ব্রাসেলস: যুদ্ধের একমাস পার হওয়ার পর ইউক্রেনের (Ukraine) প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে ন্যাটো বাহিনী (NATO)। ইউক্রেনের উপরে রাশিয়া (Russia) উত্তরোত্তর যেভাবে হামলা বাড়িয়েই চলেছে, তাতে পরমাণু হামলার আশঙ্কাও এড়িয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। চলতি সপ্তাহেই রাশিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, তারা অস্তিত্ব সঙ্কট বোধ করলে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে। এরপরই ন্যাটো বাহিনীর তরফে ইউক্রেনকে পরমাণু অস্ত্র থেকে রক্ষা পাওয়ার হাতিয়ার ও অতিরিক্ত সেনা পাঠিয়ে সাহায্যের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। আজ, বৃহস্পতিবারই ন্যাটোর সদস্য় দেশগুলির প্রধানরা এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, বুধবার এমনটাই জানান ন্যাটো গোষ্ঠীর প্রধান জেন্স স্টোল্টেনবার্গ।
জানা গিয়েছে, মার্কিন নেতৃত্বাধীন এই সামরিক জোটের সদস্যরা বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে একটি জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছে। ন্যাটো গোষ্ঠীর প্রধান জেন্স স্টোল্টেনবার্গ জানান, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে যুদ্ধে সাহায্য করতে ন্যাটো সদস্য দেশগুলির তরফে চারটি সামরিক দল পাঠানো হবে বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া ও স্লোভাকিয়ায় পাঠানো হবে। এর আগেও ইতিমধ্য়েই কয়েক হাজার সেনা পাঠানো হয়েছিল ন্যাটোর তরফে, তারা ধীরে ধীরে রাশিয়ার দিকেই অগ্রসর হচ্ছে।
স্থল, জল ও আকাশপথে ইউরোপের পূর্বের অংশে ন্যাটো বাহিনীর ক্ষমতা বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে। রাশিয়া যদি ইউক্রেনের উপরে বড়সড় হামলা চালানোর জন্য আরও সেনাবাহিনী বাড়ায়, জবাবে ন্যাটোও তাদের সেনার সংখ্যা বাড়াবে বলেই জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকেই বাল্টিক ও পোল্যান্ড জুড়ে ৫ হাজারেরও বেশি ন্যাটোর সেনাবাহিনী মোতায়েন করা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইউক্রেনের ন্যাটোর সদস্য হতে চাওয়া নিয়েও বিরোধের সূত্রপাত। আমেরিকা সহ পশ্চিমী দেশগুলি দ্বারাই ন্যাটো পরিচালিত হওয়ায়, ইউক্রেন যদি ন্যাটোর সদস্য হয়ে যায়, তবে বিশ্বে মার্কিন আধিপত্য আরও বাড়বে বলেই মনে করছে রাশিয়া। এদিকে, রাশিয়া ও আমেরিকা চিরশত্রু হওয়ায়, তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি কোনওভাবেই বরদাস্ত করবে না রাশিয়া। সেই কারণেই তারা ইউক্রেনের উপরে হামলা চালিয়েছে।
সম্প্রতি যুদ্ধ থামানোর জন্য দুই দেশের মধ্যে যে আলোচনা হয়েছিল, সেখানেও রাশিয়ার তরফে রাখা শর্তে ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য হওয়ার সমস্ত আশা ছাড়তে বলা হয়েছিল। অন্যদিকে, ইউক্রেনও ন্যাটোর ভূমিকায় সন্তুষ্ট নয়। আকাশপথে রাশিয়ার হামলা রুখতে ইউক্রেনের তরফে নো ফ্লাই জ়োন ঘোষণার জন্য ন্যাটোর কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু ন্যাটোর তরফে কোনও জবাবই দেওয়া হয়নি। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের মাঝে ন্যাটো জড়াতে চায় না বলেও জানিয়ে দিয়েছিল আগেই। এরপরই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কিও ক্ষোভ উগরে জানিয়েছিলেন, ন্যাটোর সদস্য় হওয়ার আশা আর রাখেন না তারা।
এই টানাপোড়েন পরিস্থিতির মাঝেই ন্যাটো ফের একবার সাহায্যের হাত বাড়াচ্ছে, যা ইউক্রেনকে ফের একবার সদস্যপদের আশা দেখাচ্ছে।
আরও পড়ুন: Vladimir Putin: পুতিনের ‘বিশেষ বান্ধবী’-কে চেনেন? ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝেও উঠে আসল এই লাস্যময়ীর নাম