পোর্ট মোরেসবি: রাষ্ট্রপুঞ্জের অনুমান ছিল, সংখ্যাটা ৬৭০ মতো হবে। কিন্তু, পাপুয়া নিউ গিনি-র সরকার জানাল প্রকৃত সংখ্য়াটা তার প্রায় তিনগুণ বেশি। ‘জীবন্ত কবরে’ গিয়েছেন সেই দেশের ২,০০০ জনেরও বেশি মানুষ। এদিন, আনুষ্ঠানিকভাবে গোটা বিশ্বের সাহায্য প্রার্থনা করেছে দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় এই দেশ। গত শুক্রবার (২৪ মে) ভোর ৩টার দিকে ধস নেমেছিল সেই দেশের উত্তরাঞ্চলের মাইপ-মুলিতাকা জেলার ছয়টি গ্রামে। অধিকাংশ মানুষ তখন ঘুমিয়ে ছিলেন। তারপর, তিনদিন কেটে গিয়েছে। আর যত সময় যাচ্ছে, বিপর্যয়ের তীব্রতাটা ততই টের পাওয়া যাচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে এই বিপর্যয়ের বিশালতা ধরা যায়নি। মনে করা হয়েছিল শ’খানেক লোক চাপা পড়েছেন। আর মৃত্যু হয়েছে জনা দশেকের। কিন্তু, পাপুয়া নিউ গিনি সরকার এদিন হতাহতের যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, তাতে এই বিপর্যয়, একুশ শতকের সবথেকে মারাত্মক ভূমিধসের ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের আবাসিক সমন্বয়কের কাছে এদিন একটি চিঠি লিখেছেন সেই দেশের জাতীয় বিপর্যয় কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর। তিনি বলেছেন, “এই ধস ২০০০ জনেরও বেশি মানুষকে জীবিত অবস্থায় কবর দিয়েছে।”
এর আগে, ধসের সবথেকে বড় ঘটনাটি ঘটেছিল ছিল ফিলিপাইনের সাদার্ন লেই প্রদেশে। ২০০৬ সালে সেখানে টানা ১০ দিন ভারী বৃষ্টি হয়েছিল। তারপর নেমেছিল ধস। মোট ১,১২৬ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। যদিও, ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন এখনও আনুমানিক মৃতের সংখ্যা ৬৭০-ই রেখেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা নতুন প্রমাণের অপেক্ষা করছে। প্রসঙ্গত, পাপুয়া নিউগিনি সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে উদ্ধার কাজে হাত লাগিয়েছে সংস্থাটি।
Papua New Guinea landslide buried more than 2,000 people, the government said. The landslide crashed through six villages in the Maip-Mulitaka district in the country’s north at around 3 a.m. on Friday while most of the community slept https://t.co/6MUQUAUgfV pic.twitter.com/mvty4x1pJs
— Reuters (@Reuters) May 27, 2024
রাষ্ট্রপুঞ্জের এই শাখা সংস্থার প্রধান, সেরহান আক্তোপ্রাক বলেছেন, “সরকারের প্রকাশিত তথ্য নিয়ে তর্ক করা যায় না। তবে আমরা এই মুহূর্তে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্যও করতে পারছি না। এত বড় বিপর্যয়, যত সময় যাবে মৃতের সংখ্যা বাড়বে।” রবিবার, অস্ট্রেলিয় এক সামরিক কপ্টারে করে আকাশপথে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মানা এবং পাপুয়া নিউ গিনির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, বিলি জোসেফ। তাঁর এই সফরের পরই আন্তর্জাতিক সমর্থনের জন্য আর্জি জানাল পাপুয়া নিউ গিনির সরকার।
ইতিমধ্যে, মাটি খোঁড়ার যন্ত্রপাতি নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছে সেই দেশের সামরিক বাহিনীও। তবে, তারা এখনও কাজ শুরু করতে পারেনি। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে ওই এলাকা খনন করার অনুমতি দেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে দ্বিধা-বিভক্ত গ্রামবাসীরা। একদল চাইছেন প্রিয়জনদের মৃতদেহ কাছে পেতে। আরেক দল মনে করছেন, তাঁদের আত্মীয়রা এমনিতেই সমাহিত। খোঁড়াখুঁড়ি করলে, মৃতদেহের আরও ক্ষতি হতে পারে।