Canada: চলছিল হিন্দি সিনেমা, কানাডায় একের পর এক হলে ঢুকে ‘অজানা স্প্রে’ মুখোশধারীদের
Canada: সূত্রের খবর, সিনেমা চলাকালীন হলের মধ্যে ঢুকে পড়ে মুখোশধারী কয়েকজন। এরপর, দর্শকদের লক্ষ্য করে একটি অজানা পদার্থ স্প্রে করে তারা। কেউ গুরুতর অসুস্থ না হলেও, হামলার শিকার অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে চিকিত্সার জন্য।
টরন্টো: কানাডায় হেট ক্রাইম, অর্থাৎ, বিদ্বেষমূলক হামলার শিকার ভারতীয়রা? সরাসরি না বললেও, প্রকারান্তরে মেনে নিচ্ছে কানাডার পুলিশ। চলতি সপ্তাহের শুরুতে গ্রেটার টরন্টোর তিনটি ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় হিন্দি সিনেমা দেখতে যাওয়া দর্শকদের উপর রহস্যজনক হামলার খবর পাওয়া গিয়েছে। সূত্রের খবর, সিনেমা চলাকালীন হলের মধ্যে ঢুকে পড়ে মুখোশধারী কয়েকজন। এরপর, দর্শকদের লক্ষ্য করে একটি অজানা পদার্থ স্প্রে করে তারা। কেউ গুরুতর অসুস্থ না হলেও, হামলার শিকার অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে চিকিত্সার জন্য। কে বা কারা ওই হামলা চালিয়েছে এবং তারা কী স্প্রে করেছিল, এই প্রশ্নগুলির জবাব এখনও পাওয়া যায়নি।
ইয়র্ক অঞ্চলের পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে ভন এলাকার একটি সিনেমা হলে এমন একটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। হলের মধ্যে মুখোশ পরা দুই ব্যক্তি ঢুকে পড়ে, একটি অজানা পদার্থ বাতাসে স্প্রে করে। স্পে করা পদার্থটি বাতাসে ছড়িয়ে পড়তেই দর্শকদের চোখ জ্বালা শুরু হয়েছিল। সেই সঙ্গে সিনেমা দর্শকদের মধ্যে বেশ কয়কজন কাশতে শুরু করেন। প্রায় ২০০ মানুষ ওই হলে ছিলেন। একটি হিন্দি সিনেমা দেখানো হচ্ছিল। এরপর, হল খালি করে ওই পদার্থের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিকিত্সা জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর দেওয়া হয় পুলিশেও। তবে, পুলিশ আসার আগেই হামলাকারীরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, হামলাকারীদের কেউই শ্বেতাঙ্গ নয়। প্রথমজনের গায়ের রঙ বেশ কালো, দ্বিতীয়জনের গায়ের রঙ বাদামী বলা যেতে পারে। তবে শুধু ইয়র্ক অঞ্চলেই নয়, চলতি সপ্তাহে পিল এবং টরন্টো এলাকাতেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। পিল পুলিশ জানিয়েছে, ব্রাম্পটনের একটি প্রেক্ষাগৃহে একইভাবে কোনও অজানা পদার্থ স্প্রে করেছিল হামলাকারীরা। এই ক্ষেত্রেও কোনও গুরুতর অসুস্থতার খবর পাওয়া যায়নি। একইভাবে টরন্টোর স্কারবোরো টাউন সেন্টারের একটি সিনেমা হলে ‘স্টিঙ্ক বোমা’ রাখা আছে বলে হুমকি ফোন এসেছিল। হলটি খালি করে তল্লা চালানো হয়। তবে, বিপজ্জনক কিছু পাওয়া যায়নি।
কাকতালীয়ভাবে, মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেই তিন ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে এই তিন জায়গায় ঘটনাগুলি ঘটে। তাই, তিনটি ঘটনাই একই ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কাজ বলে সন্দেহ পুলিশের। তবে, প্রায় একই সময়ে ঘটনা তিনটি ঘটায়, একই ব্যক্তিদের পক্ষে, তিন জায়গাতেই একসঙ্গে হামলা চালানো সম্ভব নয়। কাজেই বেশ কয়েকজন ব্যক্তি এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা তো দূরের কথা, হামলাকারীদের শনাক্ত পর্যন্ত করতে পারেনি কানাডার পুলিশ। ঘটনাগুলির পিছনে হেট ক্রাইম বা ঘৃণামূলক অপরাধের কোনও সুস্পষ্ট ইঙ্গিত নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবেতারা ‘হেট ক্রাইম প্রিভেনশন ইউনিট’কে বিষয়গুলি জানিয়েছে। তারাও তদন্ত করছে। এই হামলাগুলির পিছনে অন্য কোনো ঘটনা আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, কানাডায় খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যা নিয়ে বর্তমানে ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। খালিস্তানি নেতা খুনের জন্য, কোনও প্রমাণ ছাড়াই ভারত সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন জাস্টিন ট্রুডো। সেই অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়ে ভারত সরকার জানিয়েছে, বিদেশের মাটিতে গোপনে সন্ত্রাসবাদীদের হত্যা করা ভারত সরকারের নীতি নয়। তবে, ট্রুডোর অভিযোগের পর, আরেক খালিস্তানি জঙ্গি নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুন, লাগাতার ভারত সরকার এবং ভারতীয় নাগরিকদের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে চলেছে। কানাডায় থাকেন, অথচ খালিস্তানি আন্দোলনকে সমর্থন করেন না, এমন ব্যক্তিদের কানাডা ছাড়া করার হুমকি দিয়েছিল সে।