লন্ডন: স্ত্রীর জন্য ছেড়েছিলেন রাজপরিবারের সদস্যপদ। রাজ পরিবার থেকে বেরিয়ে আসার পর এক সাক্ষাৎকারে একের পর এক বোমা ফাটিয়েছিলেন স্ত্রী, সেই সময়ও মুখ বুজে তাঁর পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন। ঠাকুমার অসুস্থতার খবর পেয়েও বৃহস্পতিবার একাই ছুটেছেন স্কটল্যান্ডে। প্রিন্স হ্যারির এই কাজে ফের নতুন করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অসুস্থতা ও মৃত্যুর খবর পেয়েও রাজপরিবারেরই সদস্য মেগান মর্কেলের অনুপস্থিতিতে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
ব্রিটেনের রাজপরিবার যেমন সর্বদাই জনপ্রিয়তার আলোকে রয়েছে, তেমনই এই পরিবারে বিতর্কও কম নেই। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ নিজেই একাধিক বিতর্কের সাক্ষী। প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে প্রিন্সেস ডায়নার বিতর্কিত বিবাহ, বিতর্কিত সাক্ষাৎকার, গোপন সম্পর্ক ফাঁস থেকে শুরু করে গাড়ি দুর্ঘটনায় ডায়নার মৃত্যু- এই ঘটনাই সবথেকে বেশি নাড়িয়ে দিয়েছিল রানি এলিজাবেথকে। এরপরে রাজ পরিবারে আরও অনেক বিতর্ক হলেও প্রিন্স চার্লস ও প্রিন্সেস ডায়নার জীবনের মতো প্রভাব কেউ ফেলতে পারেননি। তবে পরবর্তী ধাক্কাটা দিয়েছিল ডায়নার ছোট পুত্র প্রিন্স হ্যারিই। তিনি যখন জানান যে, অভিনেত্রী মেগান মর্কেলকে বিয়ে করতে চান, সেই সময় থেকেই বিতর্কের শুরু হয়। দীর্ঘ টালবাহানা, বিতর্কের পর অবশেষে বিয়ে হয় প্রিন্স হ্য়ারি ও মেগান মর্কেলের। রাজ পরিবারের সদস্য হলেও, সেখানে বেশিদিন মানিয়ে নিতে পারেননি মেগান। শেষে স্ত্রীর সম্মান রাখতেই রাজপরিবারের যাবতীয় উপাধি, সম্পত্তি ত্যাগ করে আলাদা হয়ে যান হ্যারি ও মেগান।
রাজপরিবার থেকে আলাদা হওয়ার পরই একটি সাক্ষাৎকারে মেগান দাবি করেছিলেন যে, হ্যারির সঙ্গে বিয়ের পরই রাজপরিবারে বর্ণবিদ্বেষের শিকার হতে হয়েছিল তাঁকে। কীভাবে মানসিক চাপের মধ্যে থাকতে হত তাঁকে, সেই নিয়েও বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি। এরপরই বিতর্ক আরও বেড়েছিল, রানির সঙ্গে দূরত্ব আরও বেড়েছিল তাঁর প্রিয় নাতির।
বৃহস্পতিবার রানির চিকিৎসকরা তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতেই রাজপরিবারের সদস্যরা স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে ছোটেন। প্রিন্স চার্লস থেকে শুরু করে প্রিন্স উইলিয়াম, সকলেই স্কটল্যান্ডের প্রাসাদে আসেন। বালমোরাল প্রাসাদে আসেন প্রিন্স হ্যারিও। কিন্তু তাঁর সঙ্গে আসেননি মেগান মর্কেল। মেগানের এই অনুপস্থিতি নিয়েই এবার নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।রাজপরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও, মনের দূরত্ব বা ক্ষোভ কী এতটাই বেশি যে রানির শেষশয্যায় থাকার খবর পেয়েও আসলেন না মেগান? এই প্রশ্নই এখন ব্রিটেন জুড়ে ঘুরছে।
জানা গিয়েছে, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ যখন শেষশয্যায়, তখন তাঁর পাশেই উপস্থিত ছিলেন তাঁর সন্তানরা, প্রিন্স চার্লস ও তাঁর বোন প্রিন্সেস অ্যান। অসুস্থতার খব র পেয়েই ছুটে আসেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু ও প্রিন্স উইলিয়াম। তিনি সঙ্গে এনেছিলেন তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র তথা রানির প্রোপৌত্র প্রিন্স এডওয়ার্ড। প্রিন্স উইলিয়ামের স্ত্রী কেট মিডলটন না আসলেও, তার অনুপস্থিতি নিয়ে কোনও প্রশ্ন ওঠেনি, কারণ বৃহস্পতিবারই তাঁদের প্রথম দুই সন্তানের স্কুলের প্রথম দিন ছিল। সেই কারণেই উইন্ডসর প্রাসাদে ছিলেন কেট।