Ismail Haniyeh: ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাকিস্তান? ‘সাহসী’দের সাহায্য চাইল হামাস
Ismail Haniyeh seeks Pakistan's help: বুধবার (৬ ডিসেম্বর), ইসলামাবাদে আল আকসা মসজিদ রক্ষা করার বিষয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে, ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে হামাসের বিশিষ্ট নেতা তথা তাদের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ পাকিস্তানকে 'সাহসী' বলে আখ্যা দিয়ে, তাদের সহায়তা চেয়েছেন। পাক সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাঁর দাবি, 'ইজরায়েল যদি পাকিস্তানের প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়, তাহলে গাজায় তাদের নিষ্ঠুরতা বন্ধ হতে পারে।'
ইসলামাবাদ: ভারতের কাছে তিন-তিনটি যুদ্ধে হেরেছে পাকিস্তান। প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকাকালীন, সেই পরাজয়ের উল্লেখ করে শাহবাজ শরিফ বলেছিলেন, ‘যথেষ্ট শিক্ষা হয়েছে’। ইজরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে, সেই ‘হেরো’ পাকিস্তানেরই সাহায্য চাইল হামাস গোষ্ঠী। বুধবার (৬ ডিসেম্বর), ইসলামাবাদে আল আকসা মসজিদ রক্ষা করার বিষয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে, ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে হামাসের বিশিষ্ট নেতা তথা তাদের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ পাকিস্তানকে ‘সাহসী’ বলে আখ্যা দিয়ে, তাদের সহায়তা চেয়েছেন। পাক সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাঁর দাবি, ‘ইজরায়েল যদি পাকিস্তানের প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়, তাহলে গাজায় তাদের নিষ্ঠুরতা বন্ধ হতে পারে।’
পাকিস্তানকে ‘মুজাহিদিন’, অর্থাৎ, ইসলামি যোদ্ধাদের দেশ বলে অভিহিত করে, চলমান যুদ্ধে তাদের পাশে পাওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন হানিয়াহ। তাঁর মতে, পাকিস্তানের শক্তিই সম্ভাবত ইজরায়েল-হামাস সংঘাত থামাতে পারে। ইসমাইল হানিয়াহ জানান, সীমিত শক্তি নিয়েই হামাস গোষ্ঠী, দৃঢ় সংকল্প নিয়ে ইজরায়েলের অত্যাধুনিক উন্নত অস্ত্রশস্ত্রের মোকাবিলা করে চলেছে। এই অবস্থায় পাকিস্তানের শক্তি ইজরায়েলকে পিছু হঠতে বাধ্য করতে পারে বলে আস্থা প্রকাশ করেছেন তিনি।
ইহুদিদেরকে সারা বিশ্বের মুসলমানদের ‘সবচেয়ে বড় শত্রু’ বলে দাবি করেছেন ইসমাইল হানিয়াহ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমী দেশগুলি ইজরায়েলের সমর্থন করছে বলে অভিযোগ করে, তিনি জানান, পবিত্র কোরানকে যারা মানে, তাদের গাজা উপত্যকায় ইজরায়েলের আক্রমণের বিরোধিতা করা উচিত। ইজরায়েলের বিরুদ্ধে প্রায় ১৬,০০০ নিরাপরাধ প্যালেস্তিনীয় নাগরিককে গ্রেফতার এবং ইসলামের পবিত্র স্থানগুলিকে অপবিত্র করার অভিযোগ করেছেন তিনি। ইজরায়েলের এই পদক্ষেপগুলি আন্তর্জাতিক চুক্তির লঙ্ঘন বলে দাবি করেছেন তিনি। অসলো চুক্তির বাস্তবায়ন না করা নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেছেন ইসমাইল হানিয়া। মুসলিম দেশগুলির সঙ্গে ইজরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টারও সমালোচনা করেছেন এই হামাস নেতা।
প্যালেস্তিনীয়দের স্বাধীনতার লড়াইকে বহু দেশই সমর্থন করেছে। তবে, ভারত-সহ বেশ কিছু দেশ এর পাশাপাশিই ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে হামাস গোষ্ঠীর হামলাকে সন্ত্রাসবাদী বলে সমালোচনা করেছে। ইসমাইল হানিয়াহ কিন্তু, ওই দিনের জঘন্য আক্রমণকে সমর্থনই করেছেন। তাঁর দাবি, ওই হামলা ছিল আত্মরক্ষামূলক। কারণ, তেল আবিব নাকি, আকস্মিক হামলা চালিয়ে গাজা ভূখণ্ড পুরোপুরি ধ্বংসের পরিকল্পনা করেছিল। হামাসের হামলা, ইজরায়েলের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
প্রকাশ্যে না বললেও, সকলেই জানে ইজরায়েলের হাতে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। পাকিস্তানও একটি পরমাণু শক্তিধর দেশ। তাই ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে হামাস গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে ইসলামাবাদের সাহায্য চাওয়াটা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কিন্তু, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক টালমাটালের মধ্যে, পাকিস্তান কি প্যালেস্তাইন তথা হামাসের পাশে দাঁড়াতে পারবে, বা চাইবে? কতটা ‘সাহসী’ হবে তারা? এখন সেটাই দেখার।