ওয়াশিংটন: কয়েক সপ্তাহ পরেই ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেবেন জো বাইডেন। কিন্তু হোয়াইট হাউস ছাড়ার আগে যেন সব গুলিয়ে দিতে চাইছেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। করোনা রিলিফ বিলে সিলমোহর দিচ্ছেন না তিনি।
যার ফলে কঠিন সময়ের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে আমেরিকার ফেডারেল সরকার। ট্রাম্পের নিজের দলের সেনেটররাই বুঝে উঠতে পারছেন না কী করবেন। করোনাকালে চাকরি হারানো বেকারদের জন্য করোনা রিলিফ বিল এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন। যেখানে বলা হয়েছে প্রত্যেক বেকারকে ৬০০ ডলার করে মার্কিন মুদ্রা দেওয়া হবে।
কিন্তু বিলের প্রস্তাব মার্কিন হাউসে পাঠিয়েই মেলানিয়াকে নিয়ে বড়দিনের ছুটি কাটাতে ফ্লোরিডার এ লাগো রিসর্টে গিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর দাবি, তিনি প্রত্যেক বেকারকে ২ হাজার ডলার করে দিতে চান। কিন্তু এই বিপুল অঙ্কের অর্থ দিতে গেলে বিদেশ সেবা খাত ও অন্যান্য একাধিক খাত থেকে টাকা তুলতে হবে মার্কিন প্রশাসনকে। সেক্ষেত্রে সেই দিকগুলি বিকল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। তাই রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট সেনেটররা সমঝোতার রাস্তায় হেঁটে ঠিক করেছেন ৬০০ ডলার করে আর্থিক ভাতা দেওয়া হবে। কিন্তু এই বিল নাপসন্দ ট্রাম্পের।
এ লাগো রিসর্টে বিল পৌঁছে গেলেও সই করছেন না ট্রাম্প। যার ফলে এক কঠিন অচলাবস্থার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে মার্কিন কংগ্রেস। রিপাবলিকান সেনেটররাও ঠিক করতে পারছেন না তাঁরা ট্রাম্পের পক্ষে মত দেবেন নাকি বিপক্ষে! তবে ট্রাম্প কিন্তু অনড়। টুইট করে সাফ লিখেছেন, “কেন রাজনীতিবিদরা আমেরিকার মানুষকে মাত্র ৬০০ ডলারের পরিবর্তে ২,০০০ ডলার দিচ্ছেন না? এটাতো তাঁদের দোষ নয়। দোষ চিনের। মানুষকে টাকা দিন।”
ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও প্রেসিডেন্ট। তাই তাঁর সই ছাড়া বিল পাস কার্যত অসম্ভব। কিন্তু বেঁকে বসেছেন ট্রাম্প। ২,০০০ ডলার না হলে তিনি সই করবেন না। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, রিসোর্টে গিয়ে গলফ খেলে ট্রাম্প ছল চাতুরি ছাড়া অন্য কিছু করছেন না। তবে কে শোনে কার কথা! উল্টে মহা বিপদে রিপাবলিকানরা। বিচার ব্যবস্থার পাশাপাশি ট্রাম্প তাঁদেরও চাপ দিচ্ছেন। টুইট করে ট্রাম্প জানিয়েছেন, এই সময় রিপাবলিকানদের প্রেসিডেন্টের জন্য লড়া উচিত। যদি ডেমোক্র্যাটরা সত্যি জিতত তাহলে তারা যা করত, সেটাই করা উচিত।
আরও পড়ুন: বয়স ১০১, দেশকে করোনা মুক্ত করতে প্রথম টিকাটা নিলেন এডিথ
পাশাপাশি ভোটে কারচুপির অভিযোগ এখনও অব্যাহত। আজকেও টুইটে ডোনাল্ড ট্রাম্প লিখেছেন, “রাতের বেলায় মেল-ইন-ব্যালট এসেছে। একই ব্যক্তি দুবার ভোট দিয়েছেন, মৃতর নামেও ভোট পড়েছে।” বিচার ব্যবস্থাকে নিয়ম করে আক্রমণ করছেন ট্রাম্প। সব মিলিয়ে চরম অবস্থা মার্কিন মুলুকে। বিশেষজ্ঞদের মতে শেষদিন পর্যন্ত এই রাজনৈতিক খেলা চালিয়ে যাবেন ট্রাম্প। তবে নির্বাচনের ফল পরিবর্তন করার সুযোগটা হয়ত শেষ।