ওয়াশিংটন: প্রায় ২০৬ বছর পর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। হামলা হল মার্কিন (USA) কংগ্রেসের ক্যাপিটল ভবনে। এর আগে মার্কিন কংগ্রেসের ক্যাপিটল ভবনে হামলা হয়েছিল ১৮১৪ সালে। তখন ‘ওয়ার অব ১৮১২’ চলার সময় ব্রিটিশ বাহিনী হামলা করেছিল। আগুন জ্বলেছিল মার্কিন কংগ্রেসের ক্যাপিটলে। কিন্তু এবার কংগ্রেসে হামলা করেছে আমেরিবাসীরাই। যার ফলে গোটা বিশ্বে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
পরিস্থিতি এমনই, খোদ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্যাবেনিটের আধিকারিকরাই মেয়াদ শেষের আগে মসনদ বদলের কথা ভাবছেন। ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ একাধিক আধিকারিক পদত্যাগ করেছেন। রিপাবলিকানদের মতে, ‘নিয়ন্ত্রণের বাইরে’ চলে গিয়েছেন ট্রাম্প। ডেমোক্র্যাট রিপ্রেজেন্টেটিভ ক্যাথলিন রাইস টুইট করে দোষারোপ করেছেন ট্রাম্পকে। তাঁর মতে, ক্যাপিটলে হামলার নেপথ্যে প্রেসিডেন্টই। সংবিধানের ২৫-তম সংশোধন প্রয়োগ করে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই প্রেসিডেন্টকে সরানোর আর্জি জানিয়েছেন তিনি। বিদায়ী প্রেসিডেন্টকে সরানোর আর্জি জানিয়েছেন পোল্যান্ডের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী রাদেক সিকোরস্কিও। এই হামলার পিছনে ট্রাম্প সমর্থকদের হাত থাকার অভিযোগ ওঠায় স্বভাবতই কাঠগড়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তাহলে কি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়তে হবে ট্রাম্পকে? মার্কিন সংবিধানে এই প্রক্রিয়া রয়েছে। প্রথম ক্ষেত্রে মার্কিন সংবিধানের ২৫-তম সংশোধনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হতে পারেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ক্ষমতা নিতে পারেন জো বাইডেনের অভিষেকের দিন পর্যন্ত।
হাউস ও সেনেটের যৌথ সম্মতিতে ট্রাম্পকে সরানো সম্ভব। প্রেসিডেন্ট যদি অত্যন্ত অপরাধমূলক কোনও কাজ করেন, তাহলে তাঁকে সরাতে পারে হাউস ও সেনেট। প্রথমে হাউসে প্রেসিডেন্ট সরানোর প্রস্তাবনায় সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্মতি এলে সেই প্রস্তাব যায় সেনেট। সেনেটের দুই তৃতীয়াংশ সেনেটর সম্মতি দিলে তবেই প্রেসিডেন্টকে সরানো সম্ভব। ২০১৯ সালে মার্কিন হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সরানোর প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু সেনেটে তা আটকে যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে যদি হাউস ও সেনেটের সম্মতি থাকে তাহলে ১ দিনের মধ্যেই প্রেসিডেন্টকে সরানো সম্ভব।
আরও পড়ুন: উত্তাল আমেরিকা! ট্রাম্পপন্থীদের হামলায় আইন প্রণেতাদের ঠাঁই হল আন্ডারগ্রাউন্ড টানেলে
২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেবেন জো বাইডেন। অর্থাৎ হিসাব মতো আর দু’সপ্তাহের কম সময়ের জন্য মসনদে রয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু নির্বাচনে পরাজয় এখনও স্বীকার করেননি বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বারবার ভোটে জালিয়াতির অভিযোগ করেছেন তিনি। নাটকীয় টুইট করে দাবি করেছিলেন নির্বাচনের ফল বদলে দেওয়ার। কিন্তু আদালতে বারবার ধাক্বা খেয়েছে তাঁর দল। পরাজয়ের পর এমনও সময় এসেছে যখন রিপাবলিকানরাই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গিয়েছেন, সব মিলিয়ে বিদায়কালে কার্যত বিপাকে ট্রাম্প।