লন্ডন: ২৬ বছর বয়সী ব্রিটিশ মহিলা বেথানি ইসন। বাড়ির শৌচাগারে কমোডে বসতে যেতেই ভেঙে গিয়েছিল তাঁর মালাইচাকি। চিকিৎসকদের কাছে যাওয়ার পর, তারা যা জানালেন তাতে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন বেথানি। আজ থেকে সাত বছর আগে, যখন তাঁর মাত্র ১৯ বছর বয়স, সেই সময়ই প্রথম হাঁটুতে ব্যথা অনুভব করেছিলেন তিনি। এক হাড়ের ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন। তিনি তাঁকে এক্স-রে করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এক্স-রে প্লেটটি দেখে ওই ডাক্তার বেথানিকে জানিয়েছিলেন, তাঁর হাঁটুতে একটা কিছু আছে। কিন্তু, সেটা ঠিক কী, তা তিনি বলতে পারেননি।
তারপর থেকে হাঁটুর ব্যথাটা থেকেই গিয়েছিল। কিন্তু বেথানি বিশেষ পাত্তা দেননি। কিন্তু, পরিস্থিতি বদলে গিয়েছিল ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে। একদিন কলেজ থেকে ফিরে, শোওয়ার ঘরে যাওয়ার জন্য সিঁড়ি দিয়ে উঠতে যেতেই, তাঁর বাঁ পায়ে চরম ব্যথা শুরু হয়েছিল। পাশেই ছিল শৌচাগার। সিঁড়ি দিয়ে উপরে না উঠে তিনি শৌচাগারে গিয়ে কমোডে বসে পড়েছিলেন। ঠিক তখনই তাঁর বাঁ পায়ের মালাইচাকি ভেঙে গিয়েছিল।
এরপর, তিনি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। বেথানির হাঁটু পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন , তাঁর হাঁটুতে মৃত কোষ জমে জমে একটি বিশাল টিউমার হয়েছে। সেটিই হাঁটুর হাড় এবং আশেপাশের নরম টিস্যুকে দুর্বল করে দিয়েছে। সেই কারণেই তাঁর মালইচাকি ভেঙে গিয়েছে। চিকিৎসকরা আরও জানান, ওই টিউমারের কারণে তাঁকে হাঁটু এবং উরুর হাড় প্রতিস্থাপন করতে হবে।
বেথানি জানিয়েছেন, চিকিৎসকদের ওই কথা শুনে তাঁর মন ভেঙে গিয়েছিল। তিনি তার আগে তিনি নাচতেন, দৌড়তেন, সাঁতার কাটতেন। তিনি ধরেই নিয়েছিলেন যে এই কাজগুলি তাঁর আর এই জীবনে করা হবে না। সেই মুহূর্তে তিনি কোনও আশার আলও দেখতে পাননি। এমনকি অস্ত্রোপচারের আগে চিকিৎসকরা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, শতকরা ৯৯ ভাগ রোগী এই অস্ত্রোপচারের পরে সম্পূর্ণ গতিশীলতা ফিরে পায় না। তাঁকে আবার নতুন করে হাঁটা শিখতে হবে। হয়তো আর কোনওদিন তিনি হিল তোলা জুতো পরতে পারবেন না।
বেথানি ইসন এখন অনেকটাই সুস্থ। আগের মতো সব কাজ করতে না পারলেও, গতিশীলতা অনেকটাই ফিরে পেয়েছেন। তবে, তিনি এখন অন্যদের সতর্ক করেন। সচেতন করেন, যাতে, ব্যথা-বেদনাকে কেউ অবহেলা না করে। যে কোনও ব্যথাকেই গুরুত্ব সহকারে নেওয়া দরকার বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর যে টিউমার হয়েছিল, সেই ধরনের টিউমার প্রতি ১০ লক্ষ মানুষের মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হাত বা পায়ের লম্বা হাড়ে এই টিউমার হয়। এটি দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং কাছাকাছি থাকা কলাগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে। একই সঙ্গে ওই হাড়টির মারাত্বক ক্ষতি করে।