মালে: ভারতের দেওয়া হেলিকপ্টারের দখল নিতে চলেছে মলদ্বীপের প্রতিরক্ষা বাহিনী। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) তারা জানিয়েছে, দ্বীপরাষ্ট্রকে যে হেলিকপ্টার উপহার দিয়েছে ভারত এবং বর্তমানে কপ্টারটি চালানোর জন্য যে অসামরিক ক্রু পাঠানো হয়েছে, তার অপারেশনাল কর্তৃত্ব তাদের হাতে থাকবে। প্রসঙ্গত, এতদিন এই কপ্টার এবং দুটি ডর্নিয়ার বিমান পরিচালনা করত ভারতীয় সেনা। কিন্তু, মলদ্বীপের নয়া সরকার ১০ মে-র মধ্যে সকল ভারতীয় সেনা কর্মীকে সেই দেশ ছাড়তে বলেছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভারত একটি অসামরিক দল পাঠিয়েছে এয়ারক্র্যাফ্টগুলি পরিচালনার জন্য। তবে, দুদিন আগেই মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ মুইজ্জু বলেছিলেন, ১০ মে-র পর ভারতীয় সেনা ‘অসামরিক পোশাকে’ও মলদ্বীপে থাকবে না।
মলদ্বীপ জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর পরিকল্পনা, নীতি এবং ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রধান, কর্নেল আহমেদ মুজুথাবা মহম্মদ জানিয়েছেন, মলদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে এখনও আলোচনা চলছে। কর্নেল মুজথাবা আরও জানিয়েছেন, ভারতীয় হেলিকপ্টারটি বর্তমানে আদ্দু সিটিতে রয়েছে। সেটি মেরামতের কাজ চলছে। তার জায়গায় ২৬ জন অসামরিক ভারতীয় নাগরিকদের নিয়ে অন্য একটি হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে ভারত। এই অসামরিক নাগরিকদের পরিচিতি জানার প্রক্রিয়া চলছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ভারতীয় সেনারা মলদ্বীপ থেকে চলে গেলেই, এই অসামরিক ভারতীয় নাগরিক এবং হেলিকপ্টারটির অপারেশনাল কর্তৃত্ব নেবে মলদ্বীপ প্রতিরক্ষা বাহিনী। প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরেই ভারতীয় এয়ারক্র্যাফ্টগুলি মলদ্বীপের বাসিন্দাদের মানবিক ও চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করে চলেছে।
ভারতীয় সামরিক কর্মীদের প্রত্যাহারের বিষয়টি সমাধানের জন্য, দুই দেশ একটি উচ্চ-স্তরের কোর গ্রুপ গঠন করেছে। এই কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকের পরই, মলদ্বীপের ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের জন্য ১০ মে-র ডেডলাইন ধার্য করেছিল। এর মধ্যে, চলতি সপ্তাহেই চিনা সামরিক বাহিনীর সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে মলদ্বীপ। এই চুক্তি অনুযায়ী, বেজিং মলদ্বীপকে বিনামূল্যে, টিয়ার গ্যাস, পিপার স্প্রে-র মতো ‘অ-প্রাণঘাতী’ অস্ত্র সরবরাহ করবে। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে ভারতের অন্যতম প্রধান প্রতিবেশী হল মলদ্বীপ। ঐতিহাসিকভাবে দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত ভাল হলেও, প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা-সহ সামগ্রিকভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বর্তমান সরকারের সময় ক্রমে খারাপ হচ্ছে।