ভারত-চিন বিবাদ ‘নিজেদের সমস্যা’, আমেরিকা ‘তৃতীয় পক্ষ’; পম্পেওকে পাল্টা দিল বেজিং

ভারত-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর চিন বিবৃতি দিয়ে জানায়, "নিজেদের সমস্যা নিজেরাই মিটিয়ে নেব"। একইসঙ্গে কটাক্ষ আমেরিকাকে 'তৃতীয় পক্ষ' বলে।

ভারত-চিন বিবাদ 'নিজেদের সমস্যা', আমেরিকা 'তৃতীয় পক্ষ'; পম্পেওকে পাল্টা দিল বেজিং
আমেরিকাকে কড়া জবাব চিনের।
Follow Us:
| Updated on: Nov 27, 2020 | 10:00 AM

TV9 বাংলা ডিজিটাল: এক ঢিলে দুই পাখি! একদিকে ‘সুর নরম’,অন্যদিকে ‘চোখ রাঙানি’। ভারত-চিনের সীমান্ত বিবাদ ‘নিজেদের সমস্য়া’ আর আমেরিকাকে ‘তৃতীয় পক্ষ’ বলে চিন নিজেদের অবস্থান বুঝিয়ে দিল। গালওয়ান উপত্যকা (Galwan Vally)-য় এখনও লাল ফৌজ মোতায়েন থাকলেও ভারত-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর চিন বিবৃতি দিয়ে জানায়, “নিজেদের সমস্যা নিজেরাই মিটিয়ে নেব”। একইসঙ্গে কটাক্ষ আমেরিকাকে ‘তৃতীয় পক্ষ’ বলে।

গতকালই মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও (Mike Pompeo) ও প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এসপারকে নিয়ে ২+২ বৈঠক করেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং (Rajnath Singh)। বৈঠক শেষে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েই পম্পেও বলেন, “ভারতের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে আমরা সর্বদা ভারতের পাশে রয়েছি।” পাশাপাশি বেজিংকে আক্রমণ করে মন্তব্য, “গণতন্ত্র, আইন, স্বচ্ছতা, স্বাধীনতা, উন্নয়ন- এইসব বিষয়ের বন্ধু নয় চিনের কমিউনিস্ট পার্টি।”

পম্পেও-র এই মন্তব্যের পরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে চিন (China)। আজ দিল্লিতে অবস্থিত চিনা দূতাবাসের (Chinese Embassy) তরফ থেকে বিবৃতিতে জানানো হয়, সীমান্ত নিয়ে যে সমস্যা, তা ভারত ও চিনের দ্বিপাক্ষিক বিষয়। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় মোতায়েন সেনা সরানো নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক আলোচনা চলছে। নিজেদের মধ্যে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা আছে তাদের। এক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের কোনও জায়গা নেই।

চিনা দূতাবাসের পাল্টা অভিযোগ, বিভিন্ন দল ও গোষ্ঠির মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে আমেরিকা। পম্পেও এক মিথ্যাই বারংবার বলে চিনকে আক্রমণ করে এবং চিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও কূটনৈতিক নিয়মভঙ্গ করেছেন। অন্যান্য দেশকে চিনের বিরুদ্ধে উস্কে দিয়ে আমেরিকা আরও একবার তাদের ঠান্ডা যুদ্ধ করার মানসিকতা ও মতাদর্শের পক্ষপাতকে প্রমাণ করেছে। আমরা এর কড়া বিরোধিতা করি।

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা সংক্রমণ (Coronavirus) নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) বরাবরই চিনের দিকে নিশানা করেছেন। ট্রাম্পের সুরেই সুর মিলিয়ে গতকাল পম্পেও বলেন,”চিন থেকেই করোনা ছড়িয়েছে। করোনা সংক্রমণের পর আমেরিকার সঙ্গে চিনের বাণিজ্য নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে।” তার পাল্টা জবাবও চিন দিয়েছে। বেজিংয়ের কথায়, “এইবছর সিপিসি(CPC) -র নেতৃত্বাধীনে চিনের নাগরিকরা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে জয়লাভ করেছে। আন্তর্জাতিক নামজাদা প্রতিষ্ঠানগুলির সমীক্ষা অনুযায়ী, সিপিসি (CPC) শাসিত চিন সরকারের উপর দেশের নাগরিকদের ৯০ শতাংশেরও বেশি ভরসা রয়েছে এবং তারা এই সরকার নিয়ে সন্তুষ্ট। চিনের মানুষ যে সিপিসিকে সমর্থন করে,এই সত্যটিকে যারা দেখতে পান না এবং ক্রমাগত আক্রমণ করেন, তারা চিনের নাগরিকদের সপক্ষে নয়, সরাসরি বিরুদ্ধেই দাঁড়াচ্ছেন।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “ভুল তথ্য প্রচার করে ও জনগণকে ভুলপথে চালিত করে আমেরিকা ফের একবার কোভিড-১৯ (COVID-19) সংক্রমণের দোষ চিনের ঘাড়ে চাপাতে চাইছে। চিন ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কী করেছে এবং কী অর্জন করেছে, তা সকলের কাছেই স্পষ্ট। আশা করি, মার্কিন রাজনৈতিক নেতারা অন্যদের ঘাড়ে দোষ না দিয়ে সংক্রমণ রুখতে নিজেদের প্রস্তুতি ও নিজেদের দেশের মানুষের প্রাণ রক্ষার উপর নজর দেবে।”