ইসলামাবাদ : পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গদির মেয়াদ আর কতক্ষণ, সেটাই এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন। একদিকে, ইমরান ও তাঁর দল চাইছে, আস্থা ভোটে বিলম্ব হোক। আর অন্যদিকে বিরোধীরা চাইছে অবিলম্বে হোক আস্থা ভোট। ইমরান খান নেতৃত্বাধীন পাক সরকারের আমলে পাকিস্তানের আর্থিক পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। এমন সব অভিযোগ তুলেই অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে। এই দ্বন্দ্বের মাঝেই ভারতের রাজনীতির প্রসঙ্গ তুলে ইমরানকে বার্তা দিলেন অন্যতম বিরোধী দল পিএমএলএন-এর সহ সভাপতি তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ শরিফ। পরপর টুইটে ইমরানকে কড়া বার্তা দিয়েছেন তিনি। উল্লেখ করেছেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারীর বাজপেয়ীর কথাও।
ইমরানকে শিক্ষা দিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ভারতে একাধিক প্রধানমন্ত্রী আস্থা ভোটের মুখোমুখি হলেও, কেউ সংবিধানের বিরোধিতা করেননি। দেবে গৌড়া, বিপি সিং ও অটল বিহারীর বাজপেয়ী যে এই আস্থা ভোটের জেরেই ক্ষমতাচ্যূত হন, এ দিন সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মরিয়ম। বাজপেয়ীর নাম উল্লেখ করে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, বাজপেয়ী মাত্র একটি ভোটে হেরে গেলেও সংবিধানের বিরোধিতা করেননি। মরিয়ম টুইটে লিখেছেন, ‘ভারতের একাধিক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মোট ২৭ বার অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে। কেউ সংবিধান, গণতন্ত্র বা নীতির বিরোধিতা করেননি। বাজপেয়ী একটি ভোটে হেরে গিয়েছিলেন। তিনি চুপচাপ ক্ষমতা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, আপনার মতো দেশ বা সংবিধানকে পণবন্দি করে রাখেননি।’
جس بھارت کے قصیدے پڑھ رہے ہیں وہاں مختلف وزرائے اعظم کے خلاف عدم اعتماد کی ستائیس تحریکیں آئیں۔ کسی ایک نے بھی آئین، جمہوریت اور اخلاقیات سے یہ کھلواڑ نہی کیا۔ واجپائی ایک ووٹ سے ہارا، گھر چلا گیا — آپ کی طرح ملک، آئین اور قوم کو یرغمال نہیں بنایا !
— Maryam Nawaz Sharif (@MaryamNSharif) April 8, 2022
১৯৯৯ সালের ঘটনা। কেন্দ্রে তখন বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ছিল ক্ষমতায়। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। সেই সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়েছিল। কিন্তু আস্থা ভোটে হেরে যায় সেই বিজেপি সরকার। একটি ভোট কম হয়েছিল সরকারের পক্ষে। তখন বিজেপির সঙ্গে জোটে থাকা এআইডিএমকে সমর্থন করেনি বিজেপিকে। আসলে সেই সময় এআইডিএমকে নেত্রী জয়ললিতা সমর্থনের জন্য বেশ কিছু শর্ত রেখেছিলেন। কিন্তু বিজেপির দাবি ছিল, নিজের দুর্নীতি ঢাকতেই ওই সব শর্তের কথা বলছেন জয়ললিতা। সেবার ভোটে হেরে যাওয়ায় সরকার ভেঙে দেওয়া হয়। পরবর্তী ভোট হওয়া পর্যন্ত কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বাজপেয়ী। পরে ওই বছরেই আবার ভোট হয়। ফের ক্ষমতায় আসে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট তথা এনডিএ।
এ দিকে, আস্থা ভোটের আগে ভারতের প্রশংসা শোনা গিয়েছে ইমরানের মুখে। সব ঠিক থাকলে শনিবারই পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে আস্থা ভোট হতে চলেছে। আর সেই ভোটাভুটিতে ইমরানের হারের সম্ভাবনাই প্রবল। গদি বাঁচাতে শুক্রবারই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন তিনি। একদিকে যেমন ফের একবার বিদেশি চক্রান্তের অভিযোগ করেছেন, তেমনই আবার ভারতের দৃঢ় অবস্থান ও বিদেশনীতির প্রশংসা করেন ইমরান। তিনি বলেছেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন পাকিস্তানের ওপরে ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করছিল যাতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলা হয়। কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে তারা একটি কথাও বলতে পারেননি, কারণ ভারত একটি সার্বভৌম্য দেশ।’