Germany: খনি সম্প্রসারণের জন্য খালি করা হচ্ছে জার্মানির এই গ্রাম, শেষ সম্বলটুকু বাঁচাতে বুক চিতিয়ে লড়ছেন বাসিন্দারা
Germany: জার্মানির লুৎজ়ারথ গ্রাম থেকে বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। খনি সম্প্রসারণের জন্যই RWE এই পরিকল্পনা করেছে।
বার্লিন: খনি তৈরির জন্য খালি করে দেওয়া হচ্ছে জার্মানির (Germany) একটি গ্রাম লুৎজ়ারথ। এতদিন সেখানে বসাবস ছিল বহু মানুষের। তবে মাটির নীচে থাকা কয়লা পেতে তাঁদের এলাকা ছাড়ার নিদান দেওয়া হয়েছে। তবে সেখানকার বাসিন্দারাও সহজভাবে এই উচ্ছেদ অভিযান মেনে নেননি। গর্জে উঠেছেন তাঁরা। সকলে এককাট্টা হয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। প্রশাসনও দমে যাওয়ার পাত্র নয়। টেনে, হিঁচড়ে ভিটে ছাড়া করা হচ্ছে লুৎজ়ারথের (Lützerath) বাসিন্দাদের। সেখানে খোদাই কাজ চালানোর জন্য মেশিনের জায়গা করতে ব্যস্ত পুলিশ।
গত বুধবার থেকে পশ্চিম জার্মানির এই ছোট্ট গ্রামে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এখান থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় কয়েকশো প্রতিবাদীকে এলাকা থেকে সরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। এই উচ্ছেদ অভিযানে ১ হাজারেরও বেশি পুলিশ নিযুক্ত রয়েছেন। তাঁদের হস্তক্ষেপে উচ্ছেদ অভিযান প্রায় শেষের দিকে। বেশিরভাগ বিল্ডিংই এখন ফাঁকা। তবে এখনও কিছু সমাজকর্মী গুঁটিসুঁটি মেরে পড়ে রয়েছে সেখানে।
Wenn diese Szenen keine Konsequenzen haben, dienstrechtliche und politische, legitimieren die Verantwortlichen ganz offen Polizeigewalt. Nichts anderes ist das hier. #Luetzerath pic.twitter.com/3ojb7K6oOh
— Gilda Sahebi (@GildaSahebi) January 15, 2023
তবে এখনও আশা ছাড়েননি সমাজকর্মীরা। এই উচ্ছেদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদীদের প্রত্যাশা শনিবারে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে এই উচ্ছেদের বিরুদ্ধে গলা ফাটাবেন আরও হাজার হাজার মানুষ। এক প্রতিবাদী রনি জ়েপ্পেলিন বলছেন, “খননকারী যন্ত্রের সামনে আমরা শুয়ে পড়ে এই ধ্বংসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপল করছি।” তবে শেষ পর্যন্ত হাল ছাড়তেই হবে। এদিকে উচ্ছেদ অভিযান শেষ হলেই লুৎজ়ারথ গ্রামের চারধার ঘিরে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে RWE। এই গ্রামের বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট ধ্বংসের আগে তা বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে এই সংস্থা।
লুৎজ়ারথ গ্রামে এই খনির অবস্থান ঘিরে জলবায়ু নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই খনিটি উত্তর রাইন ওয়েস্টফালিয়ায় প্রায় ১৪ বর্গ মাইল জুড়ে বিস্তৃত। RWE দীর্ঘদিন ধরেই এই খনিকে আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে। ২০১৩ সালে জার্মানের আদালত এই সংস্থাকে খনি সম্প্রসারণের অনুমতি দেয়। ২০২১ সালের ফেডেরাল নির্বাচনে গ্রিনের জয়ের পর অনেকে আশা করেছিলেন এই সম্প্রসারণ বাতিল হবে। তবে সে গুড়ে বালি। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে RWE-র সঙ্গে একটি চুক্তি করে সরকার। তবে এই চুক্তির সময় বেশ কিছু গ্রামকে উচ্ছেদের তালিকার বাইরে রাখা হয়। কিন্তু লুৎজ়ারথক থেকে যায় ধ্বংসের তালিকায়। এই গ্রামের নীচে থাকা খনির জন্য RWE-কে এই গ্রাম ধ্বংসের অনুমতি দেওয়া হয়। এদিকে বাড়ি হারানোর দুঃখে যেখানে গ্রামবাসীরা কাতর সেখানে গ্রিন ও RWE জানিয়েছে, এই সম্প্রসারণের ফলে ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত শক্তি সঙ্কট থেকে কিছুটা মুক্তি মিলবে। তবে আস্থানা হারিয়ে এখন কাঁদছেন এই গ্রামের বাসিন্দারা। খননকারী মেশিন নিয়ে উচ্ছেদ চালাতে গিয়েই প্রতিবাদীরা তেড়ে আসছেন আধিকারিকদের দিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিয়ো ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রতিবাদ আদৌ দীর্ঘজীবী হবে কি না তা তাঁরা জানেন না। তবে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে চেষ্টা করছেন নিজেদের ভিটে-মাটি বাঁচানোর।