Bangladesh: রমজান মাসের আগেই বাংলাদেশে ব্যাপক দুশ্চিন্তায় মুসলিমরা, কেন?
Ramzan: রংপুরের বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা রাবেয়া আক্তারও একই সমস্যায় পড়েছেন। তিনি বলেন, "বেতন ৪০ হাজার টাকা। এই টাকা পরিবারের খরচ মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়। সংসার চালাতেই এত কষ্ট হচ্ছে, রমজান মাসের কেনাকাটা করব কী করে?"

ঢাকা: আর কয়েকদিন পরই রমজান। ইতিমধ্যেই পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে রমজানের। তবে পবিত্র মাস নিয়ে অদ্ভুত এক চিন্তায় পড়েছে বাংলাদেশ। এমনই জটিল সেই সমস্যা, যে রমজান পালন হবে কী করে, তা নিয়েই চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন সাধারণ মানুষ। কী সেই সমস্যা?
বাংলাদেশে রমজানের প্রস্তুতি চলছে। তবে মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে মুল্যবৃদ্ধি। বাজারে ব্যাপক সঙ্কট, খাবারের দাম আকাশছোঁয়া। রমজানে রোজা ভাঙার জন্য ফল থেকে শুরু করে সিমুই- সমস্ত খাদ্যপণ্যেরই দাম ব্যাপক হারে বেড়েছে। ফলে এখন থেকেই চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন সাধারণ মানুষ। কীভাবে রমজানের কেনাকাটা করবেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না।
হাসিনা সরকারের পতন ও মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বাংলাদেশে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আসবে। তবে ঘটেছে ঠিক উল্টোটাই। দাম কমছেই না প্রয়োজনীয় পণ্যের। খুচরো বিক্রেতা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরাও অভিযোগ করছেন। তাদের দাবি, বাজারে একটা শক্তিশালী সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে, যারা এই জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর পিছনে কলকাঠি নাড়ছে। অন্তর্বর্তী সরকার এই বিষয়ে দৃষ্টিপাত করছে না বলেই অভিযোগ।
মূল্যবৃদ্ধির সবথেকে বেশি প্রভাব পড়ছে নিম্নবিত্ত, শ্রমিক শ্রেণির উপরে, বাংলাদেশের একটি সংবাদসংস্থার তরফে এমনটাই দাবি করা হচ্ছে। তেজগাঁওয়ের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা কামারুজ্জামান খান বলেন, “ফল এবং মাংস কেনা কমাতে বাধ্য হচ্ছি। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ, এর কারণে ব্যবসায়ীরাও স্বেচ্ছাচারিতা করছে।”
রংপুরের বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা রাবেয়া আক্তারও একই সমস্যায় পড়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী বেকার। পরিবার সম্পূর্ণরূপে তাঁর আয়ের উপরই নির্ভরশীল। তিনি বলেন, “বেতন ৪০ হাজার টাকা। এই টাকা পরিবারের খরচ মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়। সংসার চালাতেই এত কষ্ট হচ্ছে, রমজান মাসের কেনাকাটা করব কী করে? সরকার ক্রমাগত বলছে যে আমদানি বৃদ্ধির কারণে দাম কমবে, কিন্তু বাজারে এখনও তার প্রভাব দেখা যায়নি।”
বাংলাদেশের বাজারের হাল-
ঢাকার বাজারে খাদ্যদ্রব্যের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। খেজুরের দাম প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ১,৭০০ টাকায় পৌঁছেছে।ছোলা প্রতি কেজি ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত চিনির দাম প্রতি কেজি ১৭০ টাকা এবং সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ১৭৫ টাকায় পৌঁছেছে। ক্রমাগত দাম বৃদ্ধির কারণে গ্রাহকরা চিন্তিত। গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে।
কী বলছে ক্যাব?
কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এসএম নজর হোসেন বলেন, “সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন সত্ত্বেও, বাজারে সক্রিয় সিন্ডিকেটের প্রভাব রয়ে গিয়েছে। সিন্ডিকেটগুলি কেবল তাদের পদ্ধতি পরিবর্তন করেছে, কিন্তু এখনও তারা দাম নিয়ন্ত্রণ করছে।”
CAB প্রস্তাব করেছে যে আমদানিকারক থেকে শুরু করে খুচরা বিক্রেতা, প্রতিটি স্তরে মূল্য নিয়ন্ত্রণের একটি কার্যকর ব্যবস্থা তৈরি করা উচিত। যতক্ষণ না এই ধরনের নীতি বাস্তবায়িত হচ্ছে, ততক্ষণ ক্রেতাদের মূল্যবৃদ্ধির সম্মুখীন হতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আরও বাড়ছে।”

