নিউ ইয়র্ক: রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে খোলাখুলি সন্ত্রাসবাদীর পক্ষে দাঁড়াল চিন। ২৬/১১ মুম্বই সন্ত্রাসবাদী হামলায় জড়িত থাকার জন্য পাকিস্তানি লস্কর-ই-তৈয়বা সন্ত্রাসবাদী সাজিদ মীরকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী’ হিসাবে চিহ্নিত করার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রস্তাব রেখেছিল ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার (২০ জুন), সরাসরি সেই প্রস্তাবে বাধা দিল বেজিং। গত সেপ্টেম্বরেই জানা গিয়েছিল যে, রাষ্ট্রপুঞ্জের পক্ষ থেকে সাজিদ মীরকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী’ হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাবটি আটকে রেখেছে চিন। এখন সেই প্রস্তাবে স্পষ্ট বাধা দিল তারা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা কমিটিতে সাজিদ মীরকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী’ হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছিল। ভারত এই প্রস্তাব সমর্থন করেছিল। কালো তালিকাভুক্ত হলে, সাজিদ মীরের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা যেত। তার ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হত এবং অস্ত্র রাখার বিষয়েও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হত। তবে, পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদীদের কালো তালিকাভুক্ত করায় চিন এর আগেও বহুবার বাধা সৃষ্টি করেছে। চিন-পাকিস্তান মিত্রতার কথা আ নতুন করে বলার কিছু নেই। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা কমিটির আওতায় পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদীদের কালো তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব বারবার আটকে রেখেছে তারা।
সাজিদ মীরের বয়স এখন ৪০-এর ঘরে। ভারতের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ সন্ত্রাসবাদীদের তালিকায় তার নাম আছে। ২৬/১১ মুম্বই সন্ত্রাসবাদী হামলায় তার যে ভূমিকা ছিল, সেই প্রেক্ষিতে তার মাথার দাম ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার ধার্য করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এখনও সে পাকিস্তানেই আছে। ২০২২-এর জুনে, পাকিস্তানের এক সন্ত্রাসবিরোধী আদালত, সন্ত্রাসবাদীদের অর্থ সাহায্য করার এক মামলায় তাকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। তবে, তার জেল হবে কী করে? কারণ, পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী সাজিদ মীর ইতিমধ্যেই মৃত।
ভারত বা পশ্চিমী দেশগুলি তা মানেনি। ইসলামাবাদকে তার মৃত্যুর প্রমাণ দেখাতে বলা হয়েছিল। বস্তুত, সন্ত্রাসবাদে অর্থ সহায়তা প্রতিরোধের কর্ম পরিকল্পনার ক্ষেত্রে, পাকিস্তানের অগ্রগতি সম্পর্কে এফএটিএফ-এর অবমূল্যায়নে অন্যতম কারণই ছিল সাজিদ মীর। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার অপারেশন ম্যানেজার ছিল সাজিদ মীর। হামলার পরিকল্পনা, প্রস্তুতি এবং বাস্তবায়নে সে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। মুম্বই হামলায় তার ভূমিকার জন্য, ২০১২ সালের অগস্টে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ সাজিদ মীরকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক্তিয়ারে থাকা তার সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। সেই সঙ্গে মার্কিন নাগরিকদের তার সঙ্গে যে কোনও লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মার্কিন ভুমেও সে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড টেরোরিস্ট’।