Blood Crisis: রক্ত নিয়ে রক্তারক্তি, এক বছরে রক্ত নিয়েই ৭ লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসা, কেন এত চাহিদা?

Blood Crisis: এত বিপুল চাহিদার মধ্যে হাসপাতালে বা চিকিত্‍সার প্রয়োজনে কত রক্ত দরকার? খুব বেশি হলে ৩৩ মিলিয়ন ইউনিট। বাকিটা রক্তের একটা বড় অংশ চোরাবাজারে চলে যায়। একটা অংশ রাষ্ট্র নিজস্ব উদ্যোগে সংগ্রহ করে রাখে। গবেষণার প্রয়োজনে, সামরিক কারণে কিংবা মহামারির কথা ভেবে।

Blood Crisis: রক্ত নিয়ে রক্তারক্তি, এক বছরে রক্ত নিয়েই ৭ লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসা, কেন এত চাহিদা?
প্রতীকী ছবি Image Credit source: Getty Images
Follow Us:
| Updated on: Sep 27, 2024 | 3:55 PM

কলকাতা: ২০২৩-২৪ সালে চাহিদার বিচারে কোন জিনিসটার চাহিদা সবচেয়ে বেশি ছিল বলুন তো? আন্দাজ করতে পারেন? উত্তরটা কিন্তু চমকে দেওয়ার মতোই। গত অর্থবর্ষে বিশ্বজুড়ে যে জিনিসটার চাহিদা সবচেয়ে বেশি ছিল, সেটা সোনা বা ডলার নয়, সবচেয়ে বেশি চাহিদা ছিল রক্তের। ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর ব্লাড ট্রান্সফিউশনের রিপোর্টে দাবি, গত অর্থবর্ষে দুনিয়া জুড়ে রক্তের চাহিদা ছিল কমবেশি ৬৭ মিলিয়ন ইউনিট। গত অর্থবর্ষের তুলনায় প্রায় ৯ শতাংশ বেশি। অথচ জোগাড় হয়েছিল মাত্র ৪৩ মিলিয়ন ইউনিট। এর আগে কখনও রক্তের চাহিদা এতটা বাড়েনি। অত রক্ত জোগান দেওয়া তো সম্ভব ছিল না। দেওয়া যায়ওনি। ফল, দেশে, দেশে রক্ত নিয়ে রক্তারক্তি। আমেরিকা থেকে ভারত – অধিকাংশ দেশের হাসপাতাল, ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের সঙ্কট। আবার চোরাবাজারেও রক্তের জোগান কম। মোদ্দা কথা হল, একদিকে রক্তের জোগান কমছে। অন্যদিকে চাহিদা হু-হু করে বাড়ছে। ফল- বিশ্বজুড়ে রক্তের আকাল। 

এত বিপুল চাহিদার মধ্যে হাসপাতালে বা চিকিত্‍সার প্রয়োজনে কত রক্ত দরকার? খুব বেশি হলে ৩৩ মিলিয়ন ইউনিট। বাকিটা রক্তের একটা বড় অংশ চোরাবাজারে চলে যায়। একটা অংশ রাষ্ট্র নিজস্ব উদ্যোগে সংগ্রহ করে রাখে। গবেষণার প্রয়োজনে, সামরিক কারণে কিংবা মহামারির কথা ভেবে। ওই রিপোর্টেই দাবি, গত অর্থবর্ষে শুধু রক্ত নিয়েই ৭ লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। চাহিদা মতো পুরো রক্তটা পাওয়া গেলে মোট ব্যবসার পরিমাণ হয়ত ১০ লক্ষ কোটি ছুঁয়ে ফেলত। এর পাশাপাশি আরও একটা বিষয় চমকে দেওয়ার মতো! যে সব দেশে রাতারাতি রক্তের চাহিদা বেড়েছে বা বেড়ে চলেছে, সেখানে কোনও যুদ্ধ বা মহামারি চলছে না। তবুও ওইসব দেশে কেন রক্তের চাহিদা বাড়ছে? এ নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসে একটা বড়সড় প্রতিবেদন লিখেছেন পৃথিবীবিখ্যাত রক্ত বিশেষজ্ঞ এলিস কারামেল। প্রতিবেদনের শিরোনাম – ব্লাডলেস ব্লাডি। প্রতিবেদক নিজেই প্রশ্ন করেছেন, দুনিয়া জুড়ে রক্তের চাহিদা বাড়ছে কেন? অসুখবিসুখ হঠাত্‍ করে বেড়ে গেল নাকি? উত্তর দিতে গিয়ে বলেছেন, অসুখ বেড়েছে বটে, তবে রক্তের নয়। কিছু মানুষের মাথাটাই নাকি খারাপ হয়ে গিয়েছে। মানে? কারামেল বলছেন, হঠাত্‍ করে কিছু মানুষ গুড ব্লাড- ব্যাড ব্লাড নিয়ে মেতে উঠেছেন। তাঁরা বেছে বেছে কোট আনকোট গুড ব্লাড কালেক্ট করতে লাখ, লাখ ডলার খরচ করছেন। এই প্রবণতা আগে ছিল না, এমন নয়। 

তবে ইদানিং সেটা একধাক্কায় অনেকটা বেড়েছে। কামামেলের দাবি, ২০২৩-২৪ সালে বিশ্বজুড়ে অন্তত ৪০ লক্ষ সুস্থসবল মানুষ ব্লাড ট্রান্সফিউশন করাতে চিকিত্‍সকদের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। শুধু এই একটা কারণেই যে রাতারাতি রক্তের চাহিদা বেড়ে গিয়েছে, তা নয়। কিন্তু এটা অন্যতম একটা কারণ তো বটেই। ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর ব্লাড ট্রান্সফিউশনের তথ্য বলছে, একটি দেশের এক শতাংশ নাগরিক নিয়মিত রক্তদান করলে, সেই দেশে রক্তের সঙ্কট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু ৮৫ শতাংশ দেশেই সেটা হয় না। এবং অন্তত ১২০টি দেশে সারা বছরই রক্তের সঙ্কট থাকে। ভারত এই তালিকার অন্যতম দেশ। ভারতে প্রতি বছর টেন পয়েন্ট সেভেন মিলিয়ন ইউনিট রক্ত প্রয়োজন। কিন্তু টেনেটুনে পাওয়া যায় সেভেন পয়েন্ট সিক্স ইউনিট রক্ত।রক্ত তো ল্যাবে তৈরি করা যায় না। তাই সভ্যতার শুরু থেকেই রক্তের এই সঙ্কট মানুষকে তাড়া করছে।