ঢাকা: তিস্তা-সহ যে যে নদী বইছে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে, সেই সবগুলির উপর নিজেদের অধিকার কায়েম করতে তৎপর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই বিষয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে তো কথা বলবেই, প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক মহলে বিষয়টিকে টেনে নিয়ে যাবে বলে জানালেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ ও জল উপদেষ্টা, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এর আগে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে তিস্তার জল নিয়ে বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছিল। গত জুন মাসের সেই সফরের পর, ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছিল, জল বন্টনের বিষয়ে আলোচনার বদলে, তিস্তা নদীর সংস্কারের বিষয়ে কথা হয়েছে। ঠিক হয়েছিল, ভারত থেকে বিশেষজ্ঞদের একটি দল বাংলাদেশে গিয়ে সমীক্ষা চালাবে। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী দুই দেশ পরবর্তী পদক্ষেপ করবে। তবে, তারপর থেকে পরিস্থিতি অনেকটা পাল্টে গিয়েছে। বাংলাদেশে ঘটে গিয়েছে পালা বদল।
কাজেই, তিস্তা নিয়ে এর আগের আলোচনার আর কোনও মূল্য নেই বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। বুধবার (২১ অগস্ট) সকালে, বাংলাদেশের পরিবেশ ও জল উপদেষ্টা বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে নিজের দেশের মানুষের কথা চিন্তা করছেন, তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আমরাও আমাদের মানুষের কথা ভেবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। তিস্তা পাড়ের মানুষদের মতামত নিয়েই এই বিষয়ে কাজ শুরু করা হবে।” তিনি জানান, এই বিষয়ে ভারতের সঙ্গে সরকার কথা বলবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তিনি আরও জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে ‘বন্ধুপ্রতিম সম্পর্ক’ রাখতে চায় বাংলাদেশের নয়া সরকার। কিন্তু, প্রয়োজনে তিস্তা নদীর জল বন্টনের বিষয়টি তারা আন্তর্জাতিক মহলে নিয়ে যাবে। এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপ চাইবে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের এই মন্তব্য নয়া দিল্লির কপালে ভাঁজ ফেলার মতো। দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলিতে কোনও তৃতীয় পক্ষর হস্তক্ষেপ নয়া দিল্লি কখনই চাইবে না। বিশেষ করে, ওঁত পেতে আছে চিন। ভারত সফরের পরই চিন সফরে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের পূর্ববর্তী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চিন সফর থেকে ফিরে তিনি জানিয়েছিলেন, তিস্তা প্রকল্পে সহায়তা করতে মুখিয়ে আছে বেজিং। কিন্তু, তিনি চান এই কাজটা ভারতই করুক। বাংলাদশের নয়া জমানায়, তিস্তা প্রকল্পে চিন নাক গলালে তা ভারতের পক্ষে যথেষ্ট অস্বস্তির ও চিন্তার কারণ হবে।
এর আগে, ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে বৈঠকে তিস্তার জলের ‘ন্যায্য হিস্যা’ চেয়েছিলেন বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছিলেন, “জল কম আছে আমি জানি। এমনকি এক দেশের জন্য যা প্রয়োজন আছে, সেটুকুও নেই। কিন্তু আছে তো। একশো কিউসেক জলও যদি থাকে, তার মধ্যে ৩০ কিউসেক আপনারা আমাদের দিতে পারেন না? এভাবে তাদের (ভারতীয় পক্ষকে) আমরা বলেছি।”
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)