ইসলামাবাদ: আস্থা ভোটে হেরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর গদি হারিয়েছেন ইমরান খান (Imran Khan)। তাঁর পর্ব সাঙ্গ হতেই খোঁজ শুরু হয়েছে নতুন প্রধানমন্ত্রীর। আগামিকাল, সোমবারই পাকিস্তান সংসদে স্থির করা হবে নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম। আপাতত ইমরান খানের পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে যিনি সবথেকে এগিয়ে রয়েছেন, তিনি হলেন শাহবাজ শরিফ (Shehbaz Sharif)। শোনা যাচ্ছে, বিরোধী দলনেতা শেহবাজই আগামী ২০২৩ সাল অবধি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারেন। পাকিস্তানের বাইরে তাঁর খুব একটা নাম না থাকলেও, দেশের অন্দরে ও রাজনৈতিক মহলে তাঁর পরিচিতি যথেষ্ট।
পাকিস্তানের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই শাহবাজ শরিফ। তাঁর পুরো নাম মিয়া মহম্মদ শাহবাজ শরিফ। ৭০ বছর বয়সী এই নেতাই এতদিন পাকিস্তানের বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব সামলিয়েছেন। শনিবার ঘড়ির কাঁটা যখন রাত সাড়ে ১২টা পার করেছে, তখন ইমরান খানের বিরুদ্ধে আস্থা ভোট শুরু হয়, সেই ভোটে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভোট পড়ে ১৭৪টি। এরপরই সংসদের স্পিকার অভিনন্দন জানান শাহবাজ শরিফকে। অনাস্থা প্রস্তাব আনার পর থেকেই জল্পনা ছিল, প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন শাহবাজ। স্পিকারের অভিনন্দন বার্তা সেই জল্পনাকেই আরও উসকে দেয়।
দাদা প্রধানমন্ত্রী হওয়ায়, রাজনীতির সঙ্গে তাঁর যোগসূত্র দীর্ঘদিনেরই। বিরোধী দলনেতার ভূমিকা পালন ছাড়াও তিনি পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। চিনের আর্থিক অনুদানে পাকিস্তানের একাধিক প্রকল্পের কাজের সঙ্গেও তিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, নওয়াজ শরিফের সঙ্গে দেশের সেনাবাহিনীর সম্পর্ক কিছুটা আদায়-কাঁচকলায় হলেও, শাহবাজের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক খুবই ভাল। পাকিস্তান খাতায় কলমে গণতান্ত্রিক দেশ হলেও, তাদের বিদেশনীতি থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষা, যাবতীয় বিষয়েরই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে পাক সেনাবাহিনী। প্রায় তিন দশক সেনা শাসনেই ছিল ভারতের প্রতিবেশী দেশ। সেই কারণেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর গদি টিকিয়ে রাখতে গেলে, সেনাবাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।
১৯৯৯ সালে পাকিস্তানে যখন সেনা অভ্যুত্থান হয়, সেই সময়ই পাকিস্তান ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে গিয়েছিলেন শাহবাজ। এরপরে ২০০৭ সালে তিনি পাকিস্তানে ফেরত আসেন। সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন ২০১৭ সালে, দাদা নওয়াজ শরিফকে পানামা পেপারস বিতর্কে নাম জড়ানোর পর। এরপরই শাহবাজ পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজ পার্টির প্রধান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।