বেজিং: বড় বিপদ ধেয়ে আসছে! এশিয়ার অধিকাংশ নদীর উৎপত্তি হিমালয়া (Himalaya) ও হিন্দুকুশ (Hindukush) পার্বত্য অঞ্চল। কিন্তু, সেখানেই ব্যাপক হারে গলতে শুরু করেছে হিমবাহ (Glacier) । গত এক দশকে অর্থাৎ ২০১১ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে যে হারে হিমবাহ গলেছে, তা পূর্বতন দশকের তুলনায় ৬৫ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ গত এক দশকে ৮৫ শতাংশের বেশি হিমবাহের গলন হয়েছে। চিনের সংস্থা, International Centre for Integrated Mountain Development (ICIMOD) -র সাম্প্রতিক সমীক্ষায় এমনই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। যা স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
ICIMOD- র তথ্য অনুযায়ী, ব্যাপক হারে যে হিমবাহ গলছে তারই ফল হল, অতিরিক্ত গরম এবং বন্যা, ভূমিধসের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়। শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত হিমবাহ গলনের প্রভাব পড়ছে নদীতেও। ইতিমধ্যে ১৬টি দেশের ১২টি নদীর জলের প্রবাহ কমতে শুরু করেছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনে এই সমস্ত নদী এবং তার শাখানদী ও উপনদী শুকিয়ে যেতে পারে। যার ফলে চরম বিপর্যয় নেমে আসতে পারে আফগানিস্তান থেকে মায়ানমার পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে। ফলে রেহাই পাবে না ভারতও।
ICIMOD-র গবেষক জ্যাকব স্টিনার জানান, এক দশকে যেভাবে হিমবাহের গলন হয়েছে সেটা ঠেকাতে না পারলে বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে। সবথেকে বিপদের মুখে রয়েছে চিন, ভারত সহ ৮টি দেশ। সাম্প্রতিককালে ভারতে যে ভূমিধস, বন্যা, তাপপ্রবাহ, প্রচণ্ড গরমের ঘটনা ঘটছে, সেগুলির জন্য দায়ী হিমবাহের স্খলন।
ICIMOD-র রিপোর্টে উল্লিখিত, হিমবাহের ক্রমাগত গলনের ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা ১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গিয়েছে। আন্টার্কটিকায় বরফের স্তরও কমতে শুরু করেছে। এর ফলে আমরা দ্রুত বিপদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং হিমবাহের গলনের কতকগুলি কারণও ICIMOD-র রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, জঙ্গল নিধন, অত্যধিক নির্মাণ ও ব্যাপক হারে খননের ফলে পৃথিবীর ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে। এছাড়া শিল্প-কারখানা ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপও গ্লোবাল ওয়ার্মিং বাড়ার অন্যতম কারণ। তাছাড়া দাবানল, অগ্ন্যুৎপাতের মতো প্রাকৃতিক ঘটনা রয়েছে। যার ফলেই পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়ছে এবং হিমবাহ গলছে। এগুলি নিয়ন্ত্রণ করে সবুজায়ন বাড়াতে পারলেই বিপদ কিছুটা এড়ানো সম্ভব।