয়রা মনে করেন শেখ হাসিনা নিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী, কিন্তু আসলে তা নয়।’ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আক্রমণের ঘটনা প্রসঙ্গে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এমনটাই বললেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasreen)। তাঁর দাবি, সংখ্যালঘুরা বাংলাদেশে বারবার আক্রান্ত হয়েছে। শেখ হাসিনা কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও কোনওদিনই দোষীদের বিচার হয়নি বলেই দাবি তসলিমার। কুমিল্লায় দুষ্কৃতী তাণ্ডবের পর শেখ হাসিনা অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু তসলিমার দাবি আসলে চরমপন্থীদের সাহায্য ও সমর্থন করেন শেখ হাসিনা।
সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তসলিমা উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশে বারবারই আক্রান্ত হয়েছেন সংখ্যালঘুরা। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই তারা আজ অবধি বিচার পাননি।’ তবে তিনি বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই নিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী। লেখিকা বলেন, ‘ভারতীয়দের অনেকেই বিশ্বাস করেন যে শেখ হাসিনা খুব ভালো এবং উনি নিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী। কিন্তু আমি তেমনটা মনে করিনা। শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে বলেই হাসিনাকে ভারতীয়রা পছন্দ করেন। হাসিনা সেইসব ইসলামিক চরমপন্থীদের শাস্তি দিয়েছেন, যারা তার বিরুদ্ধাচরণ করেছিল।’
উল্লেখ্য কুমিল্লার ঘটনার পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দাবি করেন অপরাধী যে ধর্মেরই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি, গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকেও এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তসলিমার দাবি, গত ১০-১৫ বছর ধরে এভাবেই বারবার আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশ। ব্লগারদেরও খুন করা হয়েছে। তারপরও চুপ থেকেছেন হাসিনা। তসলিমা বলেন, ‘হাসিনা আসলে চরমপন্থীদের সাহায্য করেন।’
তসলিমার আরও অভিযোগ, কেউ যদি হাসিনার বিরুদ্ধাচরণ করেন তাহলেই তাঁকে জেলে যেতে হয়। তাই বেশিরভাগ প্রগতিশীল মানুষ বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান। তাঁরা হাসিনাকে ভয় পান। তসলিমার দাবি ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের সংবিধানে নিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনার কথা বলেছিলেন হাসিনা। কিন্তু চরমপন্থীদের খুশি করার জন্য তিনি তেমনটা করেননি।
উল্লেখ্য, কুমিল্লায় তাণ্ডবের ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করেছে শেখ হাসিনার সরকার। জেলায় জেলায় আধা সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। শেখ হাসিনা প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ এক অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। বাংলাদেশে সকল ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করবে। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে।’ তিনি প্রত্যেক বাংলাদেশবাসীকে মনে করিয়ে দেন, “ধর্ম যার যার, কিন্তু উৎসব সবার। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার।”
কুমিল্লার ঘটনার তীব্র নিন্দা করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে সম্প্রীতির ইতিহাসের কথাও তুলে ধরেন। বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা আছে যে এদেশের মানুষ সবসময় প্রতিটি উৎসব সামিল হয়ে একসঙ্গে সেই আনন্দ উপভোগ করে। মাঝে মাঝে কিছু দুষ্ট চক্র এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে মানুষের মধ্যে এই চেতনাকে নষ্ট করতে চায়। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
আরও পড়ুন: Bangladesh: রংপুরের সংখ্যালঘু পাড়ায় তাণ্ডবে গ্রেফতার ৪২, কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ